ভারত: ৪৬, ৪৬২ (সরফরাজ ১৫০, পন্থ ৯৯)
নিউজিল্যান্ড: ৪০২, ১১০-২(ইয়ং ৪৮, রাচীন ৩৯)
নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সব গল্পের শেষটা হয়তো রূপকথার মতো হয় না। নাহলে ২৬ বছর বয়সি তরুণের কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি, খোঁড়াতে খোঁড়াতে দাঁতে দাঁত চেপে এক মৃত্যুঞ্জয়ীর লড়াই এভাবে ব্যর্থ হবে কেন! আসলে টেস্ট ক্রিকেট যতই রোম্যান্টিসিজমে ভরা হোক, কোথাও না কোথাও বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে তাকে আছড়ে পড়তেই হয়। নাহলে হয়তো যাবতীয় ক্রিকেটীয় ব্যাকরণ অর্থহীন হয়ে যেত।
বলতে গেলে, বেঙ্গালুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত হেরে গিয়েছিল প্রথম ইনিংসেই। ‘হেরে যাওয়া’ ‘মৃত’ সেই টেস্টে প্রাণ সঞ্চার করেছিল দ্বিতীয় ইনিংসে ঋষভ পন্থ এবং সরফরাজ খানের অদম্য লড়াই। অতি বিশ্বাসী ক্রিকেটভক্তদের অসাধ্যসাধনের স্বপ্নও দেখাতে শুরু করেছিল সরফরাজের ১৫০ এবং পন্থের ৯৯ রানের ইনিংস। হয়তো কারও কারও মনে হয়েছিল প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৬ রানে অল-আউট হওয়ার পরও টেস্ট জেতা যায়। কিন্তু শেষমেশ স্নায়ুর চাপ ধরে রেখে অনায়াসেই ম্যাচটি জিতে নিলেন কিউয়িরা। আসলে পন্থদের লড়াইয়ের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও একটি মিনি বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের শেষ ৭ উইকেট পড়ে ৬২ রানে। একই ম্যাচে জোড়া বিপর্যয়ের পর জয়ের স্বপ্ন দেখা যে বাস্তবসম্মত নয়, সেটাই শেষমেশ প্রমাণিত হল। শেষমেশ নিউজিল্যান্ড বেঙ্গালুরু টেস্ট জিতল ৮ উইকেটে।
আসলে দ্বিতীয় ইনিংস ভারতের পুঁজি ছিল মোটে ১০৬ রান। সেই রান নিয়ে যে কিইয়িদের বিশেষ বেগ দেওয়া যাবে না, সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু তাও পন্থ-সরফরাজদের দেখানো স্বপ্নে নতুন গতি দিয়েছিলেন জসপ্রীত বুমরাহ। পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় বলেই নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম লেথামের উইকেট তুলে নিয়ে। মাথার উপর মেঘ, হাতে নতুন বল, দুই ভারতীয় পেসার প্রথম কয়েকটি ওভার যেন আগুন ঝরালেন। কিন্তু ভাগ্যদেবতা সহায় ছিল না। একাধিকবার ‘একটুর জন্য’ ব্যাটের কানা ছোঁয়াল না বল, আবার কখনও ‘একটুর জন্য’ মিস হয়ে গেল স্ট্যাম্প। আসলে গোটা টেস্টেই এমন বহু ‘একটুর জন্য’ মুহূর্ত ভারতের বিপক্ষে গিয়েছে। নাহলে হয়তো ফলাফলে অন্যরকম হতেই পারত। যাই হোক, শেষমেশ তেমন কিছু হয়নি। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ক্রিজে পড়ে থেকেছেন কিউয়ি ব্যাটাররা। বল পুরনো হতেই প্রভাব কমেছে ভারতীয় বোলারদের। যার অবধারিত ফল, অনায়াসে ভারতের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রায় নিউজিল্যান্ডের পৌঁছে যাওয়া। ধৈর্য ধরে নিউজিল্যান্ডকে জিতিয়ে দিলেন ইয়ং (৪৮) এবং রাচীন রবীন্দ্র (৩৯)। ৩ ম্যাচের সিরিজে কিউয়িরা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
তবে হারলেও বেঙ্গালুরু টেস্টে ভারতের ‘কামব্যাক’ অনেকদিন মনে থেকে যাবে ক্রিকেটপ্রেমীদের। প্রথম ইনিংসে ৪৬ রানে অলআউট, ৩৫৬ রানে পিছিয়ে থাকা, তার পরও যে ম্যাচে ফিরে আসা যায়, প্রতিপক্ষকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলা যায়, সেটা এই ভারতীয় দলের হার না মানা মানসিকতারই পরিচয় দেয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.