চেন্নাই সুপার কিংস: ২০ ওভারে ২১৮/৪ (রায়ডু ৭২*, মঈন ৫৮, পোলার্ড ২/১২)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ২০ ওভারে ২১৯/৬ (পোলার্ড ৮৭*, কুইন্টন ৩৮, স্যাম কুরান ৩/৩৪)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স চার উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ক্ল্যাশ অব টাইটানস’। শনিবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (Mumbai Indians) বনাম চেন্নাই সুপার কিংস (Chennai Super Kings) ম্যাচকে এই আখ্যাই দেওয়া হচ্ছিল। আর হবে নাই বা কেন? দুই ইনিংস মিলিয়ে উঠল চারশোরও বেশি রান। দুই দলের ব্যাটসম্যানরা মারলেন ৩০টি ছয়। একদিকে আম্বাতি রায়ডুর ২৭ বলে ৭২ রানের সৌজন্যে চেন্নাই পেরল ২০০-র গণ্ডি। অন্যদিকে, কায়রন পোলার্ডের পালটা মারে ২১৯ রান তাড়া করতে গিয়ে একেবারে শেষ বলে জয় পেল মুম্বই। ক্যারিবিয়ান তারকা করলেন মাত্র ৩৪ বলে ৮৭ রান।
এদিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। আর শুরুতেই হায়দরাবাদ ম্যাচের নায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াডের (৪) উইকেট তুলে নেন মুম্বইয়ের ট্রেন্ট বোল্ট। কিন্তু এরপর ফাফ ডু’প্লেসি এবং মঈন আলির জুটিতে ভর করে ম্যাচে ফেরে চেন্নাই। দু’জনেই অর্ধ-শতরান পূর্ণ করার পাশাপাশি দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে দ্রুত ১০৮ রানও যোগ করেন। তবে মাত্র ৩৬ বলে ৫৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে আউট হন মঈন। মারেন পাঁচটি চার ও পাঁচটি ছয়। এরপরই তড়িঘড়ি আরও দুটি উইকেট পড়ে যায় চেন্নাইয়ের। কায়রন পোলার্ডের প্রথম ওভারের পরপর দু’বলে আউট হয়ে যান ফাফ ডু’প্লেসি এবং সুরেশ রায়না। যদিও ডু’প্লেসিও এদিন মারমুখী মেজাজে ছিলেন। করেন মাত্র ২৮ বলে ৫০ রান। যার মধ্যে ছিল ২টি চার ও চারটি ছয়।
এই সময় অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন চেন্নাইয়ের রান হয়তো ২০০ রানের গণ্ডি পেরতে পারবে না। কারণ তখনও হয়তো কেউ আম্বাতি রায়ডু নামে ঝড়ের আসার পূর্বাভাস পাননি। তবে ঝড় বললেও হয়তো রায়ডুর এদিনের ইনিংসকে কম বলা হবে। কারণ মাত্র ২৭ বলে ৭২ রান করলেন তিনি। মারলেন ৪টি চার ও সাতটি ছয়। মুম্বইয়ের কোনও বোলারই কার্যত তাঁর হাত থেকে রেহাই পাননি। ২২ বলে ২২ রান করে শেষপর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজাও। আর শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষে চেন্নাইয়ের রান দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ২১৮। এদিন পোলার্ড বাদে কোনও মুম্বই বোলারই তেমন দাগ কাটতে পারেননি। এমনকী জসপ্রীত বুমরাহর মতো বোলারও চার ওভারে ৫৬ রান দিয়ে বসলেন।
২১৯ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শুরুটা অবশ্য বেশ ভালই হয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। রোহিত শর্মা এবং কুইন্টন ডি’কক জুটি ওপেনিং জুটিতেই যোগ করেন ৭১ রান। এরপর অবশ্য মাত্র ১০ রানের ব্যবধানে তিনটি উইকেট হারায় মুম্বই। আউট হন দুই ওপেনার রোহিত, ডি’কক এবং তিন নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদব (৩)। রোহিত করেন ৩৫ এবং কুইন্টনের সংগ্রহ ৩৮ রান। কিন্তু এই সময় পরিত্রাতা হয়ে দেখা দেন মুম্বইয়ের ক্যারিবিয়ান তারকা কায়রন পোলার্ড। চেন্নাইয়ের হয়ে যেই ইনিংসটি খেলেছিলেন আম্বাতি রায়াডু। পালটা সেরকমই মারকাটারি ইনিংস খেলতে দেখা গেল পোলার্ডকে। যা একেবারে ম্যাচের শেষলগ্ন পর্যন্ত চলল।
প্রথমে ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার সঙ্গে জুটি বাঁধেন পোলার্ড। ওই জুটিতে যোগ হয় ৮৯ রান। তাও আবার সাত ওভারেরও কম বলে। ক্রুণাল ২৩ বলে ৩২ রান করে আউট হন। তারপর হার্দিক এসে কিছুক্ষণ পোলার্ডকে সঙ্গ দেন। কিন্তু ৭ বলে ১৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেই আউট হয়ে যান হার্দিক। এই সময় আউট হতে পারতেন পোলার্ডও। তাঁর ব্যক্তিগত ৬৮ রানের মাথায় জীবনদান পান ক্যারিবিয়ান তারকা। সহজ ক্যাচটি ছাড়েন ফাফ ডু’প্লেসির মতো ফিল্ডার। তবে শুধু ক্যাচ নয়, বলতে গেলে ম্যাচও ছেড়ে দেন তিনি।
এদিকে, ম্যাচে শেষ ছ’বলে জয়ের জন্য মুম্বইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। আর প্রথম বলে কোনও রান না এলেও পরবর্তীতে সেই পোলার্ড একটি ছয় এবং একটি চার মেরে মুম্বইকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। এরপর শেষ বলে দু’রান বাকি থাকলেও সহজেই দু’রান নিয়ে দলকে গুরুত্বপূর্ণ জয়ও এনে দেন। আর নিজে দিনের শেষে অপরাজিত থাকেন ৮৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে। তাও মাত্র ৩৪ বলে। মারেন ৬টি চার এবং ৮টি বিশাল ছয়। মূলত তাঁর ব্যাটে ভর করেই আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের নজিরও গড়ল মুম্বই।
এদিকে, এদিনই আবার করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন মুম্বইয়ের দুই তারকা হার্দিক এবং ক্রুণাল পাণ্ডিয়া। ম্যাচ শুরুর আগে দুই ভাই জানালেন, ২০০টি অক্সিজেন কনসনট্রেটর দান করবেন তাঁরা। দুই ক্রিকেটারের এই পদক্ষেপকে ইতিমধ্যে কুর্নিশও জানিয়েছেন নেটিজেন থেকে শুরু করে ক্রিকেটভক্তরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.