শামিকে সম্মান ইস্টবেঙ্গলের। ছবি: অমিত মৌলিক।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উইকেট পিছু এক প্লেট বিরিয়ানির চুক্তিতে একদিন ক্রিকেটজীবন শুরু করেছিলেন। সেই তিনিই বলকে কথা বলাতে পারেন।
সব বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি এমন এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে এসেছিলেন। তাঁর বলের সিম পজিশন দেখে ঈর্ষান্বিত হতে পারেন পড়শিরা। গর্ব করতেই পারেন গৃহস্থ। তিনি মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। ভারতের এই তারকা পেসারকে ‘প্রাইড অফ বেঙ্গল’ সম্মানে বৃহস্পতিবার ভূষিত করল ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে চাঁদের হাট বসেছিল ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। লাল-হলুদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতেই শামিকে প্রস্তাব ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের, ”তুমি আমাদের হয়ে খেলবে?” মঞ্চে সম্মানিত হওয়ার সময়ে সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন ভারতের তারকা পেসার। বললেন, ” আমাকে একটু সময় দিন। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, কালীঘাটের মতো ক্লাবের হয়ে কে না খেলতে চায়! তবে বহুদিন ক্লাব লিগে খেলিনি। আশা রাখি একদিন নিশ্চয় খেলব।”
মহম্মদ শামির হাতে ‘বাংলার গৌরব’ সম্মান তুলে দেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেই সঙ্গে পুরস্কারমূল্য হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হয়। আবেগপ্রবণ শামি বলেন, ”সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমাকে এখানে ডাকা হয়েছে। আজ আবহাওয়া যা ছিল, তাতে হয়তো আসতেই পারতাম না। সত্যি কথা বলতে কী, বাংলা আমাকে পরিচিতি দিয়েছে, আমাকে খ্যাতি দিয়েছে, আমাকে যশ দিয়েছে, এমন পরিচিতি-খ্যাতি আমার জন্মস্থান উত্তরপ্রদেশও দেয়নি। বাইরে থেকে এলে বিশ্বাস দেরিতে আসে। কিন্তু দাদি (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) লক্ষ্মীরতন শুক্লাদের বিশ্বাস, আস্থা অর্জন করতে পেরেছি বলেই বিশ্বাস করি।”
জাতীয় দলে কবে ফিরবেন মহম্মদ শামি? এই প্রশ্ন প্রায়শই উড়ে আসে শামির দিকে। এদিনও ইস্টবেঙ্গলের অনুষ্ঠানে একই প্রশ্ন করা হয় ভারতের তারকা বোলারকে। তিনি বলেন, ”খুব কঠিন এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া।” ভারতের নির্বাচকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অজিত আগরকরকেও এই প্রশ্নের সামনে পড়তে হয়। শামি অল্পবিস্তর বোলিং শুরু করেছেন। কিন্তু পুরনো ছন্দে এখনও ধরা দেননি তিনি।
পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে শামি বল হাতে আগুন জ্বালিয়েছিলেন। তার পরেই পায়ের অস্ত্রোপচার করতে হয় তাঁকে। আইপিএল-টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামা হয়নি শামির। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজে কি দেখা যাবে তাঁকে? সময় এর উত্তর দেবে।
শামির স্মৃতিতে ফিরছে বার্বাডোজের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল। তিনি বলেন, ”একসময়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালেরই পুনরাবৃত্তি হয়তো হতে চলেছে। কিন্তু সূর্যকুমার যাদবের ওই ক্যাচ ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দেয়।”
কলকাতায় পা রাখার পরে ডালহৌসি ক্লাবে খেলেন, খেলেন টাউন ক্লাবে। নেটে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বল করে তাঁকে মুগ্ধ করেন শামি। সৌরভের পরামর্শেই বাংলার হয়ে রনজি ট্রফিতে সুযোগ পান। ইডেন গার্ডেন্সেই টেস্ট অভিষেক হয় শামির। ইস্টবেঙ্গলের অনুষ্ঠানে এসে পুরনো দিনের স্মৃতিতে ডুব দেন বাংলার পেসার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.