সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহেই শুরু হয়েছে বাইশ গজের লড়াই। খুব শীঘ্রই মাঠে নামবেন কোহলিরা। এর মধ্যেই বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং শুরু করতে এবার উদ্যোগ নিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI)। শুধু তাই নয়, নতুনত্বও আমদানি করল। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি বা NCA–তে (National Cricket Academy) ক্রিকেটারদের ট্রেনিংয়ের সময় করোনার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য থাকছে এবার কোভিড টাস্ক ফোর্স। যে ফোর্সে থাকবেন এনসিএ প্রধান রাহুল দ্রাবিড় স্বয়ং।
রবিবার রাতে বিভিন্ন রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাকে ট্রেনিং শুরু নিয়ে ‘এসওপি’ (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) বা নির্দেশিকা পাঠিয়েছে বোর্ড। তাতে একঝাঁক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ট্রেনিং শুরু করা থেকে ক্রিকেটারদের পকেটে স্যানিটাইজার রাখা, মাঠে আসার আগে সর্বক্ষণ এন ৯৫ মাস্ক পরে থাকা, অন্যের সরঞ্জাম না নিয়ে নিজের ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম নিজেদের কিনতে বলা– এরকম নানাবিধ নির্দেশিকা ১০৭ পাতার ‘এসওপি’-তে পাঠায় বোর্ড। সঙ্গে বোর্ড এটাও বলে দেয়, টিমের কোনও সাপোর্ট স্টাফ, কোন মাঠকর্মীর বয়স যদি ষাট বছরের উর্ধ্বে হয়, তা হলে তাকে শিবিরের সময় উপস্থিত থাকতে দেওয়া যাবে না। যারপর CAB–সহ অন্যান্য রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় তোলপাড় পড়ে যায় গভীর রাতে।
কিন্তু বোর্ড প্রেরিত সেই ‘এসওপি’–তে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং কী ভাবে শুরু করা হবে, সেটাও বলা হয়েছিল। সেই ‘এসওপি’ মারফত দেখা যাচ্ছে, এনসিএ–তে ট্রেনিং শুরু করতে হলে সর্বাগ্রে কোভিড টাস্ক ফোর্স গঠন করা জরুরি। যে ফোর্সে থাকবেন বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশনসের এজিএম, এনসিএ–র হেড ফিজিওথেরাপিস্ট, নিরাপত্তা প্রধান, একজন হাইজিন অফিসার এবং জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধান স্বয়ং রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। একজন মেডিক্যাল অফিসার এবং একজন নার্সকেও ‘অন কল’ ভিত্তিতে রাখতে হবে। এনসিএ–তে ট্রেনিংয়ের পুরো ব্যাপারটা দেখভাল করবে এই টাস্ক ফোর্স। ক্রিকেটারদের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলা থেকে শুরু করে এনসিএ-তে কে ঢুকছে, কে বেরোচ্ছে দেখা, করোনার বিরুদ্ধে ট্রেনিং সেন্টারকে যথেষ্ট নিরাপদ রাখার দায়িত্ব – সব কিছু করতে হবে এই টাস্ক ফোর্সকে।
‘সংবাদ প্রতিদিন’–এর হাতে আসা সেই ‘এসওপি’ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১২ দফা নির্দেশিকা তুলে দেওয়া হল:
১) ট্রেনিং শুরুর আগে ক্রিকেটারদের সরঞ্জাম জীবানুমুক্ত করতে হবে।
২) ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফরা মাঠে নামার আগে তাদের স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক। নতুন কেউ এলে তার করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।
৩) ক্রিকেটারদের সবাইকে পোশাক পরে আসতে হবে। এনসিএ–র শৌচাগার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে।
৪) বলে লালা ব্যবহার করা যাবে না। বলকেও জীবানমুক্ত রাখতে হবে।
৫) কোচ বা সাপোর্ট স্টাফদের কাউকে প্রতিদিন প্রত্যেক ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসা করতে হবে সে কোনও রকম অসুস্থ বোধ করছে কি না?
৬) ছোট গ্রুপে ট্রেনিং শুরু করতে হবে। এবং দু’জন ক্রিকেটারের মধ্যে দু’মিটারের দূরত্ব থাকা বাধ্যতামূলক।
৭) ট্রেনিং এমন ভাবে করতে হবে যাতে ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন তেমন না পড়ে।
৮) জিমের সরঞ্জাম নতুন করে সাজাতে হবে। জিম ব্যবহার না করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। কিন্তু একান্তই প্রয়োজন হলে দু’মিটারের দূরত্বে দু’জনকে জিম করতে হবে। একসঙ্গে ঘরে থাকতে পারবেন চার জন ক্রিকেটার। বিভিন্ন স্লটে জিম সেশনকে ভাগ করতে হবে যাতে যথেষ্ট সময় থাকে জিমের সরঞ্জামকে জীবানুমুক্ত করার।
৯) ফিজিওথেরাপিও একান্ত দরকার হলে এসি বন্ধ করতে হবে। প্লেয়ার এবং ফিজিও দু’জনকেই মাস্ক পরতে হবে।
১০) মাস্কে ক্রিকেটাররা নাম লিখে রাখলে আরও ভাল। তাতে অন্যেরটা ব্যবহার হবে না।
১১) ট্রেনিং শুরুর আগে ক্রিকেটারদের কোভিড শিক্ষার বন্দোবস্ত করা বাধ্যতামূলক।
১২) ট্রেনিং শুরুর আগে ক্রিকেটারকে লিখিত দিতে হবে যে, সে ট্রেনিং করতে রাজি।
এদিকে, বয়স ভাঁড়ানো নিয়েও নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে বিসিসিআই। এবার থেকে যদি কোনও ক্রিকেটার বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগ স্বীকার করে নেয়, তা হলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। কিন্তু কেউ যদি সেটা না করে, তা হলে কপালে দু’বছরের নির্বাসন! আসন্ন ক্রিকেট মরসুম থেকে বোর্ড আয়োজিত বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে এই নতুন আইন কার্যকর হয়ে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.