ভারত: ২৯৭ ও ৩৪৩/৭ ডিক্লেয়ার (রাহানে-১০২, হনুমা-৯৩, কোহলি-৫১, চেজ ৪-১৩২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২২২ ও ১০০ (রোচ ৩৮, বুমরাহ ৫-৭, সামি ২-১৩, ইশান্ত ২-৩১)
৩১৮ রানে জয়ী ভারত
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লিডসে ‘বেন স্টোকস’ রূপকথার রেশ তখনও কাটেনি। ক্রিকেটবিশ্বের একের পর এক তাবড় তাবড় নাম স্টোকস-বন্দনায় ব্যস্ত। সেই আলোচনা ফুরোতে না ফুরোতেই নজর ঘুরে গেল বুমরাহর দিকে। রবিবাসরীয় সন্ধেটা যদি হয় বিগ বেনের। তবে রাতটা ছিল আগুনে জসপ্রীত বুমরাহর। অ্যান্টিগায় যাঁর পেসের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এক নয়। দুই নয়। মাত্র এক ঘণ্টায় পাঁচটা উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের একার হাতেই শেষ করলেন ভারতীয় পেসার। সেই সঙ্গে ভারতকে দুই টেস্টের সিরিজে ১-০-য় এগিয়ে দিলেন।
Terrific victory for #TeamIndia as they take a 1-0 lead in the series 🇮🇳🇮🇳 #WIvsIND pic.twitter.com/rbZcLhA0hf
— BCCI (@BCCI) August 25, 2019
বুমরাহর বোলিং ফিগারও তো অবিশ্বাস্য। ৮-৩-৭-৫। কমেন্ট্রি বক্সে তখন বসে প্রাক্তন বিশ্বকাপজয়ী বোলার আশিস নেহরা। তাঁর সঙ্গে প্রাক্তন অলরাউন্ডার অজয় জাদেজা। যাঁরা তখন বুমরাহর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বলাবলি চলতে থাকে, “অ্যান্টিগার যে উইকেটে পেসারদের জন্য খুব একটা সাহায্য নেই সেখানেও বুমরাহ এরকম আগুনে বোলিং করে গেল।” বুমরাহর শিকারের মধ্যে ছিলেন জন ক্যাম্পবেল (৭), ক্রেগ ব্রেথওয়েট (১) ও ড্যারেন ব্র্যাভোর (২) মতো ব্যাটসম্যানরা। এমনই অবস্থা দাঁড়াল যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের সর্বোচ্চ রানটা করলেন একজন পেসার। টেলএন্ডার কেমার রোচের ব্যাট থেকে এল ৩৮ রান। একটা সময় ৫০/৯ হয়ে যায়। শেষ উইকেটে ৫০ রানের পার্টনারশিপ লজ্জা কিছুটা বাঁচাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অল আউট ১০০ রানে। ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ের শিরদাঁড়া ভাঙেন বুমরাহ। আর বাকি কাজটা করলেন ইশান্ত শর্মা এবং মহম্মদ শামি। দু’জনে বাকি পাঁচ উইকেট নেন।
মঞ্চটা অবশ্য তৈরি করে দিয়েছিলেন অজিঙ্ক রাহানে। তিনি সাধারণত পরিচিত খুবই শান্তস্বভাবের এক ক্রিকেটার হিসেবে। খুব বেশি যেমন প্রচারে থাকতে ভালবাসেন না, আবার বিতর্কেও কোনওদিন জড়ান না। কিন্তু মাঠের বাইরে তিনি যতই শান্ত একজন মানুষ হন না কেন, মাঠের ভিতরে তিনি যেন নৃশংস একজন ব্যাটসম্যান। অ্যান্টিগায় আবার রাহানে হয়ে উঠেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুঃস্বপ্ন। প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৮১। আর এদিন দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন সেঞ্চুরি। গোটা ইনিংসে সেই ট্রেডমার্ক রাহানেচিত ব্যাটিংই দেখা গেল। রাহানে ফর্ম ধরে রাখলেও টপ অর্ডার আবার ব্যর্থ। ওপেনিং জুটির মধ্যে কেএল রাহুল আউট হলেন মাত্র ৩৮ রানে। মায়াঙ্ক আগরওয়াল করলেন ১৬। চেতেশ্বর পূজারাও (১৬) সামলাতে পারলেন না কেমার রোচের আগুনে পেস। এমন সময় রাহানে (১০২) ও কোহলির (৫১) পার্টনারশিপই ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যায়। নজর কাড়লেন হনুমা বিহারীও (৯৩)।
এই জয়ই রানের নিরিখে বিদেশের মাটিতে টিম ইন্ডিয়ার সবচেয়ে বড় জয়। সেই সঙ্গে নেতা হিসেবে টেস্টে মহেন্দ্র সিং ধোনির রেকর্ডও স্পর্শ করলেন কোহলি। মোট ২৭টি টেস্ট জিতে অধিনায়ক হিসেবে ধোনির সঙ্গে একই আসনে বসলেন তিনি। নজির গড়ে কোহলি বলছেন, “এটা একটা দায়িত্ব যা আমি পালন করছি। নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। কারণ একাধিক ভূমিকায় আমি দেশের জন্য কিছু করতে পারছি। তবে দল ছাড়া কিছুই সম্ভব হত না। আমি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু বাকিরা সেটাকে বাস্তবায়িত করছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.