সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একবছর আগের রক্তক্ষয়ের বদলার ম্যাচ। শাহিন আফ্রিদি (Shaheen Afridi) নামক তরুণের কাছে অপমানিত হওয়ার বদলার ম্যাচ। যে ম্যাচে নামার আগে অনেক সাধনা করতে দেখা গিয়েছে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma)। সাধনায় মগ্ন গোটা দল। প্রস্তুত ভারত। কিন্তু রোহিতদের সেই প্রস্তুতিতে জল ঢেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন না তো বরুণদেব? গত কয়েকদিনের মেলবোর্নের আবহাওয়া কিন্তু সেই আশঙ্কার কথাই বলছে। যদিও রবিবারের আবহাওয়া খানিক স্বস্তির খবর দিচ্ছে।
Australia | India vs Pakistan T20 World Cup match to be held in Melbourne today.
Visuals from Central Weekend Market, Melbourne pic.twitter.com/fpC9EFok06
— ANI (@ANI) October 23, 2022
মেলবোর্নে (Melbourne) খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালের আকাশ সেখানে মেঘমুক্তই রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসও তেমনই ছিল। শনিবার যেমন সকালের দিকে বৃষ্টি হলেও বেলা গড়াতে রোদ উঠেছে। দুটো টিম ট্রেনিংও করেছে। রবিবার সকালেও সূর্যদেবের দেখা মিলেছে। কিন্তু অস্ট্রেলীয়রা যাদের হাওয়া রিপোর্টকে বেদবাক্যের মতো মানে, সেই ‘ব্যুরো অফ মেটেরোলজি’ রবিবার বিকেল থেকে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে। গতকাল পর্যন্ত সম্ভাবনা ছিল নব্বই শতাংশ, এ দিন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে সত্তর। কোনও কোনও সংস্থা আবার বৃষ্টির সম্ভাবনা আরও খানিকটা কম বলেই দাবি করছে। স্থানীয়দের বক্তব্য হল, কয়েক পশলা সামলে নেবে এমসিজি (MCG)। মাঠের নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই ভাল। কিন্তু টানা বর্ষণ চললে কী হবে বলা মুশকিল।
বৃষ্টি হলে দুটো জিনিস হতে পারে। প্রথমত, ওভার কাটছাঁট হওয়া। দ্বিতীয়ত, খেলাটাই পণ্ড হয়ে যাওয়া। আর দুটোর একটাও ভাল খবর নয়। খেলা পণ্ড হলে গ্রুপের বাকি ম্যাচগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যাবে। ভারতের গ্রুপ কাগজে-কলমে তুলনায় সহজ। হেভিওয়েটদের মধ্যে পাকিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকা আছে। কিন্তু গ্রুপে থাকা আয়ারল্যান্ডকেও কি আর পুঁচকে বলা যায়? টি-টোয়েন্টিতে দু’বারের বিশ্বজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে যারা দেশে ফেরত পাঠিয়েছে? যায় না। সুতরাং পাক ম্যাচ বাতিল হলে দক্ষিণ আফ্রিকা, আয়ারল্যান্ড ম্যাচগুলি আরও কঠিন হয়ে যাবে।
মেলবোর্নের বাদলা পরিবেশ নিয়ে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে দৃশ্যতই ধ্বস্ত লাগল। বলছিলেন, ‘‘আবহাওয়ার উপর আমাদের আর কী হাত আছে বলুন? যা হাতে আছে, নিয়ন্ত্রণে আছে, সে সব নিয়ে ভাবি।’’ রোহিতের দুর্ভাবনা স্বাভাবিক। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শাহিন শাহ আফ্রিদির কাছে অপমানিত হওয়ার জ্বালা আছে। গত এক বছর ধরে ভারত-পাক ক্রিকেট যুদ্ধকে বৈরিতার আগুন নয়, সম্প্রীতির পাতলা চাদর আলতো করে আগলে রাখে। রিজওয়ান (Mohammad Rizwan) কোহলিকে জড়িয়ে ধরেন। শাহিন প্রার্থনা করেন বিরাটের রানে ফেরার। কিন্তু জ্বালাটা জ্বালাই, অপমান আপমানই। না জিজ্ঞাসা করেও লিখে দেওয়া যায়, গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে দশ উইকেটে হারার দুঃখ আজও ভোলেননি বিরাট-রোহিতরা। যার পর বিশ্বকাপটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল ভারতের। গত এশিয়া কাপে দেখা হয়েছে দু’বার, ভারত জিতেছে একবার। এশিয়া কাপে শাহিন ছিলেন না। বিশ্বকাপে ফিরছেন। মেলবোর্নের ‘ড্রপ ইন’ উইকেটে ফুল লেংথে ফেলে রোহিতদের বিপাকে ফেলার প্রাণান্ত চেষ্টা তিনি করবেন ঠিক। আবার তাঁর ভয়াল ডেলিভারিগুলো চকিতে ভেতরে ঢুকে আসবে, মেঘলা থাকলে যা খেলা আরও কঠিন। সঙ্গে জসপ্রীত বুমরা ছাড়া সামলাও ‘বাবর-নামা’। মহম্মদ শামি (Mohammad Shami) থাকবেন। সঙ্গী হয়তো হবেন অর্শদীপ সিং। কিন্তু বুমরাহ বুমরাহই। এর সঙ্গে জুড়ে দিতে হবে দীর্ঘ ন’বছর আইসিসি ট্রফি-শূন্যতার চাপ। জুড়ে দিতে হবে, ‘ভারত শুধু বাইল্যাটারালেই বাঘ’ জাতীয় অপবাদকে ভুল প্রমাণের চাপ। সব ধরনের বিশ্বকাপে (ICC T-20 World Cup) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যতই এখনও একাধিপত্য থাকুক ভারতের, এই প্রথম একটু হলেও কাগজে-কলমে পাকিস্তান এগিয়ে, ভারত পিছিয়ে। সূর্যকুমার যাদবের মহাজাগতিক ফর্ম মাথায় রেখেও সেটা বলতে হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.