ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ক্রিকেটার-আম্পায়াররা গৃহবন্দি, নড়াচড়া করতে পারছেন না, বাইরে বেরতে পারছেন না, এতে নতুনত্ব কিছু নেই। গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার মতো ভারতেও হচ্ছে, ঘটছে। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে ঘরবন্দি হওয়ায় ফোনের নেটওয়ার্ক নিয়ে তীব্র সমস্যায় পড়ে আইসিসি (ICC) আম্পায়ার সটান গাছে উঠে পড়ছেন সিগন্যাল পেতে! এ জিনিস এখনও পর্যন্ত কেউ দেখেছে না শুনেছে? কে জানে! এবং এহেন বিদঘুটে কাণ্ড ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় নয়। ঘটেছে ভারতেই।
আইসিসি’র আন্তর্জাতিক প্যানেলে থাকা আম্পায়ার অনিল চৌধুরির এটাই রোজনামচা এখন! ফোনের টাওয়ার পেতে গাছে ওঠা! কপালজোরে পেয়ে গেলে কথা বলে গাছ থেকে নামা! উত্তরপ্রদেশের শামলি জেলার গ্রাম ডাঙ্গরোলে আদিবাড়ি অনিল চৌধুরির। আজ পর্যন্ত গোটা কুড়ি ওয়ানডে আর ২৭টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা যে ওয়ানডে সিরিজ বাতিল হয়ে গেল, সেখানেও আম্পায়ারিং করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সিরিজ বাতিল হয়ে যাওয়ায় সাতদিনের জন্য দেশের বাড়ি ঘুরে আসবেন বলে ঠিক করেন অনিল। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। দুই ছেলেকে নিয়ে চলে যান ডাঙ্গরোলে। ভেবেছিলেন, দিন সাতেক থেকে দিল্লি ফিরে যাবেন। যেখানে তাঁর মা আর স্ত্রী থাকেন। কিন্তু দেশের বাড়িতে থাকার সময়ই ভারতজুড়ে লকডাউন ঘোষণা হয়ে যায়। এবং অনিলের বিপত্তিও সেখান থেকেই শুরু!
“গত ১৬ মার্চ থেকে গ্রামের বাড়িতে বন্দি আমি। সবচেয়ে বড় সমস্যা, এখানে ফোনের কোনও টাওয়ার নেই। ইন্টারনেট নেই। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না,” শুক্রবার প্রায় আর্তনাদ করেছেন অনিল। “আমার অবস্থাটা ভেবে দেখুন একবার। কারও সঙ্গে কথা বলতে হলে দু’টো রাস্তা আমার সামনে খোলা থাকছে। হয় গ্রামের বাইরে যাও। নইলে গাছে ওঠো। আমার মা দিল্লিতে। স্ত্রীও। কী করে কথা বলব, বুঝে উঠতে পারছি না। নিত্য গাছে উঠে কথা বলতে হচ্ছে!” বললেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে গাছে উঠে ফোনে কথা বলার গোটা কয়েক ছবিও পোস্ট করেছেন অনিল চৌধুরি। দুঃখ করে বলেও দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র যে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, তা নয়। দুই ছেলের সঙ্গে নিজেও তিনি যথেষ্ট ভুগছেন। দুই ছেলের অনলাইন ক্লাসে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সম্ভব হয়নি ইন্টারনেট না থাকায়। “আমাকেও আইসিসির অনলাইন প্রোগ্রামে যোগ দিতে হত। কিন্তু করব কীভাবে? ফোনের টাওয়ার নেই। ইন্টারনেট নেই। গ্রাম প্রধান দশদিন আগে এই সমস্যার কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। কিন্তু এখনও উত্তর আসেনি,” হতাশা ঝরে পড়ে অনিলের গলা থেকে। সত্যি, আর কত ভাবে যে ভোগাবে করোনা!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.