ইডেনের ক্লাবহাউয়ের দোতলায় নিজের ঘরে বসে কথাগুলো যখন বলছিলেন, তখন প্রচণ্ড নিশ্চিন্ত দেখাচ্ছিল সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে। গত কয়েকদিন ধরেই টেনশনের একটা চোরাস্রোত বয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপ সূচি ঘোষণার পর শুধুই স্বস্তি। ইডেন গ্রুপের শুধু চারটে ম্যাচ পায়নি, একইসঙ্গে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালও হবে ক্রিকেটের নন্দন-কাননে। সেই সব কিছু নিয়ে সংবাদ প্রতিদিন-কে সাক্ষাৎকার দিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট। লিখলে আলাপন সাহা।
আজ অনেকটা নিশ্চিন্ত লাগছে?
স্নেহাশিস: দেখুন ভাল ম্যাচ না হলে সবাই আমাকে কাঠগড়ায় তুলত। সেদিক থেকে বলতে পারি অবশ্যই কিছুটা নিশ্চিন্ত লাগছে। তবে অনেক কাজ বাকি এখনও। আরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আপনারা সবাই দেখতে পাচ্ছেন যে এত কাজ হচ্ছে। ক্লাবহাউস-কর্পোরেট বক্স সংস্কারের কাজ চলছে।
কিন্তু গত মাস দু’য়েক ধরেই প্রচুর চর্চা হচ্ছিল। ধরেই নেওয়া হয়েছিল ইডেন সেমিফাইনাল পাবে না।
স্নেহাশিস (Snehasish Ganguly): আসলে ওয়ান ডে ক্রিকেটে দ্রুতই ম্যাচ ঘুরে যায়। এখানেও তাই আমার তরফ থেকে প্রচুর চেষ্টা করে গিয়েছি। আমরা যাতে ভাল ম্যাচ পাই, সেমিফাইনাল পাই, সেটার জন্য সবসময় চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলাম। ডব্লুপিএলের সময় জয় শাহের সঙ্গে কথা বলি। সমস্ত কাগজপত্র ওকে দেখিয়েছিলাম। আমরা ঠিক কীভাবে এগোতে চাইছি, সে’সব বুঝিয়েছিলাম। তাছাড়া দেখুন ইডেনের সবসময়ই আলাদা একটা ঐতিহ্য রয়েছে। জয় শাহও সেটা বুঝেছিলেন। ওঁর আত্মবিশ্বাস ছিল আমার উপর, ইডেনের উপর, সিএবির উপর। ওঁকে ধন্যবাদ জানাব যে ইডেনকে এরকম ম্যাচ দেওয়ার জন্য। ওঁর সাপোর্ট ছাড়া আমরা এত ভাল ম্যাচ পেতাম না।
শোনা যাচ্ছে, একেবারে শেষ মুহূর্তে একটা নাটকীয় ওভার সবকিছু বদলে দেয়। ঠিক কী হয়েছিল?
স্নেহাশিস: ভগবান আমাদের উপর সদয় ছিলেন। ঈশ্বরের আশীর্বাদ কোথাও একটা ছিলই। আমার মনেও একটা সন্দেহের চোরাস্রোত যে বইছিল না, সেটা একেবারেই বলব না। কারণ অনেক কিছু জিনিস আমার কানেও আসছিল। বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে? শেষমেশ আমরা এত ভাল ভাল ম্যাচ পেয়েছি, সেটাই আসল।
সেমিফাইনাল যে আসছে, সেটা নিশ্চিতভাবে কখন জানতে পারলেন?
স্নেহাশিস: থাক না। এটা সিক্রেট থাকুক।
একটা যুদ্ধ জিতলেন। এবার আসল চ্যালেঞ্জটা শুরু হল?
স্নেহাশিস: আমি প্রায় তেরো বছর পর আবার সিএবির প্রশাসনে এসেছিলাম। আমাদের একটা দারুণ একটা টিম আছে। রত্নেশদা বলে একজন আছেন। ইডেনের প্রত্যেকটা কোণায় কী আছে, সেটা ওঁর জানা। আগেও বললাম এই যে ইডেনের সংস্কারের কাজ চলছে, সেটা রাতারাতি শুরু হয়নি। আগেই থেকে পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। আমি, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া, আমরা সবাই মিলে তখন থেকেই প্ল্যানিং শুরু করে দিয়েছিলাম। ডিজাইন কীরকম হবে? কীভাবে পুরো ব্যাপারটা বাস্তবায়িত হবে, সে’সব নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু মাঝে কিছুটা সময় কোভিডের জন্য নষ্ট হয়েছে। ফলে আমরা তখন সেটা পুরোপুরি করতে পারিনি। আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমেই বলেছিলাম যে প্ল্যানিংগুলো হয়েছিল, সেগুলোকে ডেলিভার করব। ডিসেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু হয়েছিল। এক মাসের নোটিশে আমরা শ্রীলঙ্কা ম্যাচ আয়োজন করি। ততক্ষণে কিন্তু প্রেসবক্স ভাঙার কাজ শুরু করে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা ওই অল্প সময়ের মধ্যেই সেটা নতুনভাবে তৈরি করি। সেটা আমাকে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল।
এবার আরও একটা চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হতে পারে।
স্নেহাশিস: কী?
যে সময়ে ইডেনে ম্যাচ হবে, তখন কিন্তু বাংলায় উৎসবের মরশুম। কালীপুজোর দিনই আবার এখানে পাকিস্তান-ইংল্যান্ড পড়েছে। অসুবিধে হবে না?
স্নেহাশিস: একদিকে তো ভালই হয়েছে। বাংলার উৎসবের সঙ্গে আরও একটা উৎসব যোগ হবে বিশ্বকাপ উৎসব। আর উৎসবের মধ্যে আমরা আগেও তো ম্যাচ করেছি। এই যে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আমরা ওয়ান ডে’টা করলাম তখন এখানে গঙ্গাসাগর চলছিল। বুঝতেই পারছেন গঙ্গাসাগরে ইডেন চত্বরে কী পরিমাণ ভিড় হয়। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসেন। কিন্তু তাতে কী কোথায় ম্যাচ করতে সমস্যা হয়েছে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.