দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৩৫/৫ (শিখর ধাওয়ান ৩৬, শ্রেয়স ৩০*, বরুণ ২/২৬)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৯.৫ ওভারে ১৩৬/৭ (ভেঙ্কটেশ ৫৫, গিল ৪৬, রাবাডা ২/২৩)
কলকাতা নাইট রাইডার্স তিন উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুর্গাপুজো উপলক্ষে উৎসবে মেতে গোটা কলকাতা। আনন্দে মেতেছে প্রত্যেকে। আর মহাষ্টমীর রাতে সেই আনন্দকে আরও দ্বিগুণ করে দিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। শক্তিশালী দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে আইপিএলের ফাইনালে চলে গেল কেকেআর। যেখানে তাঁদের প্রতিপক্ষ চেন্নাই সুপার কিংস। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর দিল্লির ক্যাপিটালসের দেওয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা এক বল বাকি থাকতে তুলে নেয় মর্গ্যানের দল। কিন্তু জয় অবশ্য সহজে আসেনি। কারণ শেষ তিন ওভারে দিল্লির দুরন্ত বোলিং শাহরুখের দলের হাত থেকে ম্যাচ প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন অশ্বিনরা। শেষে এক বল বাকি থাকতে ছয় মেরে দলকে ম্যাচ জেতান রাহুল ত্রিপাঠি।
প্রত্যাবর্তন বললেও কম বলা হয়। এ যেন অকল্পনীয় প্রত্যাবর্তন! আইপিএলের (IPL 2021) আরব আমিরশাহী পর্ব শুরুর আগে কেউ ভাবেওনি যে, প্রথম পর্বের সাত ম্যাচে মাত্র দু’টোয় জেতা কেকেআর (Kolkata Knight Riders) আইপিএল প্লে অফে উঠবে। আর শুধু উঠবে না এলিমিনেটরে বিরাট কোহলির আরসিবির সফর শেষ করে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা দিল্লি ক্যাপিটালসকেও হারিয়ে দেবে। কিন্তু মহাষ্টমীর রাতে সেই ঘটনারই সাক্ষী থাকল সবাই।
এদিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইওন মর্গ্যান। আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন কেকেআর বোলাররা। আর তাই বরুণ চক্রবর্তী, সুনীল নারিন, লকি ফার্গুসনদের উপর এদিনও ভরসা রেখেছিলেন নাইট অধিনায়ক। আর অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দেন নাইট বোলাররাও। শুরুটা কিছুটা ভাল করলেও পৃথ্বীকে (১৮) আউট করে দিল্লিকে প্রথম ধাক্কাটি দেন বরুণ চক্রবর্তী। এরপর ধাওয়ানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মার্কাস স্টোইনিস। কিন্তু দলের ৭১ রানের মাথায় তিনিও আউট হয়ে যান। এরপর দ্রুত ফেরেন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান (৩৬) এবং অধিনায়ক ঋষভ পন্থও। অল্পরানেই আউট হয়ে গেলেও বরুণ নো-বল করায় বেঁচে যান হেটমেয়ার। তিনি এবং শ্রেয়স আইয়ারের (৩০*) সৌজন্যেই শেষপর্যন্ত স্কোরবোর্ডে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান তোলে দিল্লি।
আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে বোলারদের পাশাপাশি দুরন্ত খেলেছেন দুই নাইট ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং শুভমন গিলও। এদিনও যাঁর অন্যথা হল না। শারজার মাটিতে অল্প রানও যেখানে তোলা কঠিন, সেখানে আবারও দুরন্ত শুরু করেন নাইট ওপেনাররা। মারমুখী মেজাজে ব্যাট করেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন গিলও। দু’জনে মিলে ওপেনিং জুটিতে যোগ করেন ৯৬ রান। এরপর অবশ্য ব্যক্তিগত ৫৫ রানের (৪১) মাথায় আউট হয়ে যান ভেঙ্কটেশ। তবে ততক্ষণে চারটি চার এবং তিনটি ছয় মেরে ফেলেছেন তিনি। এরপরই অবশ্য চাপ বাড়ায় দিল্লির বোলাররা। পরবর্তীতে দ্রুত আউট হন নীতীশ রানা (১৩), শুভমন গিল (৪৬) এবং দীনেশ কার্তিক (০)। ফলে আরও চাপে পড়ে যায় কেকেআর ব্যাটিং লাইন আপ। এমনকী ১৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে যান ইওন মর্গ্যানও।
আর এখান থেকেই ম্যাচে আচমকা পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। অশ্বিনের শেষ ওভারের প্রথম বলে এক রান নেন রাহুল ত্রিপাঠি। কিন্তু পরের বলে শাকিব কোনও রান করতে পারেননি। আর তারপরের বলে তিনি আউটই হয়ে যান। তখনও কেকেআরের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩ বলে ৬ রান। কিন্তু ছয় মারতে গিয়ে আউট হন গত ম্যাচের নায়ক সুনীল নারিনও। এই সময় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ম্যাচ হেরে যেতে পারে কলকাতা। শেষপর্যন্ত নাইটদের পরিত্রাতা হয়ে দাঁড়ান রাহুল ত্রিপাঠি। ছয় মেরেই ম্যাচ জেতান দলকে। সেই সঙ্গে এনে দেন ফাইনালের টিকিটও। এখন দেখার ২০১২ সালের পুনরাবৃত্তি করতে পারেন কি না নাইটরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.