গৌতম ভট্টাচার্য, লন্ডন: একে লর্ডস! তার উপর মঞ্চে কিংবদন্তিদের ত্রিভূজ। শচীন তেন্ডুলকর। ওয়াসিম আক্রম এবং স্যর আইজ্যাক আলেকজান্ডার ভিভিয়ান রিচার্ডস। ক্রিকেটবিশ্বের সর্বকালের সেরা ত্রয়ী একসঙ্গে। প্রথমে কথা বলছিলেন শচীন ও আক্রম। শচীনকে নিয়ে সেই তারস্বরে চিৎকার, শ্যা-চী-ন, শ্যা-চী-ন। কে বলবে এটা ক্রিকেট মাঠ নয়। লন্ডনের অভিজাত এলাকায় উচ্চবিত্ত ভারতীয়দের তাঁরা এক-একজন যেন আম দর্শক। কিন্তু শচীন যতই কথা বলুন এবং ফ্লো-কার্ট অনুযায়ী তাঁর এবং আক্রমের পরে স্যর ভিভের ওঠার কথা। ক্রিকেটীয় শ্রদ্ধা বলে একটা কথা আছে। এত বড় ক্রিকেটীয় নাইটকে তিনি কী করে অপেক্ষা করাতে পারেন? তিনি এবং আক্রম মঞ্চে ডেকে আনলেন ভিভকে।
‘আজ তক’ সেলাম ক্রিকেটে এরপর একটা অদ্ভুত মুহূর্ত তৈরি হল। শচীন প্রকাশ্যে বললেন, ২০০৭-এ বিশ্বকাপের পর তিনি অবসর নিতে চেয়েছিলেন। “ভারতীয় ক্রিকেটের পরিবেশ আমার খুব অস্বাস্থ্যকর মনে হচ্ছিল (গ্রেগ চ্যাপেল অধ্যায়)। এটাও বুঝেছিলাম যে কিছুই বদলাবে না। সব এক থাকবে। তখন আমি ঠিক করি সরে যাব। আমার দাদা অজিত বলেছিল, এখন চলে যাবি কেন? ২০১১-এ মুম্বই বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলতে ইচ্ছে করছে না? সে দিন হয়তো ট্রফিটা ধরতে পারবি। আমি বলি ভেবে দেখব। এরপর আমি যখন ফার্ম হাউসে মন খারাপ করে বসে আছি, আমার ফার্ম হাউসে স্যর ভিভের ফোন আসে।”
ভিভ বললেন, “বাকিটা আমি বলছি। আমি ওকে ফোন করে বলি, শুনছি তুমি খেলা ছেড়ে দেবে? এখন ছেড়ে দিলেও আমার কাছে তুমি গ্রেট ব্যাটসম্যানই থাকবে। কিন্তু আমার কথা যদি শোনো, ছেড়ো না। তুমি হলে গডফাদার অব ইন্ডিয়ান ব্যাটিং। তুমি থাকো। থেকে ছেলেদের দেখাশোনা করো।” হাততালিতে ফেটে পড়ল নার্সারি এন্ড।
বিরাট কোহলির প্রশংসা করে ভিভ বললেন, “ব্যাটসম্যানশিপের যে বাড়িটায় আমি থাকতাম, সেখানে এখন বিরাট দখল নিয়েছে। লোকে ওকে অ্যারোগেন্ট বলতে পারে। আমি বলি না। আমি বলি ব্যাটিংটা হল নিজের বাড়ি চেনা। বিরাট কনফিডেন্ট। নিজের বাড়ি চেনে। চাবিগুলো জানে। বেরোবার-ঢুকবার রাস্তা চেনে।” এ বারের বিশ্বকাপে একমাত্র ভিভকে দেখলাম ইংল্যান্ড নয়, নিজের দেশকেই ফেভারিট ধরছেন। বললেন, “এই টিমটাকে দেখে মনে হচ্ছে আমাদের মতো। এদেরও একটা গার্নার আছে। একটা মার্শাল আছে। আমাদের পরম্পরা এরা রাখতে পারবে বলে আশা করছি।”
সংযোজক বোরিয়া মজুমদার জিজ্ঞেস করলেন, “এ মাঠে কপিলের নেওয়া আপনার ক্যাচটা?” ভিভ জবাব দেন, “ইন্ডিয়া গেলেই আমাকে লোকে ক্যাচটার কথা মনে করাতো। এমনই কপাল আমাদের যে ক্যাচটা কপিলের কাছেই গিয়েছিল। ইন্ডিয়ান টিমে আর কেউ ওটা ধরতে পারত না।” বলে যোগ করেন, “ধোনি কাপটা ২০১১-এ হাতে তোলে। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। আর কেউ শটটার কথা ইন্ডিয়ায় আমায় মনে করাবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.