সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। বিকেলে বাইপাসের ধারের এক পাঁচ তারা হোটেলে বসে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন তারকা স্পিনার মন্টি পানেসর (Monty Panesar) যখন সংবাদ প্রতিদিন-এর সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন, তখনও অঝোরে বৃষ্টি। বাইরের দিকে তাকিয়ে মুখটা একটু গোমড়া করে পানেসর জিজ্ঞেস করলন–বৃষ্টিতে ম্যাচটা ভেস্তে যাবে না তো? না, শেষমেশ ম্যাচ ভেস্তে যায়নি। পানেসরকেও আর মুখ গোমড়া করে ঘুরতে হয়নি। ইডেনে নিজের সুখস্মৃতি থেকে শুরু করে বিরাট কোহলি, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T-20 World Cup) নিয়ে আড্ডায় সবকিছুই বললেন পানেসর।
কলকাতা আমার খুব প্রিয়: এই শহর আমার খুব প্রিয়। শহরটার সঙ্গে প্রচুর ইতিহাস জড়িয়ে।
দশবছর আগে ইডেনে এখানে আমরা দারুণ একটা টেস্ট জিতেছিলাম। বেশ ভাল বোলিং করেছিলাম। বোলিং দেখে রাহুল দ্রাবিড় বলেছিল, ফ্ল্যাট উইকেট সম্প্রতি সময়ে ও নাকি এরকম বোলিং করতে কোনও স্পিানরকে দেখেনি। মুম্বইয়ে খেলে কলকাতা এসেছিলাম। ওখানে লালমাটির উইকেট ছিল। ইডেনে পুরো অন্যরকমের পিচ। কালো মাটির উইকেট। অনেকটা ফ্ল্যাট। সেখানে মানিয়ে নেওয়াটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। একজন স্পিনারের কাছে বড় পরীক্ষা ছিল। কিন্তু তৃতীয়-চতুর্থ দিন থেকে পিচ ভাঙতে শুরু করে। ফলে খেলাটাই অন্যরকম হয়ে যায়। আবার সেই ইডেনে নামব, সেটা ভেবেই প্রচণ্ড উত্তেজিত লাগছে।
আইপিএল না খেলার দুঃখ কিছুটা ভুলব: লেজেন্ডস লিগে (Legends League) অনেক ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলব, একটা সময় যাঁদের বিরুদ্ধে অন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছি। বীরেন্দ্র শেহবাগ, গৌতম গম্ভীরদরে মতো ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁরা আইপিএলে চুটিয়ে খেলেছেন। ওদের সঙ্গে খেলব সেটাই দারুণ ব্যাপার। সবচেয়ে বড় কথা হল, হরভজন সিং রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আইপিএল ট্রফি জিতেছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার। আইপিএলে খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু সেভাবে খেলা হয়নি। এই লিগে খেলে অর্ধেক স্বপ্ন পূরণ হল। আইপিএলে না খেলার দুঃখ কিছুটা ভুলতে পারব (হাসি)।
বিরাট নিজের মানদণ্ড নিজেই সেট করে ফেলেছে: বিরাট নিজের স্ট্যান্ডার্ডটা এমনভাবে সেট করে ফেলেছে, যে ওকে নিয়ে সবসময় কথা হয়। তিরিশ–চল্লিশ রান করে আউট হলেও মনে হয় কিছুই করেনি। ফলে ওর নিজের উপরও চাপ পড়ে যায়। তবে এশিয়া কাপে দারুণ ফর্মে ছিল। সেঞ্চুরি করেছে। আশা করি বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত ব্যাট করবে বিরাট।
বিশ্বকাপে অবশ্যই ভারত ফেভারিট: বিশ্বকাপের আগে সব টিমই মোটামুটি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। ইংল্যান্ড টিমও ওঠা-নামার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ‘দ্য হান্ড্রেড’ থেকে একজন টিমে এসেছে। কয়েকটা সিরিজে আমরা যেমন ভাল খেলেছি, তেমন কয়েকটাতে খেলতে পারেনি। গত সামারে ইয়ন মর্গ্যানের ক্যাপ্টেন্সি খুব মিস করেছি। সামনেই পাকিস্তান সিরিজ রয়েছে। ওখানে আরও ভাল করে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারতে হবে। অবশ্যই ফেভারিট হিসাবে শুরু করবে ভারত। জানি এশিয়া কাপে ওরা একদমই ভাল পারফর্ম করতে পারেনি। আসলে ভারতীয় দলটা এতটাই শক্তিশালী যে যেখানেই খেলুক না কেন, সবসময় ফেভারিট হয়েই নামে।
অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় স্পিনারদের ভূমিকা প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে: জানি অস্ট্রেলিয়ার মাঠে পেসারদের ভূমিকা প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে, ভারতের স্পিন অ্যাটাকও ভীষণ শক্তিশালী। কারণ এখন সবাই পেস বোলিংটা দারুণ খেলে। আর সবাই ধরেই নেবে, অস্ট্রেলিয়া খেলা মানেই পেসারের রাজত্ব চলবে। সেখানে ভারতের স্পিনাররা কিন্তু চমকে দিতেই পারে। ভারতীয় দলে বিশ্বমানের সব স্পিনার রয়েছে। আমি বলব, অস্ট্রেলিয়ার মাঠে অশ্বিনদের ভূমিকাও প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.