সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তীরে এসে কি তরি ডুববে ভারতের? ফের কি স্বপ্নভঙ্গ? আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের লক্ষাধিক দর্শক এবং টিভির সামনে যে কোটি কোটি ভারতবাসী বসে খেলা দেখছেন, তাঁদের মনে সম্ভবত এই আশঙ্কায় দানা বাঁধছে! আর সেটাই স্বাভাবিক। আসলে গোটা বিশ্বকাপ যে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন-আপ কার্যত বিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছিল, যে ভারতীয় ব্যাটিং কার্যত দুমড়ে-মুষড়ে দিচ্ছিল প্রতিপক্ষকে, সেই ভারতীয় ব্যাটিংই মহাগুরুত্বপূর্ণ ফাইনালে এসে কার্যত বিপর্যয়ের মুখে পড়ল।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) স্টেডিয়ামে অজিদের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ভারতের সংগ্রহ মোটে ২৪০ রান! বিশ্বকাপ ফাইনালের পাহাড়প্রমাণ চাপ। কোটি কোটি দর্শকের প্রত্যাশা আর অস্ট্রেলীয়দের নিয়মানুবর্তী বোলিং এবং অনবদ্য ফিল্ডিং যেন নতজানু করে দিল ভারতের বিশ্বখ্যাত ব্যাটিং বিভাগকে। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলরা (KL Rahul) খেললেন বটে, কিন্তু কেউই সেভাবে নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারলেন না। ফলস্বরূপ, ভারত এমন একটা স্কোরে আটকে গেল, যেখান থেকে জিততে হলে বোলারদের অনবদ্য, অবিশ্বাস্য কোনও কাণ্ড ঘটাতে হবে।
অথচ এদিনও শুরুটা অন্য দিনের মতোই করেছিল টিম ইন্ডিয়া (Team India)। রোহিতের মারকাটারি ব্যাটিংয়ে চার ওভারেই ৩০ রানে পৌঁছে যায় টিম ইন্ডিয়া। বিপর্যয়ের শুরু পঞ্চম ওভারে। শুভমান গিল স্টার্কের বলে আক্রমণাত্মক শট খেলতে গিয়ে মিড-অনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন। গিলের উইকেটের পরও অবশ্য রানের গতি কমেনি। রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি দু’জনেই মারকুটে মেজাজে খেলা চালিয়ে যান। ভারত পরপর ধাক্কা খায় দশম এবং একাদশ ওভারে। দশম ওভারে রোহিত আউট হন ব্যক্তিগত ৪৭ রানে। দলের রান তখন ৭৬। ম্যাক্সওয়েলের বলে অনবদ্য ক্যাচ নিয়ে ভারত অধিনায়ককে ফেরান ট্রেভিস হেড। পরের ওভারেই আউট হয়ে যান শ্রেয়স আইয়ার। পর পর দুই উইকেট হারিয়ে সেই যে চাপে পড়ল ভারত, সেই চাপ থেকে আর যেন বেরোতে পারলেন না টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটাররা।
এর পর কে এল রাহুল এবং বিরাট কোহলির জুটি ভারতকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করে। দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার ৬৭ রানের একটা জুটি করলেও রানের গতি অনেকটা স্লথ হয়ে যায়। ঠিক যেসময় মনে হচ্ছিল, ভারত ম্যাচে ফিরেছে, এবার রানের গতি বাড়বে। ঠিক তখনই খেলার গতির বিপরীতে গিয়ে আউট হয়ে গেলেন বিরাট কোহলি। কামিন্সের শর্ট বল থার্ড ম্যানে ঠেলতে গিয়ে প্লেইড অন হয়ে গেলেন বিরাট। চাপ আরও বাড়ল। এর পর রবীন্দ্র জাদেজাও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। তিনি করলেন ৯ রান। ব্যক্তিগত ৬৬ রান করে কেএল রাহুল যখন আউট হলেন, তখনই বোধহয় ভারতের বড় ইনিংসের আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল। শেষদিকে সূর্যকুমার যাদব ১৮ রানের একটা ছোট্ট ইনিংস খেললেন বটে, তবে তাতেও বিশেষ সুবিধা হল না। ভারতের ইনিংস শেষ হল ২৪০ রানে।
হাতে মাত্র ২৪০ রান। তাহলে কি ভারতের সব আশা শেষ? সেটা ভেবে নেওয়ার এখনই বোধহয় কোনও কারণ নেই। আহমেদাবাদে ফাইনালে যে পিচ ব্যাবহার হয়েছে, সেই পিচ বিশ্বকাপের আর পাঁচটা পিচের মতো নয়। বল থামছে, যে গতিতে ব্যাটে আসার কথা তার চেয়ে অনেকটাই ধীরগতিতে আসছে, অনেক সময় টার্নও করছে। পিচ থেকে ভালোমতো সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। পেসারদের মারাটাও সহজ হবে না। ফলে ফাইনালে মির্যাকেলের আশা করতেই পারে টিম ইন্ডিয়া। অন্তত অজিদের কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলা যেতেই পারে। তবে সবটাই নির্ভর করছে রাতের দিকে কী পরিমাণ শিশির পড়ছে তার উপর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.