সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই ইংল্যান্ডের (England) মহিলা দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারের সূর্যোদয় হয়েছিল ঝুলন গোস্বামীর (Jhulan Goswami)। তখন ছিল ২০০২ সাল। তার পরে গঙ্গা দিয়ে গড়িয়ে গিয়েছে অনেক জল। কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ২০ বছর। শনিবার লর্ডসের সবুজ ঘাসের মাঠেই সূর্যাস্ত হতে চলেছে ঝুলন গোস্বামীর বর্ণময় ক্রিকেট কেরিয়ার। এই দীর্ঘ ২০ বছরে ঝুলন গোস্বামী একাধিক রেকর্ড গড়েছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীও তিনি। সেই চাকদহ এক্সপ্রেস লর্ডসের মাঠে জুতো জোড়া তুলে রাখার আগে বলছেন, ”আমি দেশের হয়ে দুটো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছি। কিন্তু একবারও ট্রফি জিততে পারিনি। এটাই আমার আক্ষেপের জায়গা। প্রত্যেক ক্রিকেটারই বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হয় চার বছর ধরে। কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। বিশ্বকাপ জয় যে কোনও ক্রিকেটারের কাছেই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ব্যাপার।” সেই স্বপ্ন সত্যি হয়নি ঝুলনের।
২০০৫ ও ২০১৭ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেছিল ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল। দু’ বারই বিশ্বকাপের ফাইনালে (World Cup Final) দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন ঝুলন। কিন্তু একবারও বিশ্বকাপ জিততে পারেননি তিনি। শেষ ম্যাচের আগে সেই আক্ষেপের কথাই জানিয়েছেন ঝুলন।
ওয়ানডেতে ২০৩টি ম্যাচে ২৫৩ টি উইকেট দখল করেছেন বাংলার পেসার। ঝুলন বলছেন, ”যখন আমি কেরিয়ার শুরু করি তখন ভাবিনি এত দীর্ঘ সময় ধরে খেলব। দারুণ এক অভিজ্ঞতা। এই খেলাটার সঙ্গে আমি যুক্ত। নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি। চাকদহের মতো ছোট্ট জায়গা থেকে উঠে এসেছি। মহিলাদের ক্রিকেট সম্পর্কে সেই সময়ে আমার কোনও ধারণাই ছিল না।”
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ভারত ২-০ এগিয়ে রয়েছে। শনিবার শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন ঝুলন। এই ম্যাচের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল। শনিবার ফোরাম মলের আইনক্সে লাইভ স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে ঝুলনের খেলা উপভোগ করতে পারবেন ভক্তরা। এর জন্য অবশ্য টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়নি।
জীবনের শেষ ম্যাচে নামার আগে নিজের না পাওয়া মুহূর্তের কথা যেমন স্মরণ করেছেন ঝুলন, তেমনই জীবনের স্মরণীয় মুহূর্তের উল্লেখও করেছেন চাকদহ এক্সপ্রেস। তিনি বলেছেন, ”ভারতের টুপি যেদিন প্রথম পেলাম এবং দেশের হয়ে প্রথম ওভার বল করলাম সেটাই আমার স্মরণীয় মুহূর্ত। আমি দেশের হয়ে খেলব কোনওদিনই ভাবিনি।” তাঁর এই ক্রিকেট পরিক্রমা মোটেও সহজ ছিল না। ট্রেনিংয়ের জন্য রোজ সকালে প্রায় আড়াই ঘণ্টার ট্রেন যাত্রা করতে হত তাঁকে।
১৯৯৭ সালে মহিলাদের বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইডেন গার্ডেন্সে। সেবারের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। সেই ফাইনালের প্রসঙ্গে ঝুলন বলেন, ”১৯৯৭ সালে ইডেন গার্ডেন্সে আমি বল গার্ল ছিলাম। মহিলাদের বিশ্বকাপ ফাইনাল সেবারই প্রথম দেখেছিলাম। সেদিন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম, একদিন দেশের হয়ে খেলব।” দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন সফল হয়েছে ঝুলন গোস্বামীর। শনিবার ঐতিহ্যের লর্ডসে শেষ ম্যাচ খেলতে নামছেন চাকদহ এক্সপ্রেস। গোটা দেশ তাকিয়ে তাঁর দিকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.