Advertisement
Advertisement

Breaking News

Umpires

নিরাপত্তাহীন ময়দানের আম্পায়াররা, অকথ্য গালিগালাজের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকিও!

ময়দানে ‘গড়াপেটা’ কেলেঙ্কারির মধ্যেই নতুন ‘কলঙ্ক’ প্রকাশ্যে চলে এল!

Maidan umpires getting death threats, abused

ফাইল ছবি

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:March 3, 2024 2:08 pm
  • Updated:March 3, 2024 2:08 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: ময়দানে ‘গড়াপেটা’ কেলেঙ্কারির মধ্যেই নতুন ‘কলঙ্ক’ প্রকাশ্যে চলে এল! যার নাম আম্পায়ারদের অসীম নিরাপত্তাহীনতা! ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর হাতে মৃন্ময় সেন শর্মা নামের এক ম‌্যাচ অবজার্ভারের চিঠি এসে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় ডিভিশনের তালতলা ইন্সটিটিউট বনাম জর্জ টেলিগ্রাফ ম‌্যাচের প্রেক্ষিতে যা তিনি পাঠিয়েছিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ‌্যায়কে। এবং অবজার্ভারের প্রেরিত সেই চিঠিতে ম‌্যাচের দুই আম্পায়ারের প্রতি খেলায় অংশ নেওয়া দুই টিমের ক্রিকেটার-কোচের যে ‘অশালীন’ আচরণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, তা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো!

চিঠিতে লেখা হয়েছে যে, তালতলার এক ক্রিকেটার এলবিডব্লিউ হওয়ার পর আম্পায়ারের দিকে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন প্রথমে। যার পর তালতলা কোচ কাঞ্চন দাস অকথ‌্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে দেন আম্পায়ারকে। শুধু তাই নয়, তালতলা অধিনায়ক মণীশ সিং রাওয়াত পরবর্তীতে কট বিহাইন্ড হলে টিমের কোচ প্লেয়ারকে নির্দেশ দেন মাঠ ছেড়ে না বেরোতে। বরং ঝামেলা করতে! ম‌্যাচ অবজার্ভার স্বয়ং গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে কোনও লাভ হয়নি। বরং তাঁর সঙ্গেও রূঢ় ব‌্যবহার করা হয়। কাহিনির দ্বিতীয় অংশ ঘটে, জর্জ ব‌্যাট করতে নামার সময়। জর্জের অধিনায়ককে কট বিহাইন্ড দেওয়া হলে তিনি ব‌্যাট উঁচিয়ে তেড়ে যান আম্পায়ারের দিকে। সঙ্গে চলতে থাকে অশ্রাব‌্য গালিগালাজ। হুমকি প্রদান। খেলা শেষে সেই প্লেয়ারের সঙ্গে অবজার্ভার কথা বলতে গেলে ফের তাঁকে দুর্ব‌্যবহারের মুখে পড়তে হয়। ম‌্যাচ অবজার্ভারকে সোজাসুজি বলে দেওয়া হয়, সিএবি-র যে কর্তার সঙ্গে ইচ্ছে, তিনি কথা বলতে পারেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হবে না। কারণ, সিএবি নাকি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না!

Advertisement

[আরও পড়ুন: বুধে প্রধানমন্ত্রীর হাতেই হাওড়া মেট্রোর উদ্বোধন, যাত্রী পরিষেবা শুরু কবে?]

শনিবার স্থানীয় ক্রিকেটের আম্পায়ারিং মহলের কেউ কেউ বলছিলেন যে, তাঁরা সম্পূর্ণ ঢালহীন, তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দারে পরিণত হয়েছেন! কারণ, তাঁদের কোনও ক্ষমতাই নেই। বলা হল, বোর্ড ম‌্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে ক্রিকেটার দুর্ব‌্যবহার করলে সেই প্লেয়ারের আর্থিক জরিমানা হয়। ম‌্যাচ ভাতা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় ক্রিকেটে ম‌্যাচ ভাতা নেই, তাই তা কাটার ব‌্যাপারও নেই। কেউ কেউ বলছিলেন, অতীতে জগমোহন ডালমিয়ার আমলে প্লেয়ার মাঠে অশালীন ব‌্যবহার করলে তাকে এক সেশনের জন‌্য মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া যেত। প্লেয়ারের অভদ্রতার জন‌্য সেই টিমকে তখন দশ জনে ফিল্ডিং করতে হত। ট‌্যাঁ-ফোঁ করার জায়গা থাকত না। কিন্তু সেই পাট এখন নাকি উঠে গিয়েছে। আম্পায়ারদের তাই পেটের দায়ে এখন অহরহ অপমানিত হতে হয়।

স্থানীয় আম্পায়ারদের অনেকের বক্তব‌্য, তাঁদের হাতে ক্ষমতা থাকলে টাউন বনাম মহামেডান ম‌্যাচে ক্রিকেটারদের ‘সন্দেহজনক’ কীর্তিকলাপ দেখামাত্র তাঁরা তা বন্ধ করে দিতে পারতেন। সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দিতে পারতেন। কিন্তু ক্ষমতাহীন হওয়ায় তাঁরা কিছুই করতে পারেননি। বরং সিএবি যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাসের তর্জন-গর্জন আর ‘কুকীর্তি’ নীরবে মেনে নিতে হয়েছে। শেষে এক আম্পায়ারকে মাঠ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। যেহেতু তিনি আর চোখের সামনে ক্রিকেটের নামে ‘নোংরামি’ মেনে নিতে পারছিলেন না। বলা হচ্ছে, আম্পায়ারদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপদস্থ হতে হচ্ছে দ্বিতীয় ডিভিশনের ম‌্যাচে। যেখানে প্লেয়ারের থেকে অর্থ নেওয়া হয়। আধার কার্ড জালিয়াতি করে বাইরের প্লেয়ারকে ‘ঘরের’ বানিয়ে খেলানো চলে। ম‌্যাচ জেতার অভিলাষে সেখানে আম্পায়ারকে অকথ‌্য গালিগালাজ থেকে শুরু করে প্রাণনাশের হুমকি- সব দেওয়া হয়।

প্রিমিয়ার বা প্রথম ডিভিশনে অতটা হয় না। দেবব্রত দাসের টাউনের মতো কতিপয় কিছু ক্লাবকে বাদ দিলে। কোনও কোনও আম্পায়ার দুঃখ করে বলছিলেন, কিউরেটরদের অপদার্থতা ঢাকতে তাঁদের মাঠে গিয়ে খেলানোর বদলে মাঠ ‘রেডি’ করার উদাহরণও রয়েছে। বলা হল, সিএবি প্রেসিডেন্টের নির্দেশিকা উপেক্ষা করে নাকি খেলার আগের দিন সন্ধেয় মাঠে অতিরিক্ত জল দিয়ে রাখছেন কিউরেটররা। ফলে পরের দিন নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু করা যাচ্ছে না। পিচ ভেজা থাকছে। অথচ সেই ভেজা পিচেই পরের দিন ক্লাব কর্তারা ম‌্যাচ শুরু করার চাপ দিচ্ছেন। আম্পায়ার খেলা শুরু করতে রাজি না হলে বলা হচ্ছে, পিচের ছবি তুলে প্রেসিডেন্টকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে! বলা হবে, আম্পায়ার ইচ্ছে করে খেলা শুরু করছে না! কাতর ভাবে এঁরা বলছেন, আর কত দিন হাজার-দু’হাজার টাকার জন‌্য এ জিনিস সহ‌্য করতে হবে তাঁদের? এঁরা বলছেন, কবে তাঁদের হাতে আসবে ন‌্যূনতম ক্ষমতা?

[আরও পড়ুন: প্রার্থী বাছাইতে তৃণমূল-বিজেপির ‘ডিল’! ফের বিস্ফোরক অনুপম, অস্বস্তিতে পদ্মশিবির]

প্রশ্ন একটাই। সিএবি- তারা এ অভিযোগ শুনবে? কানে যাবে এ আর্তনাদ?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement