ছবি: সোশাল মিডিয়া
লখনউ সুপার জায়ান্টস: ১৬১/৭ (রাহুল ৩৯, পুরান ৪৫, মিচেল স্টার্ক ২৮/৩)
কলকাতা নাইট রাইডার্স : ১৬২/২ (সল্ট* ৮৯, শ্রেয়স* ৩৮, মহসিন খান ২৯/২)
৮ উইকেটে জয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্স।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১ বৈশাখ। হালখাতা আর মিষ্টিমুখে নববর্ষ উপযাপনে মেতে উঠেছে বাঙালি। চিরাচরিত বাঙালিয়ানার উৎসবে সামিল হওয়ার এমন সুযোগ কি ছাড়তে পারে ইডেন গার্ডেন্স (Eden Gardens)? খোদ নাইট মালিক যে এদিন উপস্থিত ছিলেন লখনউয়ের (LSG) বিরুদ্ধে ম্যাচে। কিং খানের সামনেই রাজকীয় পারফরম্যান্সে ম্যাচ জিতে নিল কলকাতা। নিয়ন্ত্রিত বোলিং আর ব্যাটে ফিল্ট সল্টের কালবৈশাখী ঝড়ে কেএল রাহুলের দলকে তারা হারাল ৮ উইকেটে।
এর আগে আইপিএলে (IPL) লখনউকে কখনই হারাতে পারেনি নাইটরা। ৩টি সাক্ষাতের প্রতিটিই হেরেছে। গত মরশুমে প্লে অফে উঠতে হলে শেষ ম্যাচে লখনউয়ের বিরুদ্ধে জিততেই হত রাসেলদের। কিন্তু মাত্র ১ রানে হেরে যায় তারা। সেই সমস্ত হিসেব নিকেশ মেলানোর জন্য বোধহয় পয়লা বৈশাখের দিনটাই বেছে নিয়েছিল নাইটরা। টসও জিতলেন শ্রেয়স আইয়ার। ইডেনে রাতের দিকে শিশিরের আশঙ্কা থাকে। স্বাভাবিক ভাবে লখনউকে আগে ব্যাট করতে পাঠালেন নাইট অধিনায়ক। আর প্রথম থেকেই তীব্র বোলিং আক্রমণে চাপে পড়ে গেলেন রাহুলরা। দ্রুত ফিরে গেলেন ডি কক (১০) আর দীপক হুডা (৮)। আগের ম্যাচে লখনউয়ের নায়ক আয়ুষ বাদোনিও (২৯) বেশি রান করতে পারলেন না। কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক রাহুল। (৩৯) কিন্তু তিনিও রানের গতি বাড়াতে পারলেন না। শেষ দিকে নিকোলাস পুরানের (৪৫) ঝোড়ো ইনিংস না থাকলে ১৫০ রানের গণ্ডিও পেরনো হত না।
নববর্ষের দিনে যেন ‘কল্পতরু’ হয়ে উঠলেন মিচেল স্টার্ক (২৮/৩)। ২৫ কোটির ক্রিকেটারের ফর্ম নিয়ে নানা মন্তব্য ধেয়ে এসেছে। এমনকী তাঁকে বসিয়ে দেওয়ার দাবিও উঠেছিল। কিন্তু মেন্টর গম্ভীরের মগজাস্ত্রে অন্যরকম পরিকল্পনা ছিল। সঠিক দিনে, সঠিক সময়ে জ্বলে উঠলেন স্টার্ক। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা পুরানকে ফেরালেন। দুর্ধর্ষ ডেলিভারিতে বোল্ড করলেন আর্শাদ খানকে। শাহরুখ খানও উঠে দাঁড়ালেন দলের সবচেয়ে দামী বোলারের প্রশংসায়। শেষ পর্যন্ত লখনউ থামল ১৬১ রানে।
টি-টোয়েন্টির দুনিয়ায় এই রান এমন কিছু বড় নয়। তার উপর কেকেআরের ইনিংসে প্রথম ওভারেই উঠল ২২ রান। মাস দুয়েক আগেই গাব্বায় অস্ট্রেলিয়ার অহংকার ভেঙে দিয়েছিলেন সামার জোসেফ। হাতে দুরন্ত গতি আছে, সুইং আছে। কিন্তু একের পর এক নো আর ওয়াইড বলে বড্ড খরুচে হয়ে পড়লেন তিনি। কপাল আর দলের ফিল্ডাররাও সঙ্গ দিল না। তাঁর বলেই দুবার ক্যাচ পড়ল ফিল্ট সল্টের। কাটা ঘায়ের নুনের ছিটে দিয়ে ৪৭ বলে ৮৯ রান করে গেলেন তিনি। সুনীল নারিন (৬), অঙ্গকৃষ রঘুবংশীরা (৭) ব্যর্থ হলেও অসুবিধা হয়নি। চেনা ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন শ্রেয়সও (৩৮)। লখনউয়ের বোলিংয়ে ময়ঙ্ক যাদবের অভাব বার বার বোঝা গেল। লাইন-লেংথ হারিয়ে কলকাতার সুবিধাই করে দিলেন যশ ঠাকুররা। সল্টের কালবৈশাখী ঝড়ে ৮ উইকেটে রাহুলদের সহজেই হারাল নাইটরা।
লখনউ এদিন মাঠে নেমেছিল সবুজ-মেরুন জার্সি পরে। কিন্তু ইডেনের আবেগ কোন দিকে তা প্রমাণ করে দিলেন নাইট সমর্থকরা। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে জ্বলে উঠল ফ্ল্যাশলাইটের আলো। বিন্দু-বিন্দু আলোতেই মোহময়ী রূপে ধরা দিল পয়লা বৈশাখের ইডেন। সঙ্গে তো কিং খানের নিজস্ব দ্যুতি ছিলই। আইপিএলে প্রথমবার লখনউয়ের বিরুদ্ধে জিতে তৈরি করলেন নতুন ইতিহাস। পুরনো দলের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতলেন গম্ভীরও। নববর্ষের সন্ধ্যার হালখাতায় ২ পয়েন্ট জমা করেই মাঠ ছাড়ল নাইটরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.