ফাইল ছবি
অভিজ্ঞান সাহা: একজনের কার্যকাল শেষ জুনে। আর একজনের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে। তারপর কুলিং অফে গিয়ে দু’জনেই বিশ্রামে। ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ থাকবে না। তাই কুলিং অফ আটকাতে লকডাউনের অনেক আগে শীর্ষ আদালতকে বিসিসিআই জানিয়েছিল, ব্যাপারটি যেন নতুন করে বিবেচনা করা হয়। ‘কুলিং অফ’ তুলে দিয়ে তাঁদের কার্যকাল লম্বা করা হোক। এটা না করলে ভারতীয় ক্রিকেটর প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়বে। তখন দেশের ক্রিকেটের হাল ধরবেন কে?
ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের আরজি শোনার সুযোগ এতদিন হয়নি শীর্ষ আদালতের। জানুয়ারি থেকে আদালতে বেশ কয়েকটা শুনানির দিন এসেও পিছিয়ে গিয়েছে। লকডাউনে দেশ যখন প্রায় স্তব্ধ, তখন এ নিয়ে কথা বলারও কেউ নেই। তা হলে! এবার কী হবে? লকডাউন কবে উঠবে, সে ছবি সামনে নেই। তাই বিসিসিআই (BCCI) বাধ্য হয়ে ই-মেল করে শীর্ষ আদালতের কাছে নতুন করে সময় চাইল। বোর্ড এখন কথা না বললে কী করে ধরে রাখা যাবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) ও জয় শাহকে (Jay Shah)।
নিয়ম মানলে জুনে সরতে হবে বোর্ড সচিব জয় শাহকে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে বোর্ড সুপ্রিমো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। আর এম লোধা কমিশনের নতুন নিয়মে বলা হয়েছিল রাজ্য সংস্থা বা বিসিসিআইয়ে কেউ যদি টানা ছ’বছর কোনও পদে থাকেন, তা হলে তাঁকে কুলিং অফে যেতে হবে। গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব পদে জয় শাহ আসেন ২০১৩ সালে। বোর্ডে আসার আগে তিনি সেই অ্যাসোসিয়েশনেই ছিলেন। সৌরভও সিএবিতে প্রথমে সচিব, পরে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে। গত বছর বোর্ড নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট এবং সচিব পদে দু’জনে নির্বাচিত হয়ে আসেন। সৌরভ বা শাহরা জানতেন, লোধা কমিশনের নতুন আইন মানতে হলে বেশিদিন চেয়ারে থাকা যাবে না। শুধু তাঁরা কেন, বোর্ডে সৌরভের টিমও জানত। তাই ডিসেম্বরে বোর্ডের এজিএমে সবাই মিলে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে তাঁদের দল যেন টানা ছ’বছর দায়িত্বে থাকে। প্রয়োজনে কুলিং অফ তোলার আবেদন করা হবে আদালতে।
তারপরই শীর্ষ আদালতে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার কোনও উত্তর মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে বোর্ড শীর্ষ আদালতের কাছে নতুন করে সময় চেয়ে ইমেল করল। সময় পেলে শুনানি হবে। তখন তাঁরা সব কথা বলতে পারবেন। বোর্ড কর্তারা মনে করেছেন, এবার হয়তো কিছুটা হলেও সামনে পা ফেলা যাবে। কথা বলার সুযোগ না পেলে পুরো ব্যাপারটি বোঝানো যাবে না। ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থে এটা জরুরী, সেটা তাঁরা তুলে ধরতে চান। আশা করা হচ্ছে, পুরোপুরি না হলেও এক্সটেশন পেয়ে এই কমিটি আগামিদিনে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। তারপর লকডাউন উঠলে নতুন করে কথা হবে।
আর যদি এক্সটেনশন না পাওয়া যায়? তা হলেও মনে হয় না সমস্যায় পড়বে কমিটি। জুলাইয়ে সৌরভের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগে নিয়ম মেনে ৪৫ দিনের মধ্যে এজিএম ডাকতে হবে। দেশের এই অবস্থায় আগস্টেএ সব সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আর নির্বাচন তো ভিডিও কনফারেন্সে হতে পারে না। কেউ একজন প্রতিবাদ করলে সব বাতিল। তাই আদালত কমিটির প্রত্যেককে অ্যাডমিনিস্ট্রার করে রাখতে পারে। সব কিছু স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এভাবে কাজ চলবে। মনে হয় না, এতদূর জল গড়াবে। কুলিং অফ একেবারে না উঠলেও এক্সটেনশন পেতে পারে সৌরভদের কমিটি। তারপর যা হওয়ার হবে। বোর্ডও তাই চাইছে। যেভাবেই হোক, সৌরভ, শাহদের ধরে রাখতে হবে। তারই চেষ্টায় নতুন করে সময় চেয়ে আরজি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.