Advertisement
Advertisement

Breaking News

Shahbaz Ahmed

ক্রিকেটের টানে ছেড়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং, মনোজ-অরুণের হাত ধরেই উত্থান শাহবাজের

রবিবার ভারতীয় দলে অভিষেক হয়েছে শাহবাজ আহমেদের।

Manoj Tiwari and Arun Lal contributed in Shahbaz Ahmed's career | Sangbad Pratidin
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:October 10, 2022 11:31 am
  • Updated:October 10, 2022 1:48 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রিকেটের টানে থার্ড ইয়ারে কলেজ ছেড়েছুড়ে বেরিয়ে আসা। যথেষ্ট মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও। খেলবেন বলে নিজের রাজ্য হরিয়ানা ছেড়ে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরত্বের বাংলায় চলে আসা তল্পিতল্পা গুটিয়ে। দিনের পর দিন কলকাতায় অপরিসর ঘরে জীবনযাপন। লাগাতার কৃচ্ছসাধন। বাংলা ক্রিকেটার শাহবাজ আহমেদের (Shahbaz Ahmed) জীবনটা বেশ আকর্ষণীয়। রবিবার রাঁচিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হল।

অভিষেকে দশ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে এক উইকেট-পরিসংখ্যান বিচারে আহামরি নয় মোটেই। কিন্তু বাংলার শাহবাজের প্রভাব? যা হরিয়ানার হাথিনের কচিকাঁচাদের বিশ্বাস দেয় যে, গলি ক্রিকেট খেলে শাহবাজ ভারতের হয়ে খেলতে পারলে, তারাও পারবে? ঠিকই পড়লেন, রাস্তায় রাস্তায় ক্রিকেট খেলেই কিন্তু উত্থান শাহবাজের। রনজি, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঢুকে পড়া।

Advertisement

হাথিনে শাহবাজদের বাড়িটা দারুণ চটকদার কিছু নয়। দোতলাটা শুধু ঝাঁ চকচকে। বাকি সব বেশ সাদামাটা। পিতা আহমেদ জান,সরকারি চাকুরে। যিনি কস্মিনকালেও ভাবতে পারেননি, পড়াশোনায় তুখোড় ছেলে কলেজ ছেড়ে ক্রিকেটের টানে এ ভাবে পাগলপারা হয়ে যাবে। “যে কোনও মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো আমরাও ক্রিকেট দেখতে ভালবাসতাম। আমি নিজেও খেলেছি। কিন্তু পড়াশোনাকেই সব সময় আমরা অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছি। শাহবাজও কিন্তু ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র। ক্লাস টেনে আশি শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। ক্লাস টুয়েলভে ৮৮ শতাংশ। স্বপ্নেও ভাবিনি, ও পড়াশোনা ছেড়ে ক্রিকেটে চলে যাবে,” বলতে থাকেন আহমেদ জান। কিন্তু পুত্রের পাশে সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁর মা অবনম। বলে দেন, “আমার স্বামীর কথা বাদ দিন। উনি এখনও ২০১৫ সালে পড়ে আছেন। ছেলের ইচ্ছে-অনিচ্ছেও তো দেখতে হবে।” 

[আরও পড়ুন: লড়াই শেষ, প্রয়াত উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদব]

তা দেখেওছে, শাহবাজের পরিবার। পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দিলেও পিতা জান আহমেদ খুশি যে ছেলে লকডাউনের সময় ডিগ্রি শেষ করেছে। আর মা অবনম বলছিলেন, “ক্রিকেট খেলবে বলে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছেড়ে দিয়েছিল শাহবাজ। কলকাতা যাবে বলে। তখন ওর কলেজের প্রোফেসর পর্যন্ত বলেছিলেন, ভুল সিদ্ধান্ত। সঠিক সিদ্ধান্ত যে ছিল, আজই প্রমাণিত।” কলকাতায় এসে প্রথমে তিন জন ক্রিকেটারের সঙ্গে একটা বারো ফুট বাই বারো ফুটের ঘরে থাকতেন শাহবাজ। রান্না করতে জানতেন না। তাই বাসন মাজতে হত।

শাহবাজের আজ এই জায়গায় পৌঁছনোর নেপথ্যে তিন জন। প্রাক্তন বাংলা অধিনায়ক এবং রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwari)। প্রাক্তন বাংলা কোচ অরুণ লাল (Arun Lal)। এবং পার্থ প্রতিম চৌধুরী। যিনি তপন মেমোরিয়াল ক্লাবে নিয়ে এসেছিলেন শাহবাজকে। প্রথম দিকে তিনি বাংলার ভূমিপুত্র নন বলে, তাঁকে খেলানো নিয়ে একটা অসূয়া ছিল। কিন্তু সে সবে কর্ণপাত করেননি মনোজ। তিনিই শাহবাজকে বাংলা টিমে ঢোকানোর নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকাটা নিয়েছিলেন। অরুণেরও অসম্ভব পছন্দের ক্রিকেটার শাহবাজ। বাংলার প্রাক্তন কোচ যাঁর নাম দিয়েছিলেন ‘জানবাজ’। এবং শাহবাজের পরিবার চায়, এ বছরই কোনও এক সময় কলকাতা এসে মনোজ-অরুণদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যেতে। বিরিয়ানি বানিয়ে নিয়ে যেতে। কী করা যাবে, মনোজরা না থাকলে শাহবাজের নীল জার্সি পরাই হয় না!

[আরও পড়ুন: রোনাল্ডোর মুকুটে নতুন পালক, ক্লাব ফুটবলে ৭০০ গোলের মালিক পর্তুগিজ মহানায়ক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement