প্রথম শতরানের পর ব্যাট দেখাচ্ছেন অভিষেক পোড়েল। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ
বাংলা, প্রথম ইনিংস: ৩৮১/৮ (অভিষেক ১১৪, অনুষ্টুপ ৭১, সুদীপ ৪৯, সূর্য ৩৩*, করণ ২৪*, শশাঙ্ক ২/৪২, সৌরভ ২/৭২)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) বিরুদ্ধে প্রাথমিক চাপ কাটিয়ে প্রথম দিনটা অনুষ্টুপ মজুমদারের (Anustup Majumdar) ছিল। তবে চলতি রনজি ট্রফির (Ranji Trophy 2023-24) দ্বিতীয় দিন অভিষেক পোড়েলের (Abishek Porel) নামেই লেখা রইল। সৌজন্যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর প্রথম শতরান। ফিরলেন ১১৪ রানে। যদিও ব্যাটিং লাইনআপের বাকিরা তরুণ উইকেটকিপারকে সঙ্গত দিলে, বাংলার (Bengal) স্কোরবোর্ডে আরও রান উঠে যেত। যদিও দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলা ৮ উইকেটে ৩৮১ রান তুলেছে। মন্দ আলোর জন্য খেলা বন্ধ হওয়ার আগে অপরাজিত রয়েছেন সূর্য সিন্ধু জসওয়াল ৩৩ ও করণ লাল ২৪ রান।
২০২১-২২ রনজি মরশুমে অভিষেক ঘটিয়েছিলেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটার। একেবারে প্রথম ম্যাচ থেকেই মারকুটে মেজাজ দেখিয়েছিলেন তিনি। বেপরোয়া মনোভাবের জন্যই আলাদা পরিচিতি গড়েছেন। ব্যাটিংয়ের সেই ডোন্ট কেয়ার মনোভাব। সেই কারণেই জায়গা করে নিয়েছেন দিল্লি ক্যাপিটালসে (Delhi Capitals)। এহেন অভিষেক সেরে ফেললেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম শতরান। বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটার খাদের কিনারা থেকে তুলে ধরলেন দলকে। টপ অর্ডার যখন ব্যর্থ, তখন অভিষেক বাইশ গজে দাপট দেখালেন।
গত মরশুমে নজরে পড়ে গিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly)। চোট পাওয়া ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) বদলি হিসেবে খেলেওছিলেন আইপিএলে (IPL 2023)। কিন্তু নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। তবে দিল্লির হয়ে কিপিং করার সময় একটা অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরেছিলেন। যা এখনও চোখে লেগে রয়েছে আইপিএল ভক্তদের। এই অভিষেক যে নতুন করে নিজেকে তুলে ধরার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন, তা বোঝাই যাচ্ছে।
প্রথমদিনের শেষে অনুষ্টুপকে সঙ্গ দিয়েছিলেন অভিষেক। এদিনও রুকুর সঙ্গে দাপট দেখাচ্ছিলেন এই তরুণ। ম্যাচের রং বদলে পঞ্চম উইকেটে দুজন যোগ করেন ১২০ রান। তবে দলের স্কোর যখন ২৪৭, সেই সময় সাজঘরে ফিরে যান বহু যুদ্ধের নায়ক রুকু। ১১৮ বলে ৭১ রানে থামেন অনুষ্টুপ। সৌরভ মজুমদারের বলে আউট হওয়ার আগে মেরেছিলেন ১১টি চার।
তবে অভিষেককে আটকে রাখা যায়নি। লোয়ার অর্ডারে শুভম চটোপাধ্যায়ের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৪৬ ও করণ লালের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৩৩ রান যোগ করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। যদিও দিনের শেষ পর্যন্ত নিজের উইকেট অক্ষত রাখতে পারলেন না। ২১৯ বলে ১১৪ রানে থামল অভিষেকের দুরন্ত ইনিংস। ৫২.০৫ স্ট্রাইক রেট বজায় রেখে এই ইনিংস ১৪টি চার ও ১টি ছক্কা দিয়ে সাজানো ছিল।
বছর দুয়েক আগে যুব বিশ্বকাপে স্ট্যান্ডবাই ছিলেন। তবে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। তাতেও কিন্তু কেরিয়ার গোছাতে অসুবিধা হয়নি অভিষেকের। মিডল অর্ডারে ব্যাট করার পাশাপাশি কিপিংও করেন। ঋদ্ধিমান সাহা বাংলা ছাড়ার আগে তরুণ ক্রিকেটারকেই দিয়ে গিয়েছিলেন নিজের গ্লাভস জোড়া। সেই গুরু দায়িত্ব সামলেছিলেন ভালো ভাবে। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ব্যাটেও দিচ্ছেন ভরসা।
ছত্তিশগড় আহামরি দল নয়। তাদের বিরুদ্ধে বাংলার ব্যাটাররা কার্যত ব্যর্থ হলেও অভিষেক দেখালেন, কীভাবে ইডেনে ঘাসে ভরা পিচে ব্যাটিং করতে হয়। সেই অর্থে আগ্রাসী ব্যাটার হলেও ধৈর্য দেখিয়েছেন শতরান পাওয়ার জন্য। এই ম্য়াচ থেকে বাংলার দরকার ৭ পয়েন্ট। অভিষেক প্রাথমিকভাবে দলকে গিয়ে দেওয়ার কাজটা করে দিলেন। বাকিটা সময় বলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.