Advertisement
Advertisement
Rinku Singh

শৈশবের অ্যাকাডেমিতে বানিয়েছেন হস্টেল, আলিগড়ের ভবিষ্যৎ ক্রিকেটারদের পাশে রিঙ্কু

আলিগড় স্পোর্টস অ্যাকাডেমির দুস্থ খুদে ক্রিকেটারদের দায়িত্বও নিয়েছেন রিঙ্কু।

Rinku Singh helps budding cricketers in Aligarh, provides many facilities | Sangbad Pratidin
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:April 11, 2023 11:59 am
  • Updated:April 11, 2023 11:59 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোতেরায় ওই অবিশ্বাস্য ইনিংসের পরপর যখন দেখছিলেন ডাগআউট থেকে তাঁর দিকে ধাবমান নীতীশ রানারা ছুটে আসছেন, তখন কী চোখ চিকচিক করার সঙ্গে হয়তো অনেক কিছু মনে পড়ে যাচ্ছিল রিঙ্কু সিংয়ের (Rinku Singh)। বাবা খানচন্দ সিং স্থানীয় এলাকায় এলপিজি গ্যাস সরবরাহ করতেন। পাঁচ-ভাই বোনের সংসারে অভাব-অনটনের সঙ্গে মিতালি গড়েই জীবনের চলার পথ গড়তে হয়েছে বাঁ-হাতি এই ক্রিকেটারকে। এসবই পুরনো কথা। এটুকুতে যে রিঙ্কুর ব্যাপ্তিকে ধরা মুশকিল। এর বাইরে একটা অন্য রিঙ্কুও রয়েছে।

আজকের নাইট-নায়কের বেড়ে ওঠা খুব কাছ থেকে দেখেছেন আলিগড় স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম ক্রিকেট প্রশিক্ষক তথা পরামর্শদাতা ফাসাহত আলি। রিঙ্কুর বাবা যে কোম্পানির গ্যাস সরবরাহ করতেন, সেই গ্যাস এজেন্সির সামনের লনে ব্যাট হাতে ক্রিকেট অনুশীলনে ডুবে থাকতেন রিঙ্কু। কতই বা বয়স তখন – পাঁচ কি ছয়! বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় সেই দৃশ্য হামেশাই চোখে পড়ত ফাসাহতের। আর চোখে পড়েছিল দু’জনের-অর্জন সিং ফকিরা ও মাসুদ আমিনির। জহুরি জহর চেনে, তাঁরাও রিঙ্কুকে চিনেছিলেন। নিয়ে এসেছিলেন আলিগড় স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে। ক্রিকেট অভিযাত্রায় সেই প্রথম দীক্ষা লাভ বাঁ-হাতি ব্যাটারের। তারপর অনূর্ধ্ব-১৯, রনজি হয়ে আজকের আইপিএল।

Advertisement

কালকের স্মৃতিপটে টাটকা গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ওই পাঁচ ছয়ের কাহন – সবই গড়গড় করে বলে যান কোচ ফাসাহত। বলেন, “রিঙ্কু শান্ত ছেলে। শেখার ইচ্ছা ওর মধ্যে প্রবল। অনেক কষ্ট করে এই জায়গায় এসেছে। ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু জানে না।” রিঙ্কু নিজেকে বিশ্বমাঝারে প্রতিষ্ঠা করেছেন। আইপিএল দরবারে কৌলিন্য পেয়েছেন। তার পিছনে কম অবদান নেই আড়ালে থাকা ফসাহত, অর্জুন সিং কিংবা মাসুদ আমিনিদের মতো কুশীলবদের। অর্থাভাব যে পরিবারে নিত্য সঙ্গী, সেখানে ক্রিকেট বিলাসিতা। রিঙ্কুর ক্রিকেট পাগলামিতে বিরক্ত হতেন তাঁর বাবাও। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অর্জুন সিং। ক্রিকেটীয় সংঞ্জাম থেকে প্লেনে যাত্রা মহার্ঘ টিকিটের মূল্য – জুগিয়ে যেতেন তিনি। 

[আরও পড়ুন: অসমের পর বিহার, সরকারি কর্মীদের জন্য কেন্দ্রীয় হারে DA ঘোষণা করল নীতীশের রাজ্য]

তবু সবকিছু হয়েও কিছু যেন ফাঁক থেকে যাচ্ছিল। ফাঁক থাকছিল রিঙ্কুর ‘ফিনিশিং’য়ে। কিছুতই ম্যাচ ফিনিশ করে আসতে পারছিলেন না। পরামর্শ দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের কোচ অজয় রাতরাও। রিঙ্কুর খেদটা অনুভব করতে পেরেছিলেন তাঁর ক্রিকেট-অভিভাবকরাও। শুধু তাঁর জন্য তাই আয়োজন করা হয়েছিল একটা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের। কোথায়? কবে? আলিগড়ে, সেটাও এবারের আইপিএলের ঠিক আগে। সেই টুর্নামেন্টে নিজের অ্যাকাডেমিকে চ্যাম্পিয়ন করেন রিঙ্কু। হয়ে ওঠেন যথার্থ ‘চেজ মাস্টার’। তাই গুজরাত-বিজয় কাকতালীয় নয়। সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল আগেই, আলিগড়েই।

আর রিঙ্কু? আইপিএলের আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছেন। কিন্তু শিকড়কে ভুলে যাননি। আলিগড় স্পোর্টস অ্যাকাডেমির দুস্থ খুদে ক্রিকেটারদের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন কাঁধে। নিঃশব্দে জুগিয়ে যাচ্ছেন, তাদের ব্যাট-বলের জোগান। অ্যাকাডেমিতে আগে ছিল না কোনও আবাসিকদের হস্টেল। অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেটাও তৈরি করেছেন, শুধু ‘ভবিষ্যতে’র রিঙ্কুদের গড়ার সংকল্পে। এই না হলে সিংহ হৃদয়!

আসলে রিঙ্কুরাই পারেন। মনে করিয়ে দেন, শাহরুখ খানের সেই বিখ‌্যাত ডায়লগ ‘ক্যাহতে হ্যায় অগর কিসি চিজ কো দিল সে চাহো, তো পুরি কায়নাত উসে তুমসে মিলানে কি কোশিশ মে লাগ জাতি হ্যায়।’ 

[আরও পড়ুন: ‘ভারতে মুসলিমরা সুরক্ষিত, পাকিস্তানে নয়’, আমেরিকায় বসে দাবি নির্মলা সীতারমণের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement