দীপ দাশগুপ্ত: আমিরশাহী আইপিএল (IPL 13) বিজনেস এন্ডে পৌঁছে এত নাটকীয় হয়ে গিয়েছে যে, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) সঙ্গে কোন তিনটে টিম শেষ পর্যন্ত প্লে অফ যাবে, নিশ্চিত করে এখনও বলা যাচ্ছে না। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সব কিছু পালটে যাচ্ছে, নতুন হিসেবপত্র সামনে চলে আসছে।
শনিবার দুপুরে যেমন দিল্লি ক্যাপিটালস বিশ্রী হেরে যাওয়ায় কেকেআরের (KKR) সুবিধে হল কিছুটা। কিন্তু রাতেই সেটা আবার পাল্টে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বিরাট কোহলির আরসিবিকে হারিয়ে দেওয়ায়। সানরাইজার্স চলে এল চারে। কেকেআর নেমে গেল সাতে। আসলে চিন্তার হচ্ছে নেট রান রেট। কেকেআরের যা বেশ খারাপ (-০.৪৬৭)। এ দিন হারলেও দিল্লি (-০.১৫৯) আর আরসিবির নেট রান রেট (- ০.১৪৫)
কেকেআরের তুলনায় ভাল। এদিকে আজ দিনের প্রথম ম্যাচের দিকেও নজর থাকবে নাইটদের। মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস যদি কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে হারিয়ে দিতে পারে তাহলে নাইটদের লড়াইটা অনেকটা সহজ হয়।
তবে সবচেয়ে বড় কথা হল, কেকেআরকে শেষ ম্যাচটা সবার আগে জিততে হবে। তবেই এ সব নেট রান রেটের প্রশ্ন আসবে। কেকেআর টিমটাকে যে রকম ছন্নছাড়া দেখাচ্ছে গত কয়েকটা ম্যাচ ধরে, তাতে ওরা
ভয়ঙ্কর দেখানো রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে কতটা পারবে, ঘোরতর সন্দেহ আছে। ভাবলে অবাক লাগে যে, একটা টিম কি না তেরোটা ম্যাচ খেলেও নিজেদের ফার্স্ট ইলেভেন বেছে উঠতে পারল না! কারা ওপেন
করবে, বোলিং কম্বিনেশন কী হবে, স্পিনার খেলাবে না পেসার– কেকেআরকে (Kolkata Knight Riders) দেখে মনে হচ্ছে, কিছুই যেন জানে না! চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে হঠাৎ একজন বোলার বসিয়ে রিঙ্কু সিংকে খেলিয়ে দিল। তাও আবার চার নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে দেওয়া হল! কী লাভ হল? না, রিঙ্কু চারে গিয়ে বারোটা বল নষ্ট করল। রানটা আরও গোটা দশেক বেশি হতে পারত। সেটা হল না। সঙ্গে ছ’নম্বর বোলারকেও পেল না কেকেআর। নীতিশ রানাকে দিয়ে বল করাতে হল একটা ওভার। আর সেই ওভারেই পরপর বাউন্ডারি মেরে ম্যাচে ফিরে এল সিএসকে (CSK)।
পরিষ্কার বলছি, আইপিএলের আর একটা টিমেও এ রকম অনিশ্চয়তা নেই। রাজস্থান জানে ওদের টিম কী, কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব জানে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ জানে। দেখুন, রাজস্থান যে রকম মারমার-কাটকাট খেলা শুরু করেছে তাতে রবিবারের ম্যাচ জেতার একটাই রাস্তা দেখছি। যে কোনও উপায়ে আন্দ্রে রাসেলকে ফেরানো। সিএসকে ম্যাচে টসের সময় কেকেআর অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যানকে বলতে শুনলাম যে, রাসেল নাকি প্রায় ফিট। আরে, প্রায় ফিট তো নামাল না কেন? সোজাসুজি বলছি, রাসেল যদি পঁচাত্তর শতাংশ ফিটও থাকে, যদি ব্যাটিংয়ের সঙ্গে দু’টো ওভার বল করে দিতে পারে, তা হলে সোজা রবিবার ওকে খেলিয়ে দেওয়া উচিত। রাসেলকে রবিবারও না নামালে আর কবে নামাবে কেকেআর?
রাসেল খেললে লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাটিংটা যেমন শক্তিশালী হবে। তেমনই ডেথে দু’টো ওভার ওকে দিয়ে করিয়েও দেওয়া যেতে পারে। তবে রাসেলকে খেলালে প্রশ্ন হল, কোন বিদেশিকে বসানো হবে? এখানে
কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্টকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওদের ঠিক করতে হবে, কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? পাওয়ার প্লে-তে ভাল বোলিং? নাকি ডেথে? যদি ডেথ বোলিং গুরুত্বপূর্ণ হয়, তা হলে প্যাট কামিন্স
বসবে। লকি ফার্গুসন থাকবে। আর পাওয়ার প্লে গুরুত্বপূর্ণ হলে উলটোটা। লকি আউট, কামিন্স ইন।
তবে শুধু রাসেলকে খেলানো নয়। কেকেআরকে বেন স্টোকসকে আউট করারও রাস্তা বার করতে হবে। শেষ দু’টো ম্যাচ মিলিয়ে দেড়শো রান করেছে স্টোকস! আর মুশকিল কী জানেন, সব ক্রিকেটারেরই কোনও না কোনও দুর্বলতা থাকে। কেউ পেস ভাল খেলে। কেউ স্পিন। কিন্তু স্টোকস এমন এক ক্রিকেটার, যে দু’টোই ভাল খেলে। তেমন কোনও দুর্বলতাই নেই। একটাই রাস্তা। ওকে রান না দেওয়া। তাতে যদি ভাল
বলে মারতে গিয়ে আউট হয়। অতএব, বিশেষ ভাবার কিছু নেই। শুধু ঠিকঠাক টিম নামাক কেকেআর। প্ল্যানটা ঠিকঠাক করুক। তার পর দেখা যাক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.