ফাইল ছবি।
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: শাহবাজ আহমেদ (Shahbaz Ahmed) কোথায় গেলেন? তাঁর কি চোট লেগেছে? লেগে থাকলে তা কেমন চোট? চোট সারাতে তিনি কী করছেন? তিনি কি জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে? নাকি বাড়ি ফিরে গিয়েছেন? চলতি মরশুমে তিনি কি বাংলার হয়ে রনজি ট্রফি খেলবেন আদৌ? একরাশ প্রশ্ন। কিন্তু কোনও উত্তর নেই। শাহবাজ নিয়ে কারও কাছে খবরই নেই কোনও। বাংলা টিম জানে না। সিএবি জানে না। কাউকেই কিছু জানাননি বাংলা অলরাউন্ডার। খুব সহজে, শাহবাজ ‘নিরুদ্দেশ’! কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর!
মঙ্গলবার রাতে সিএবি (CAB) প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বললেন, ‘‘শাহবাজ কোথায়, কী অবস্থা, আমরা কিছুই জানি না। ওর চোট শুনে আমি নিজের উদ্যোগে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে (এনসিএ) যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু কোনও আপডেট পাইনি। শুনেছি, ওর চোট আছে। ছ’সপ্তাহ লাগবে সারতে। কিন্তু শাহবাজ আমাদের কিছুই জানায়নি।’’ বাংলা টিমও নিকষ অন্ধকারে। অধিনায়ক। হেড কোচ। কোচ। ফিজিও। কেউ কিছু জানেন না। টিমও একপ্রকার হাল ছেড়ে দিয়েছে। প্লেয়ার নিজে আগ্রহী না হলে টিমও আর কাঁহাতক খোঁজ রাখবে?
কিন্তু কী এমন ঘটে গেল যে, শাহবাজের সঙ্গে বাংলা টিমের (Bengali Ranji Team) যোগাযোগ ব্যবস্থা এমন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল? গত বছর পর্যন্ত টিমের মহাগুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন শাহবাজ। লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটিংকে ভরসা দিতেন যেমন, তেমন তাঁর বাঁ হাতি স্পিনও প্রবল কাজে দিত। দলের সেরা ক্রিকেটারদের পাওয়া নিয়ে এবার বাংলাকে ভালোই ভুগতে হচ্ছে। মুকেশ কুমার ভারতীয় টিমে। অভিমন্যু ঈশ্বরণ-আকাশ দীপ ভারত ‘এ’ খেলছেন। ও দিকে, রনজির প্রথম দু’ম্যাচ থেকে বাংলার সংগ্রহ চার পয়েন্ট। নকআউটে উঠতে হলে গ্রুপের বাকি পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটেয় সরাসরি জিততে হবে। আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে ইডেনে ছত্তিশগড়ের সঙ্গে খেলা বাংলার। সেই ম্যাচে অভিমন্যু বা আকাশ, কেউ নেই। তবে তাঁদের অসমের বিরুদ্ধে পাওয়া যাবে। কিন্তু শাহবাজকে কবে পাওয়া যাবে, কেউ জানে না।
শোনা গেল, চলতি বছর বাংলার হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফি খেলার পরই নাকি শাহবাজ বলতে থাকেন, তাঁর হাঁটুর অবস্থা ভালো নয়। সর্বাগ্রে হাঁটু সারাতে হবে তাঁকে। তার পর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির ডাক্তারের সঙ্গে কথা-টথা বলে জানান, তাঁকে নাকি আট সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হবে। ব্যস! তার পর থেকে আর কোনও যোগাযোগ নেই বাংলা টিমের সঙ্গে! কারও কারও কাছে খবর, এনসিএ-তে নাকি তাঁকে বলা হয়েছিল ‘অ্যাগ্রেসিভ রিহ্যাব’ করলে সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে ফিট হয়ে যাবেন। কিন্তু শাহবাজ নাকি রাজি হননি। তিনি ছ-সাত সপ্তাহের পূর্ণ রিহ্যাবে যেতে চেয়েছিলেন। অনেকের ধারণা, এ মরশুমে যাতে তাঁকে আর বাংলা খেলতে না হয়, সেই কারণে! তিনি সোজা আইপিএল খেলতে নামতে চান। কারণ, বাংলা টিম ম্যানেজমেন্টের আচরণে তিনি মনোঃক্ষুণ্ণ! ক্ষুব্ধ। এতটাই যে, আগামী বছর রাজ্য বদলও করতে পারেন।
শাহবাজ এমনিও বাংলার ভূমিপুত্র নন। হরিয়ানার ছেলে। তা হলে কি তিনি হরিয়ানা ফিরে যাবেন? হরিয়ানা ক্রিকেট সংস্থার সর্বেসর্বা বললেন যে, এ ব্যাপারে তিনি এখনই মন্তব্য করতে চান না। শুধু মনে করিয়ে দিলেন, নিশান্ত সান্ধু রয়েছেন হরিয়ানায়। যিনিও শাহবাজের মতো বাঁ হাতি অলরাউন্ডার। তা হলে? কী করবেন শাহবাজ? যাবেন কোথায়? সময় আছে। ভাবা যাবে পরে। আগে তো শাহবাজ আহমেদকে ‘খুঁজে’ পাওয়া যাক!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.