Advertisement
Advertisement

Breaking News

Pullela Gapichand

‘ভাবনার পৃথিবী বদলে দেওয়া জাদুকর’, খেলার বিশ্বকে শাসন করা শচীনে মোহিত গোপীচাঁদ

দুনিয়ার সেরা বোলারদের ঔদ্ধত্যকে শচীন বশ করতে পারেন উইলোর জাদুস্পর্শে। বলছেন গোপীচাঁদ।

Pullela Gapichand praises Sachin Tendulkar for his success | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:April 23, 2023 5:08 pm
  • Updated:April 23, 2023 5:08 pm  

পুল্লেলা গোপীচাঁদ: শচীন তেণ্ডুলকর কত বড় মাপের খেলোয়াড়- সে আর আমি নতুন করে কী লিখব! তাঁর গোটা কেরিয়ার তো দেশবাসীর সামনে খোলা চিঠির মতোই পড়ে আছে। সকলেই তা পড়েছেন, দেখেছেন, জানেন সব কিছু। তাঁর প্রতিটি রান আজও দেশবাসীর স্মৃতিতে গাঁথা। আমি সে-কথা আর আলাদা করে বলছি না। বরং বলছি, শচীন হলেন আমার কাছে সেই জাদুকর যিনি বদলে দিয়েছেন আমাদের ভাবনার আস্ত পৃথিবীটাকেই। হয়তো তিনি জানতেন না যে তিনিই এই পরিবর্তনের ভগীরথ, তবে বাস্তব কিন্তু সেটাই। আমাদের মন-মনন-মস্তিষ্কের মানচিত্র বদলে দিয়েছেন ওই একটা মানুষই।

অথচ আমি ক্রিকেট খেলি না। ঘনিষ্ঠতা দূরে থাকুক, আমার সঙ্গে তাঁর দেখাও হয়নি। আমি দূর থেকেই দেখেছি শচীনকে। যেভাবে মাঝসমুদ্রে দূরের নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে একাকী নাবিক চিনে নেয় পথ, সেভাবেই। যখন কেউ কোনও খেলা শুরু করে, তখন তার একটাই লক্ষ্য থাকে- সেই খেলাটায় সেরা হয়ে ওঠা। আমার খেলায় এই মাইলফলক ছিলেন প্রকাশজি। তাঁকে বাদ দিলে আটের দশকে শেষের দিকে সেরকম চ্যাম্পিয়ন কেউ ছিলেন না, যাঁর দিকে অপলকে তাকিয়ে তাকিয়ে থাকা যায়। ঠিক এই শূন্যস্থানেই আমার জীবনে এলেন শচীন। আমি সবিস্ময়ে আবিষ্কার করলাম, আমার দেশেই আছেন এমন একজন মানুষ, যিনি নিজের খেলার বিশ্বটাকে শাসন করতে জানেন। দুনিয়ার সেরা বোলারদের ঔদ্ধত্যকে যিনি বশ করতে পারেন উইলোর জাদুস্পর্শে। দেশের জন্য দশের জন্য যিনি বছরের পর বছর সংগ্রাম করে ছিনিয়ে আনতে পারেন শ্রেষ্ঠতমের মর্যাদা। আমি বুঝতে পারলাম, এই সেই নক্ষত্র, যাকে খুঁজে চলেছিল আমার হৃদয়ের কম্পাস। ক্রীড়াজগতের ভাল ভাল জিনিসগুলোকে যদি একসঙ্গে পাশাপাশি বসানো যায়- কঠোর পরিশ্রম, নিয়মানুবর্তিতা, প্যাশন – তবে সেই সব কিছুর সমাহারের নামই শচীন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: একদিনে প্রণামী পড়ল ‘মোটে’ ২.৮৫ কোটি, গরিব হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মন্দির!]

আমি বুঝে গিয়েছিলাম, এই মানুষটার গুণগুলিকে আমাকেও রপ্ত করতে হবে। শচীন (Sachin Tendulkar) যদি পারেন, তাহলে আমিও পারব। আমাদের দেশের মাটিতেও জন্ম হতে পারে চ্যাম্পিয়নের। যতবার শচীন অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে রান করেছেন, ততবার যেন এই সেরা হওয়ার বিশ্বাস চারিয়ে গিয়েছে আমাদের অন্তরাত্মায়। এবং তার পরেও তো দেখেছি, তিনি কতখানি বিনয়ী। সাফল্য তাঁকে উচ্ছিন্ন করতে পারেনি। তাঁর থেকে আমি এটাই শেখার চেষ্টা করেছি আজীবন।

Sachin-Gopi1

আর একটা বিষয়ের উল্লেখ আমি করতে চাই, তা হল প্রতিবার চোট-আঘাতের বিপর্যয় কাটিয়ে শচীনের ফিরে আসা যেন লড়াইয়ের অন্য এক ইস্তাহার। খেলাধুলোর সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা বুঝবেন এ লড়াই কতখানি কঠিন। শচীন বহুবার আহত হয়েছেন। খেলা থেকে ছিটকে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর মানসিক কাঠিন্য এতখানি যে, চোট তাঁকে কাবু করতে পারেনি। তিনি ফিরে এসেছেন আরও উজ্জ্বল হয়ে। আর এই লড়াইটা তিনি লড়েছেন একা, লোকচক্ষুর অন্তরালে, নিজের সঙ্গে নিজে। দেশের জার্সি গায়ে খেলতে নামার অদম্য জেদ না থাকলে এরকম প্রত্যাবর্তন বারেবারে সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। শচীন তাঁর খেলাকে এতটাই ভালবাসেন যে, তাঁর আর খেলার মাঝে যতবার চোট বাধার প্রাচীর হয়ে এসে দাঁড়িয়েছে, ততবার পরাজয় হয়েছে আঘাতেরই। আঘাত তাঁকে আহত করেছে, বেঁধে রাখতে পারেনি, পিছুটানে থামিয়ে দিতে পারেনি।

[আরও পড়ুন: ভরসা নেই মোদির উপরও! ফেডারেশন কর্তার বিরুদ্ধে এবার আইনি পথে কুস্তিগিররা]

শচীন আমাদের জন্য, এই দেশের ক্রীড়াজগৎকে দিশা দেখানোর জন্য যা করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদের কোনও শব্দই হয়তো যথেষ্ট নয়। জীবনের ক্রিজে যখন অপরাজেয় অর্ধশতরান করছেন তিনি, আমি বরং তাঁকে ১০১তম শতরানের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাখি। ভাল থাকুন শচীন, আমাদের সকলের জন্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement