মনোজ তিওয়ারি: টানা দশ ম্যাচ জয়ের পর হার! গোটা ভারতীয় দলকে দেখেই খারাপ লাগছে। এ যেন তীরে এসেও তরী ডুবে গেল। এমন সুযোগ খুবই কম আসে। ঘরের মাঠে এত সমর্থকের সামনে রোহিতের হাতে বিশ্বকাপ দেখতে চেয়েছিলাম। সেটা হল না। এই আফসোস বয়ে বেড়াতে হবে আমাদের দীর্ঘদিন।
যাইহোক ম্যাচের শেষে প্রথম প্রশ্নই উঠতে পারে, কেন এই রকম স্লো উইকেটে অশ্বিনকে (Ravichandran Ashwin) খেলানো হবে না? কেন নয়? এর পক্ষে যুক্তি হতে পারে উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে চাননি দ্রাবিড়। কিন্তু এই উইকেটে অশ্বিন থাকলে সুবিধা পেতে পারত ভারত। হ্যাঁ, অশ্বিন এলে বাদ যেতে হত কুলদীপ যাদবকে। কিন্তু কুলদীপের স্পেলটা দেখুন, দশ ওভারে একটাও উইকেট পাননি। মাথায় রাখতে হবে, আমেদাবাদে এই সময় রাতের দিকে শিশির ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে। আমার মনে হয় এই পিচে অশ্বিন থাকলে লাভবান হতেন রোহিতরা। তাই যত রাত বেড়েছে বোলাররা সমস্যায় পড়েছে।
এই ম্যাচে ২৪০ রান জয়ের জন্য কখনওই ভালো স্কোর হতে পারে না। তাও অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে। যারা লিগের ম্যাচে ভারতের কাছে হারের পর এই ম্যাচে খোঁচা খাওয়া বাঘ হয়ে উঠেছিল। প্রতিশোধের ম্যাচে ওরা সফল। এদিন ব্যাটিং, বোলিং কি ফিল্ডিং– তিন বিভাগেই কোহলিদের টেক্কা দিয়ে গিয়েছেন কামিন্সরা। ম্যাচের হারের কারণ যদি বলতে হয় তাহলে একটা কারণ, রোহিতের ওইভাবে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসা। একজন অভিজ্ঞ ব্যাটারের ওই সময় এই রকম ঝুঁকি নেওয়া উচিত হয়নি।
এই রকম শটে ছয় হলে নায়ক হওয়া যায়, আর আউট হলে সমালোচনার ঝড় বয়। রোহিতের জন্য আজ সমালোচনা হবেই। পঞ্চাশের গন্ডিও পার করতে পারলেন না। অথচ এদিন রোহিতের ব্যাটে রান আসছিল দ্রুত। ফাইনালে উনি যদি আরও কিছুক্ষণ পিচে থাকতেন তাহলে ভারতের রান বাড়ত তাতে সন্দেহ ছিল না। অবশ্য রোহিতের ক্যাচটাও অবিশ্বাস্য নিয়েছেন ট্রাভিস হেড। সেই ট্রাভিস হেড। গতকালই বলেছিলাম, এই ধরনের মঞ্চে ফ্যাক্টর হতে পারেন এই অজি ক্রিকেটার। আজ প্রমাণ হয়ে গেল, কথাটা মিথ্যে নয়। ওই ক্যাচের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১৩৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস। শুধু কি হেড? ম্যাচের শুরু থেকে ওয়ার্নার, হেডরা যেভাবে ফিল্ডিং করেছেন, তাতে কমপক্ষে কুড়ি রান বাঁচিয়েছেন ওঁরা।
ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে রোহিত, কোহলি, রাহুল ছাড়া কেউ দাঁড়াতেই পারলেন না! অঙ্কে আজ বেশকিছু ভুল হয়েছে রোহিতের। এর পাশাপাশি যদি অস্ট্রেলিয়ার দিকে তাকাই, এদিন যেন শুরু থেকেই জেতার জন্য ঝাঁপিয়েছিল কামিন্সরা। ওদের সব অঙ্কই আজ মিলে গিয়েছে। যে অঙ্ক এতদিন মিলে আসছিল ভারতের। এদিন ভারতের প্রত্যেকটা ভুলের ফায়দা তুলে নিয়েছেন অজিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.