সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়: বিশ্বকাপ ফাইনাল- নিউজিল্যান্ড আর ইংল্যান্ড দু’টো টিমের কী অবিশ্বাস্যই না একটা সুযোগ। সেদিন ইংল্যান্ডের সময় সন্ধে ছ’টায় দু’টো টিমের মধ্যে একটা বিশ্বকাপ ট্রফিতে নিজেদের নাম প্রথমবারের জন্য খোদাই করে ফেলবে।
ইংল্যান্ড এর আগে বিশ্বজয়ের সুযোগ পেয়েছিল। তিনবার। ’৭৫, ’৮৭ আর ’৯২-এ। সাতাশ বছর বাদে ইংল্যান্ড আরও একটা সুযোগ পাচ্ছে বিশ্বকাপ জয়ের। আর এবার হয়তো কাপ ফাইনাল খেলতে নামবে ফেভারিট হিসেবে। ’৭৫-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফেভারিট ছিল। ’৮৭-তে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু রবিবার নিজেদের ঘরের মাঠে হোম অফ ক্রিকেটে সম্ভবত ইংল্যান্ডই শক্তিশালী টিম হিসেবে নামবে। শুধু ভাবছি, ইংল্যান্ড ক্রিকেটার, তাদের পরিবার, ইংরেজ সমর্থক যারা বছরের পর বছর মাঠে এসেছেন টিমকে সমর্থন করতে, তাদের কাছে রবিবার কী অসামান্য মুহূর্ত!
আজ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জেতেনি ইংল্যান্ড। রবিবার তাই ওদের কাছে গর্বের একটা দিন হতে পারে। চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে জঘন্য খেলার পর ওরা ওদের ওয়ানডে সেট আপ-টাকেই পুরো পালটে ফেলেছে। প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রসের তত্ত্বাবধানে। গত চার বছর ধরে খেলা পুরো বদলে গিয়েছে ইংল্যান্ডের। লর্ডস ব্যালকনিতে কাপটা শেষপর্যন্ত তুললে কী তৃপ্তিই না পাবে ওরা।
ইংল্যান্ড টিম হিসেবে প্রবল শক্তিশালী। বোলিংও যথেষ্ট শক্তিশালী। ক্রিস ওকস আর হোফ্রা আর্চার নতুন বলে তো দারুণ বোলিং করল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। লর্ডসেও ওরা পরিবেশগত সুবিধে পাবে। কারণ ইংল্যান্ডের মাঠগুলোর মধ্যে লর্ডসেই সবচেয়ে বেশি বল সুইং করে। এবার ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে ঢুকি। জেসন রয় আর জনি বেয়ারস্টো প্রবল প্রভাব ফেলছে। তারপর একে একে আসছে রুট, মর্গ্যান, স্টোকস, বাটলার। যারাও দুর্দান্ত ব্যাট করছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে টপ অর্ডারের অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা ইংল্যান্ডকে সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে ভয় ধরানো টিম করে তুলেছে। গত কয়েক বছরে যেভাবে ধারাবাহিকভাবে ওরা সাড়ে তিনশো প্লাস তুলে গিয়েছে, সেটা ইংল্যান্ডকে বিশ্বাস জুগিয়েছে বড় টুর্নামেন্ট জেতার। ইংল্যান্ড কাউকে ভয় পায় না আর। কাউকে না।
নিউজিল্যান্ডের ক্ষেত্রে ২০১৫ বিশ্বকাপের পর এটা আর একটা ফাইনাল। ওরা সেবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গিয়েছিল। এবার বিশ্বজয়ী হতে গেলে ওদের আবার আর একটা হোম টিমকে হারাতে হবে। ভারতের বিরুদ্ধে কয়েক দিন আগেই ওরা সেমিফাইনাল জিতেছে। আমি নিশ্চিত যে ফাইনালের মতো মেগা ম্যাচের আগে ওরা যথেষ্ট বিশ্রামও পেয়েছে তৈরি হওয়ার। সেমিফাইনালের মানসিক চাপ সামলানো একটা বড় ব্যাপার। মাঝের এই কয়েকটা দিন নিউজিল্যান্ডকে সাহায্য করবে নিজেদের ঝরঝরে রাখতে। কোনও সন্দেহ নেই, ফাইনালে ওরা মারাত্মক শক্তিশালী একটা টিমের সামনে পড়তে চলেছে। কিন্তু সেটা তো ভারতও ছিল। তাই নিউজিল্যান্ডকে কোনওভাবেই হালকা নেওয়ার উপায় নেই। ওদের সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ, ওদের অধিনায়ক। কেন উইলিয়ামসন অদ্ভুত শান্ত একজন ক্যাপ্টেন। তবে রবিবার ওরা কেমন ব্যাট করে, তার উপরই নির্ভর করছে কীভাবে নিউজল্যান্ড টুর্নামেন্ট শেষ করে। (গেমপ্ল্যান)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.