প্রতীকী ছবি।
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান (IPL 2025 Opening Ceremony) লোকে এতদিন দেখেছে। সমাপ্তি অনুষ্ঠান কাকে বলে, সেটাও এখন সবাই জানে। কিন্তু আইপিএলের সমস্ত বিনোদনী অনুষ্ঠানের খবর লোকে আজ পর্যন্ত দেখেছে না শুনেছে?
না জেনেও উত্তরটা অনায়াসে লিখে দেওয়া যায়। দেখেওনি। শোনেওনি।
আইপিএলের বিগত সতেরো বছরের ইতিহাসে যা কখনও ঘটেছে বলে জানা যায়নি, টুর্নামেন্টের অষ্টাদশ সংস্করণে নাকি ঠিক তাই হচ্ছে। অষ্টাদশ আইপিএল হচ্ছে ভারতবর্ষের তেরোটা মাঠ জুড়ে। এবং বোর্ড সূত্রের খবর, ছোট-বড় মিলিয়ে সেই তেরো মাঠেই তেরোখানা ‘উদ্বোধনী’ অনুষ্ঠান করার কথা ভাবা হচ্ছে!
পরিষ্কার করে একটা কথা বলা যাক। অষ্টাদশ আইপিএলের সরকারি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান একটাই। যা হচ্ছে কলকাতায়। আগামী শনিবারের ইডেন গার্ডেন্সে। আরসিবি বনাম কেকেআর যুদ্ধের আগে। কিন্তু বোর্ড নাকি এবার ঠিক করেছে যে, আইপিএলের বিনোদনী উপকরণকে শুধুমাত্র উদ্বোধনেই আবদ্ধ রাখা হবে না। বরং তার আরও বিস্তার ঘটানো হবে। দর্শকদের সঙ্গে আরও যোগাযোগ বাড়ানো হবে। বাড়ানো হবে তাঁদের আগ্রহ।
ঠিক কী হচ্ছে?
আইপিএলে নামবে দশটা টিম। কিন্তু খেলা হবে তেরোটা মাঠে। কারণ, এবার তিনটে ফ্র্যাঞ্চাইজি দেশের দু’টো করে মাঠকে ‘হোম গ্রাউন্ড’ বানিয়ে খেলছে। তারা যথাক্রমে রাজস্থান রয়্যালস। পাঞ্জাব কিংস। এবং দিল্লি ক্যাপিটালস। জয়পুরের সোয়াই মান সিং স্টেডিয়াম ছাড়াও রাজস্থান রয়্যালস এবার গোটা কয়েক ম্যাচ খেলবে গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে। দিল্লি ক্যাপিটালস যেমন আবার অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম ছাড়াও নিজেদের কিছু ম্যাচ খেলছে বিশাখাপত্তনমে। পাঞ্জাব কিংসেরও দু’খানা ঘরের মঠ। মূলনপুর এবং হিমাচলপ্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। বাকি সাতটা টিমের ঘরের মাঠ একটাই থাকছে। অর্থাৎ, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, কেকেআর, চেন্নাই সুপার কিংস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, গুজরাত টাইটান্স, লখনউ সুপার জায়ান্টসের ‘হোম গ্রাউন্ড’ একাধিক হচ্ছে না। তা. ওয়াকিবহাল মহলের কেউ কেউ সোমবার বলছিলেন যে, এবারের আইপিএলের প্রত্যেকটা
মাঠে একটা করে বিনোদনী অনুষ্ঠান আয়োজনের ভাবনাচিন্তা চলছে। একদিক থেকে যে অনুষ্ঠানকে সে সমস্ত মাঠের ‘উদ্বোধনী’ অনুষ্ঠান লিখলে অতিশয়োক্তি হয় না। কারণ, এই অনুষ্ঠান হবে দেশের প্রতিটা আইপিএল কেন্দ্রের প্রথম ম্যাচে। অর্থৎ তেরোটা মাঠে তেরোটা!
আপাতত যেটুকু খবর, তাতে সরকারি উদ্বোধন (জৌলুস সবচেয়ে বেশি থাকবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেরই) বাদে বাকি অনুষ্ঠানগুলো ইনিংস বিরতির সময় করার ভাবনাচিন্তা করা চলছে। পারফরম্যান্সের জন্য সর্বত্র বলিউড তারকাদেরই আনার কথাবার্তা চলছে। কোথাও হয়তো মহাতারকা গায়ক যাবেন। কোথাও হয়তো গিয়ে নায়ক-নায়িকারা পারফর্ম করবেন। তবে শোনা যাচ্ছে, কোনও কেন্দ্রেই দু’তিন জনের বেশি তারকাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। কলকাতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকবেন জনা তিনেক বলিউড চরিত্র। থাকবেন সমস্ত বোর্ড কর্তা। আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ থাকবেন বলেও শোনা গেল। আর হ্যাঁ, এবার থেকে এটাই ট্রেন্ড হয়ে যাবে। পরের আইপিএল থেকে প্রতিটা কেন্দ্রের প্রথম ম্যাচে ছোট-বড় বিনোদনী অনুষ্ঠান থাকবে।
অতঃকিম?
কী আর, সিটবেল্ট বাঁধুন, সিটবেল্ট। অষ্টাদশ আইপিএল শুধু মাত্র ক্রিকেটীয় আনন্দের অফুরান জোগান দেবে না। শুধুমাত্র মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা মঞ্চের দখল নেবেন না। ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকবেন বিনোদন জগতের লোকজনও। সব ঠিকঠাক চললে, তাঁরাও বিরতিতে নেমে পড়বেন, পারফর্ম করবেন। যার অর্থ, এক টিকিটে দুই উৎসবের আস্বাদ মাঠে বসে নিতে পারবে আইপিএল বুভুক্ষু জনতা।
ক্রিকেট আর বিনোদন, দুই যৌথ উৎসবের!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.