Advertisement
Advertisement

Breaking News

Exclusive: শোক নয়, আমি লতাজির জীবন উদযাপন করতে চাই: কপিল দেব

'আমাকে পাপাজি বলে ডাকতেন লতাজি।'

Kapil Dev shares his experience on late Lata Mangeshkar | Sangbad Pratidin
Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:February 6, 2022 2:03 pm
  • Updated:February 7, 2022 11:57 am  

তাঁকে পাপাজি বলে ডাকতেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। আজ তাঁর প্রয়াণের খবরে গোটা দেশ শোকে মূহ্যমান। কিন্তু ১৯৮৩-র বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিলদেব নিখাঞ্জ দুঃখ নয়, শোক নয়, লতা মঙ্গেশকরের জীবনকে সেলিব্রেট করতে চান। লতা মঙ্গেশকরের অবিশ্বাস্য প্রতিভা অসংখ্য মানুষের প্রাণে খুশির তুফান তুলেছে। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে সেই বিরল প্রতিভার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন কপিল।  

কিছুক্ষণ আগেই হৃদয়বিদারক খবরটা পেলাম। অনেকেই আজ তাঁদের অনুভূতির কথা বলছেন। আমার হৃদয়েও ভিড় করে রয়েছে অনেক স্মৃতি। সেগুলো খুব মনে পড়ছে। লতাজি (Lata Mangeshkar) অপূর্ব এক ব্যক্তিত্ব। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই। তবে শোক নয়, আমি তাঁর জীবনকে উদযাপন করতে চাই। দেখতে চাই আমাদের কী দিয়ে গেল এই মহাজীবন। কোন পথের দিশা দিয়ে গেলেন। আমি এভাবেই দেখছি। এভাবেই বিষয়টা নিয়ে ভাবছি।

Advertisement

শুধুমাত্র সফল এক জীবন মাত্র নয়। বরং লতাজি জীবনভর অনেককে জীবন দিয়ে গিয়েছেন। তাঁর দুরন্ত প্রতিভা দিয়ে কোটি কোটি মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে গিয়েছেন। আমাদের কাছে জীবন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীতে আসার পরে অন্যের মুখে হাসি ফোটাচ্ছ তুমি, এটাই তো সবচেয়ে অপূর্ব! লতাজি সেই কাজটাই করে গিয়েছেন সারাজীবনে।

ক্রিকেট ভালবাসতেন লতাজি। ১৯৮৩ সালে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (BCCI) ভাঁড়ারে সেরকম অর্থ ছিল না। আমি খুব বেশি কিছু বলতে চাই না এই পরিসরে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরার পরে ভারতীয় ক্রিকেটারদের সংবর্ধনার জন্য রাজ ভাই উদ্যোগ নিয়ে একটি কনসার্টের আয়োজন করেছিলেন। তিনি শরণাপন্ন হয়েছিলেন লতাজির। প্লেয়ারদের জন্য সেই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। বোর্ডের উদ্দেশ্য ছিল, অনুষ্ঠান থেকে যে টাকা উঠবে তা দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হবে ভারতীয় ক্রিকেট টিমকে। ভারতীয় ক্রিকেট দলকে স্মরণীয় এক সন্ধ্যা উপহার দিয়েছিলেন লতাজি। ক্রিকেটের প্রতি নিবিড় ভালবাসা ছিল তাঁর। লন্ডনে একাধিকবার দেখাও হয়েছিল ওঁর সঙ্গে। লন্ডনে অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি টেস্ট ম্যাচে উপস্থিত থেকেছেন তিনি। 

[আরও পড়ুন: ইতিহাসের পাতায় যশ ধূলরা, ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত]

লতাজি আমার খেলার অনুরাগী ছিলেন কিনা, তা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ওঁর মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে বিশেষ কিছু বলার থাকে না। মন্ত্রমুগ্ধের মতো কেবল শুনেই যেতে হয়। খুব মিষ্টভাষী ছিলেন লতাজি। মিতভাষী। আমাকে পাপাজি বলে ডাকতেন। লতাজির ধারণা হয়েছিল সব পাঞ্জাবি মানেই পাপাজি। ভ্রাতৃসম।ওই কারণেই হয়তো আমাকে পাপাজি বলে ডাকতেন। আমার খুব অস্বস্তি হত। লতাজির সঙ্গে এটাই আমার সব থেকে বড় স্মৃতি বলা যেতে পারে। সারাজীবনে অসংখ্য গান গেয়েছেন। তার মধ্যে থেকে কোনও একটা বিশেষ গানকে বেছে নেওয়া রীতিমতো কঠিন ব্যাপার। ওঁর কণ্ঠ আমার মতো অনেকের কাছেই ভাললাগার, ভালবাসার। গান দিয়ে সম্মোহিত করে রাখতেন। কণ্ঠের জাদুতে মোহিত হত সবাই।

দেশের প্রতি তাঁর অবদান, সেটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। লতাজি আমাদের দেশের কণ্ঠ। ২০ বছর বয়সি হন বা ৭০ বছর, তাঁর কণ্ঠস্বর সবসময়ে একইরকম শুনিয়েছে। কণ্ঠস্বর অপরিবর্তিত থেকে গিয়েছে। তাঁর সুরেলা কণ্ঠ গোটা একটা দেশকে বেঁধে রেখেছিল। কুর্নিশ জানাই তাঁর শৃঙ্খলাবোধ, পেশার প্রতি ভালবাসা, দায়বদ্ধতা, নিষ্ঠাকে। ঈশ্বরপ্রদত্ত সেই কণ্ঠস্বরকে শ্রদ্ধা না করে আমি পারি না। ১৫-১৬ বছর বয়সি আর ৭০ বছর বয়সির কণ্ঠস্বর কখনওই এক হতে পারে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কণ্ঠস্বরেরও পরিবর্তন হয়। কিন্তু লতাজি ব্যতিক্রম। তাঁর কণ্ঠস্বর চিরকাল একই রকম থেকে গিয়েছে। অল্প বয়সি লতাজির কণ্ঠে ব্যথা, বেদনা, ভালবাসা, অনুরাগ যেভাবে খেলা করেছে, বেশি বয়সেও ঠিক একই রকম শুনিয়েছে সেগুলো। পার্থক্য বোঝা যায়নি কখনও।বিরল এক ক্ষমতার অধিকারী লতা মঙ্গেশকর।

কাজের প্রতি শৃঙ্খলা, অধ্যবসায় লতাজির থেকেই শিক্ষণীয়। শ্রদ্ধেয় এই শিল্পী যখন সুর ধরতেন, তখন তাঁর গলায় এক অসম্ভব শক্তি খেলা করত। নিজের পেশার প্রতি চিরকাল বেনজির দায়বদ্ধতা দেখিয়েছেন লতাজি। 

 

[আরও পড়ুন: ওয়ানডে-তে রেকর্ডের হাতছানি, শচীন-সৌরভের এলিট ক্লাবে ঢুকে পড়তে পারেন রোহিত-কোহলি]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement