সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘হি ইজ সেভিং ইট ফর দ্য ফাইনাল।’ ফাইনালের আগে বিরাট কোহলির ফর্ম নিয়ে যখন গোটা দুনিয়া প্রশ্ন তুলছে, তখন প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। একই কথা শোনা গিয়েছিল কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) গলাতেও। ম্যানেজমেন্ট কেন তাঁর উপর ভরসা রেখেছিল, ফাইনালে বুঝিয়ে দিলেন বিরাট রাজা। হ্যাঁ, রাজাই বটে। রাজা না হলে বিশ্বকাপ (ICC T20 World Cup Final 2024) ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে প্রবল চাপের মুখে এমন রাজকীয় ইনিংস কি খেলা যেত! সময়ের প্রয়োজনে দুর্গ আঁকড়ে বসে থেকে আবার সুসময়ে শত্রুকে ফালাফালা করে দেওয়া যেত! যেটা করলেন বিরাট কোহলি। ৫৯ বলে ৭৬ রান। ইনিংস সাজালেন ৬টি বাউন্ডারি এবং ২টি বিশাল ছক্কায়। ফাইনালে লড়াই করার জায়গায় পৌঁছে দিলেন টিম ইন্ডিয়াকে।
বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো হয়নি বিরাটের। ফাইনালের আগে ৭ ম্যাচে বিরাটের রান ছিল সব মিলিয়ে ৭৫! অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন, এত ব্যর্থতার পরও কেন বিরাট (Virat Kohli)। রোহিতের এই তরুণ ভারতীয় দলে আদৌ তিনি মানানসই তো? কেউ কেউ তাঁর তুলনা করছিলেন তিরাশির সুনীল গাভাসকরের সঙ্গে। কপিলদেবের বিশ্বজয়ী সেই দলে বেমানান ছিলেন গ্রেট গাভাসকরও। গোটা বিশ্বকাপেই ব্যর্থ হন তিনি। কিন্তু আজকের বিরাট গাভাসকর হলেন না। ফাইনালে নিজের জাত চিনিয়ে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, আজও কেন বিশ্ব ক্রিকেটের অবিসংবাদী রাজা তিনিই।
সেমিফাইনাল জয়ের পর ভারতীয় ড্রেসিং রুমের বাইরে অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) তখন বিধ্বস্ত হয়ে বসে পড়েছেন। একটু আগেই আবেগের বিস্ফোরণে চোখে জল আসার জোগাড় তাঁর। হয়তো কোথাও তাঁর মনে ২০২৩-এর ১৯ নভেম্বরের প্রত্যাবর্তনের আশঙ্কা দানা বেঁধেছিল। সেসময় অধিনায়কের কাঁধে ভরসার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন কোহলি। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ‘ভয় কী হে বন্ধু আমি তো আছি!” শনিবার দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোহিত যখন দ্বিতীয় ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফিরলেন, তখন ভারতীয় ইনিংসের প্রয়োজন ছিল শক্ত কাঁধের। কে না জানে, সেই কাঁধ বিরাট কোহলির ছাড়া আর কারও হতে পারে না। তিনি শুধু ইনিংসের হাল ধরে টিম ইন্ডিয়াকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন, তাই নয়। শেষটাও করলেন বিধ্বংসী মেজাজে।
ইনিংসের শুরুটা ঝকঝকে করেছিলেন বিরাট। প্রথম ওভারেই ৩ বাউন্ডারি। কিন্তু দ্বিতীয় ওভার থেকেই ভাঙন শুরু হয়ে ভারতীয় ইনিংসে। পর পর আউট হয়ে যান রোহিত, পন্থ এবং সূর্য। ৩৪ রানে ৩ উইকেট। কোহলি বুঝে যান, তাড়াহুড়ো নয়। জুটি বাঁধা জরুরি। সেটাই করলেন। প্রথমে অক্ষর প্যাটেল পরে শিবম দুবের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন। একটা সময় তাঁর ধীর গতির ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল। অর্ধশতরান যখন করলেন তখন ৪৮ বল খেলে ফেলেছেন। কিন্তু পরের ১১ বলে আরও ২৬ রান যোগ করে শুধু যে নিজের স্ট্রাইক রেট শুধরে নিলেন তাই নয়। ভারতকেও পৌঁছে দিলেন লড়াকু স্কোরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.