রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স: ২০৭-৪ (পাতিদার ১১২*, কার্তিক ৩৭*)
লখনউ সুপারজায়ান্টস: ১৯৩-৬ (রাহুল ৭৯, দীপক হুডা ৪৫)
আরসিবি ১৪ রানে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) ‘বিরাট যুদ্ধে’ জিতল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। লখনউ (LSG) ও ব্যাঙ্গালোরের (RCB) লড়াইটা তো সত্যি সত্যিই ছিল বিরাট য়ুদ্ধ। প্রথমে ব্যাট করে আরসিবি করেছিল ২০৭ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে লোকেশ রাহুল অ্যান্ড কোং একসময়ে নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। লখনউ অধিনায়ক লোকেশ রাহুল একা কুম্ভ রক্ষা করছিলেন একটা সময়ে। তিনি ক্রিজে টিকে থাকলেই ম্যাচ জিতে যেতে পারে লখনউ, এমন একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিরাট কোহলির জন্য অন্য কোনও চিত্রনাট্য লিখে রেখেছিলেন ক্রিকেট দেবতা। তাই মোক্ষম সময়ে লোকেশ রাহুল ৭৯ রান করে ফিরে গেলেন। হ্যাজলউডের পরের বলেই আউট হন ক্রনাল পাণ্ডিয়া। তখনই দেওয়াল লিখন পড়ে ফেলেন সবাই। ম্যাচ যাচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর সাজঘরে। শেষ পর্যন্ত লখনউ থামে ৬ উইকেটে ১৯৩ রানে। ১৪ রানে ম্যাচ জিতে ফাইনালের আরও কাছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। রাজস্থান রয়্যালসকে হারাতে পারলেই আইপিএল (IPL 2022) ফাইনালে কোহলির ব্যাঙ্গালোর।
ছিল বিরাট কোহলির মঞ্চ। শহরের সব রাজপথ এসে মিশেছিল প্রাণকেন্দ্র ইডেন গার্ডেন্সে। বিরাট ভক্তরা অপেক্ষায় ছিলেন মহানায়কের ব্যাট থেকে বিধ্বংসী একটা ইনিংস দেখার জন্য। কোহলি শুরুটা করেছিলেন প্রত্যাশা জাগিয়ে। কিন্তু মাত্র ২৫ রানেই থামল বিরাটের ব্যাট। হতাশ ইডেন। হতাশ স্বয়ং কোহলিও। কিন্তু বিরাট মঞ্চে আবির্ভুত হলেন রজত পাতিদার। আইপিএল নিলামে তাঁকে কোনও দলই নেয়নি। লুভনিথ সিসোদিয়া চোপ পাওয়ায় ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আরসিবি নেয় পতিদারকে। তবুও প্রথম থেকেই খেলার সুযোগ তিনি পাননি। ইডেনে এলিমিনেটরে তাঁর ব্যাট জ্বলে ওঠায় বিরাট কোহলির উইকেট হারানোর শোক ভুলে যায় ইডেন। নজির গড়ে রজত পাতিদার ৫৪ বলে ১১২ রানে অপরাজিত থেকে যান। ১২টি চার ও সাতটি ছক্কা হাঁকান তিনি। রজত পাতিদার ও শেষের দিকে দীনেশ কার্তিকের ঝোড়ো ২৩ বলে ৩৭ রানের সুবাদে রানের পাহাড়ে চড়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। ২০ ওভারে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর করে ৪ উইকেটে ২০৭ রান।
বুধবারের প্লে অফে টস জেতে লখনউ সুপার জায়ান্টস। আরসিবি-কে ব্যাট করতে পাঠান লখনউয়ের ক্যাপ্টেন লোকেশ রাহুল। প্রথম ওভারেই মহসিন খান ফিরিয়ে দেন আরসিবি অধিনায়ক ফ্যাফ দু’ প্লেসিসকে। কোহলিকে দেখে মনে হচ্ছিল বড় রান করবেন তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলাপি বল টেস্টে এই ইডেনেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন কোহলি। তার পর থেকে তাঁর ব্যাটে আর শতরান নেই। ‘গেল গেল’ রব উঠেছে ক্রিকেটবিশ্বে। বিরাট অনুরাগীরা হাহুতাশ করেছেন। বিরাট কি নিজেও একসময়ে হতাশ হননি! ইডেন গার্ডেন্সই ছিল সেই মঞ্চ যেখানে কোহলির গাণ্ডীব নিয়ন্ত্রণ করতে পারত গোটা ম্যাচ। কিন্তু আবেশ খানকে মারতে গিয়ে ধরা পড়লেন মহসিনের হাতে। ক্ষুব্ধ বিরাট মাথা নাড়াতে নাড়াতে মাঠ ছাড়েন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৯) ও মাহিপাল (১৪) বেশি রান করতে পারেননি। তাতেও অবশ্য রান তুলতে সমস্যা হয়নি আরসিবি-র। রজত পাতিদার অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন। লখনউ বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেন তিনি। অন্যদিকে দীনেশ কার্তিকও যথেচ্ছ মারেন। ইডেন তো তাঁরও চেনা মাঠ।
.@RCBTweets seal a spot in the #TATAIPL 2022 Qualifier 2! 👏 👏@faf1307 & Co. beat #LSG by 14 runs in the high-scoring Eliminator at the Eden Gardens, Kolkata. 👍 👍
Scorecard ▶️ https://t.co/cOuFDWIUmk #TATAIPL | #LSGvRCB pic.twitter.com/mOqY5xggUT
— IndianPremierLeague (@IPL) May 25, 2022
আরসিবির এই রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে শুরুতেই আউট হন কুইন্টন ডি কক (৬)। মনন ভোরাও (১৯) দ্রুত আউট হন। লখনউয়ের ইনিংস গোছানোর কাজ শুরু করেন লোকেশ রাহুল ও দীপক হুডা। দু’ জনে ৯৬ রান জোড়েন। হাসারাঙ্গাকে গ্যালারিতে ফেলতে গিয়ে গুগলিতে ঠকে যান দীপক হুডা (৪৫)। অবশ্য ততক্ষণে আস্কিং রেট বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। চাপ অনুভব করতে শুরু করেছে লখনউ। জিততে হলে বলের থেকে রান সংখ্যা অনেক বেশি। সুতরাং বাউন্ডারি আর ওভার বাউন্ডারির উপর নির্ভরশীল হওয়াটাই স্বাভাবিক। মারতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনেন দীপক। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল পালটা মারের খেলা শুরু করেন। মার্কাস স্টোয়নিস মোক্ষম সময়ে ফিরে যান। তাতে লোকেশ রাহুলের কাজটা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু তিনি অধিনায়কের মতোই খেলছিলেন। ব্যক্তিগত ৭৯ রানে তিনি আউট না হলে কী হত বলা কঠিন। রাহুল ফিরতেই আরসিবি ম্যাচের রাশ নিয়ে নেয় নিজেদের হাতে। শেষ ওভারে লখনউয়ের জেতার জন্য দরকার ছিল ২৪ রান। তা আর পারেনি লোকেশ রাহুলের দল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.