সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাদা বলের ক্রিকেটে আর অধিনায়ক নন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন নিজেই। এবার ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকেও তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে বোর্ড। স্বাভাবিকভাবেই এই খবরে জোর আলোড়ন ভারতীয় ক্রিকেটে। বিরাট-অনুরাগীরা বোর্ডের এহেন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে ভারতের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী (Ravi Shastri) একটি ইংরেজি দৈনিককে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। আর তাঁর সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে। বিশেষ করে তাঁর সাক্ষাৎকারের টাইমিং। সেই সাক্ষাৎকারে বোর্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শাস্ত্রী। তাঁর এমন সাক্ষাৎকারের পরে অনেকের মনেই প্রশ্ন, তবে কি নাম না করে বর্তমান বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেই (Sourav Ganguly) নিশানা করলেন শাস্ত্রী?
সৌরভ ও শাস্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে বহু কথা প্রচলিত রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দুই প্রাক্তন তারকাই একে অপরের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। সেই সব মন্তব্য নিয়ে ঝড় উঠেছিল। এবার ওয়ানডে-র নেতৃত্ব থেকে কোহলিকে সরিয়ে দেওয়ার অব্যবহিত পরেই শাস্ত্রীর এমন সাক্ষাৎকার। সেই সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ভারতীয় বোর্ডে অনেকেই আছেন, যাঁরা চাননি ২০১৭ সালে তিনি কোচ হন।
২০১৬ সালে ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়ার দৌড়ে ছিলেন শাস্ত্রী। তার আগে শাস্ত্রী ভারতীয় দলের ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। কিন্তু সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শচীন তেন্ডুলকর এবং ভিভিএস লক্ষ্মণের ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটি অনিল কুম্বলেকে কোচের দায়িত্ব দেন। সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রী বলেছেন, ” ধারাভাষ্যের কাজ ছাড়তে বলা হয়েছিল আমাকে। আমি সেই কাজ ছেড়েও দিয়েছিলাম। ভারতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আমাকে কোনও কিছু না বলেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। হঠাৎ জানতে পেরেছিলাম। কেউ আমাকে কিছুই বলেনি।”
তিনি আরও বলেন, ”ওরা যদি আমাকে জানাত, আমরা তোমাকে চাই না, তোমাকে আমরা পছন্দ করছি না, আমরা অন্য কাউকে চাইছি, তাহলে একরকম ব্যাপার ছিল।” ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হারের পরে দায়িত্ব ছেড়ে দেন অনিল কুম্বলে। ফিরিয়ে আনা হয় ফের শাস্ত্রীকে। সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রী দাবি করেন, ”ন’ মাস পরে যখন ফের দায়িত্ব নিয়ে ফিরে এলাম, আমাকে জানানো হল, দলের ভিতরে সমস্যা রয়েছে।”
সে সব শোনার পরে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন শাস্ত্রী। যখন দল ছেড়েছিলেন, তখন কোনও সমস্যা ছিল না। মাত্র ন’ মাসের মধ্যে সব বদলে যায়! বক্তব্য শাস্ত্রীর। ন’ মাস আগে যাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই তাঁকেই আবার ফেরানো হল। শাস্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ভরত অরুণকে চেয়েছিলেন তিনি। অথচ বোলিং কোচের দায়িত্ব পান ভরত অরুণ এমনটা অনেকেই চাননি। জাতীয় দলের কোচিংয়ের দায়িত্ব থেকে এখন সরে গিয়েছেন শাস্ত্রী। কিন্তু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ না জেতার দুঃখ রয়ে গিয়েছে তাঁর মনে। সাক্ষাৎকারে সে কথাও জানান ভারতের প্রাক্তন কোচ। শাস্ত্রীর কোচিংয়ে টেস্ট ফরম্যাটে ৪৩টি ম্যাচের মধ্যে ২৫টিতে জিতেছে ভারত। ৭৬টি ওয়ানডে-র মধ্যে ৫১টিতে জিতেছেন বিরাট কোহলিরা। ৪২ মাস (২০১৬-২০২০) টেস্টে একনম্বরে ছিল শাস্ত্রীর ভারত। সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রী বলেছেন, ”যতই এই দলটা সাফল্যের পরে সাফল্য পেয়েছে, ততই কিছু মানুষকে ঈর্ষান্বিত হতে দেখেছি। দলের সাফল্যে তাদের নিরাপত্তাহীনতা দেখে আমি হেসেছি। যতই কিছু মানুষ দলটার ব্যর্থতা চেয়েছে, ততই আমরা ভাল করেছি।” এই ইন্টারভিউয়ে শাস্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর দলটার সাফল্য কয়েকজনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.