বল হাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ভাঙলেন বোল্ট। ফাইল চিত্র
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স- ১২৫/৯ (পাণ্ডিয়া ৩৪, তিলক ৩২, বোল্ট ৩/২২)
রাজস্থান রয়্যালস-১২৭/৪ (রিয়ান ৫৪*, আকাশ ৩/২০)
৬ উইকেটে জয়ী রাজস্থান
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হলটা কী! চলতি আইপিএলে তিনটি ম্যাচ খেলে ফেলল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, অথচ জয়ের খাতাই এখনও খুলতে পারল না।
সোমবার ঘরের মাঠ ওয়াংখড়েতে খেলা ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। সেই ম্যাচেও অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে।
টস জিতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। ২০ ওভারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স করে ৯ উইকেটে ১২৫ রান। রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালস ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। একসময়ে দ্রুত উইকেট হারিয়ে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিল রাজস্থান শিবিরে। কিন্তু রিয়ান পরাগ অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে দেন। টানা তিন ম্যাচ জিতল রাজস্থান রয়্যালস।
প্রথম দুটো ম্যাচে হার এবং বাইরের ঘটনায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ফোকাসটাই যেন নড়ে গিয়েছে। আগের দুটো ম্যাচ ছিল অ্যাওয়ে। কিন্তু সোমবার ঘরের মাঠে খেলা ছিল রোহিত শর্মাদের। কিন্তু শুরু থেকে হতশ্রী ব্যাটিং করলেন মুম্বইয়ের তারকা ব্যাটাররা। বলা ভালো, রাজস্থান রয়্যালসের বোলারদের দাপটেই ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের।
আরও পরিষ্কার করে বললে রাজস্যান রয়্যালসের তারকা বাঁ হাতি বোলার ট্রেন্ট বোল্টের দাপটে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে মুম্বইয়ের ব্যাটিং। বোল্ট মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। তাঁর ওই প্রথম স্পেলটা ভারতকে ছিটকে দেয়। পরে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রবীন্দ্র জাদেজা মরিয়া চেষ্টা করলেও ম্যাচ জিততে পারেনি ভারত।
এদিনও ওয়াংখেড়েতে বোল্ট আগুন জ্বালালেন। রোহিত শর্মাকে ফেরালেন শূন্য রানে। অথচ ঘরের ছেলের জন্যই গলা ফাটিয়েছিল ওয়াংখেড়ে। কিন্তু বাইরের দিকে যাওয়া বলটা রোহিতকে সম্মোহীত করল। সঞ্জু স্যানসনও উইকেটের পিছনে শরীর ছুড়ে তালুবন্দি করলেন রোহিতকে। নমন ধীরও বোল্টের শিকার। খাতাই খোলেননি তিনি। ব্রেভিসকেও ফেরালেন বোল্ট। ১৪ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে মুম্বই তখন ধুঁকছে। আরেক ওপেনার ঈশান কিষান বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগে ফিরলেন ডাগ আউটে। ১৬ রানে তাঁকে ফেরালেন বার্গার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দলের প্রথম সারির চার ব্যাটার ডাগ আউটে।
মঞ্চ তৈরি ছিল হার্দিক পাণ্ডিয়ার জন্য। তাঁর দিকে ধেয়ে আসছে সমালোচনা। বিতর্কে বিদ্ধ তিনি। তার উপরে জয়ের মুখ দেখছে না দল। এরকম পরিস্থিতিতে হার্দিক পাণ্ডিয়া যখন ক্রিজে গেলেন তখন তাঁর চওড়া ব্যাটের দিকেই তাকিয়েছিলেন সবাই। বড় রান করে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলতে পারলে দর্শকদের নিজের দিকে টেনে নিতেই পারতেন পাণ্ডিয়া। শুরুটাও করেছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। গলায় চেপে বসা ফাঁসটা আলগা করতে হলে পালটা মারের খেলা শুরু করার দরকার ছিল। পাণ্ডিয়া সেই দিকেই এগোচ্ছিলেন। একসময়ে চটজলদি ১০ বলে ২০ রানও করে ফেলেন পাণ্ডিয়া। কিন্তু চাহালকে মারতে গিয়ে তিনি ফিরলেন ব্যক্তিগত ৩৪ রানে। পাণ্ডিয়া এবং তিলক বর্মা ৫৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। তিলক বর্মাও (৩২) চাহালের শিকার। এই দুই ব্যাটার ফিরে যাওয়ার পরে মুম্বইয়ের বাকিরা আর কেউ সেভাবে রানই করতে পারলেন না। অল ডাউন হয়ে যায়নি মুম্বই, এটাই তাদের সান্ত্বনা হতে পারে।
এত কম রানের পুঁজি নিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জেতা যায় না। ১২৫ রান সম্বল করে ম্যাচ জিততে হলে শুরু থেকেই বিধ্বংসী বোলিং করতে হত মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে।
১৭ বছর বয়সি কুয়েনা মফাকা মাত্র ১০ রানে তুলে নেন যশস্বী জয়সওয়ালকে। সঞ্জু স্যামসন (১২) মুম্বইয়ের বোলার আকাশ মাধোয়ালের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে এনে বোল্ড হলেন। ৪২ রানে ২ উইকেট হারায় রাজস্থান রয়্যালস। মাধোয়ালের বলে জস বাটলারও (১৩) নিজের উইকেট ছুড়ে দিলেন। ৪৮ রানে তিন উইকেট হারায় রাজস্থান। এই পরিস্থিতি থেকে রাজস্থান রয়্যালসকে টেনে তোলেন রিয়ান পরাগ। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে রিয়ান পরাগ ম্যাচের নায়ক হয়েছিলেন।
ব্যথা উপশমকারী ট্যাবলেট খেয়ে খেলতে নেমেছিলেন তিনি। সেই রিয়ান পরাগ এদিনও রাজস্থানের জয়ের অন্যতম কাণ্ডারী। হঠাৎই অস্বস্তিতে পড়ে যাওয়া রাজস্থান রয়্যালসকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন তিনি ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ব্যক্তিগত ১৬ রানে আউট হন অশ্বিন। চার উইকেটে ৮৮ হয়ে যাওয়া রাজস্থান রয়্যালসকে অবশ্য আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। রিয়ান পরাগ ৫৪ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে দেন রাজস্থানকে। ২৭ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে নেয় রাজস্থান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.