Advertisement
Advertisement
ICC T-20 World Cup

মহারণে মজে দুই প্রাক্তনী, রোহিত-আফ্রিদি ডুয়েল দেখবেন বিশ্বনাথ, সূর্যের দিকে চোখ মুদস্সরের

উঁকি দিচ্ছে ৩৭ বছর আগের এক ফাইনালের স্মৃতি। মেলবোর্নে সেবার ভারত জিতেছিল। এবার কী হবে?

ICC T-20 World Cup: Former Indian wicketkeeper Sadanand Viswanath and former Pakistan cricketer Mudassar Nazar reflect strength and weakness of India and Pakistan | Sangbad Pratidin

দু' দেশের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার। মুদস্সর নজর (বাঁ দিকে) ও সদানন্দ বিশ্বনাথ।

Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:October 23, 2022 9:17 am
  • Updated:October 23, 2022 11:35 am  

কৃশানু মজুমদার: ”টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই শিবাকে বলেছিলাম আমরাই চ্যাম্পিয়ন হচ্ছি।” এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলছিলেন ভারতের প্রাক্তন উইকেটকিপার সদানন্দ বিশ্বনাথ (Sadanand Viswanath)। ১৯৮৫ সালে সুনীল গাভাসকরের (Sunil Gavaskar) ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বিশ্বনাথ ও লক্ষ্মণ শিবরামকৃষ্ণণ। ৩৭ বছর আগে মেলবোর্নে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে রূপকথা তৈরি করেছিল ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (ICC T-20 World Cup) সেই মেলবোর্নের মাঠেই আজ মুখোমুখি দুই প্রতিবেশী দেশ।

১৯৮৫-র পর ২০২২। এই দীর্ঘ ৩৭ বছরে গঙ্গা দিয়ে গড়িয়ে গিয়েছে অনেক জল। দু’ দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট যুদ্ধ একেবারেই থমকে গিয়েছে। মাঝের এই সময়ে বিশ্বের অন্য প্রান্তের বাইশ গজে দুই প্রতিবেশী দেশের দেখা হলেও মেলবোর্নের ঐতিহাসিক মাঠে ভারত-পাক ম্যাচের বল গড়ায়নি। রবিবাসরীয় দুপুরে গোটা বিশ্বের নজরে এই স্টেডিয়াম।

Advertisement

 

[আরও পড়ুন: ফেভারিট ভারত! পাকিস্তানকে বিশ্বকাপের দাবিদারদের মধ্যে ধরছেন না সৌরভ]

বিশ্বনাথের চোখও তো থাকবে এই ম্যাচের দিকেই। নস্ট্যালজিক হয়ে যে পড়বেন না তার গ্যারান্টি কী? সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে ম্যাচের আগেরদিন কথা বলার সময়ে রীতিমতো আবেগপ্রবণ বিশ্বনাথ। বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের টুকরো টুকরো স্মৃতি দিয়ে যেন মালা গাঁথছিলেন তিনি, ”সেবার টুর্নামেন্ট শুরুর আগে একটা ঘটনা ঘটেছিল। মেলবোর্নের রাস্তা পার হচ্ছিলাম আমি। ঠিক সেই সময়ে একজন অন্ধ মানুষও রাস্তা পেরোচ্ছিল। আমি ওঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই। তার পরে একটা কফি শপে বসে আমরা জোর আড্ডা দিই। সেই অন্ধ মানুষটাও বলেছিলেন, আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।”

মেলবোর্নের সেই ফাইনালে পাকিস্তানকে মাটি ধরিয়ে সত্যি সত্যিই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। তার পরের দৃশ্য চিরদিনের ফ্রেমে জায়গা করে নিয়েছে। আউদি গাড়ি করে গোটা মাঠ প্রদক্ষিণ করছেন সুনীল গাভাসকর, কপিল দেব, রবি শাস্ত্রীরা। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ায় সেই গাড়ির মালিক হয়েছিলেন শাস্ত্রী। ফাইনাল চলাকালীন পাক অধিনায়ক জাভেদ মিয়াঁদাদ ও শাস্ত্রীর মধ্যে জোর স্লেজিং হয় গাড়ি নিয়ে। বিরাট কোহলিদের প্রাক্তন কোচকে উদ্দেশ্য করে মিয়াঁদাদ বলেছিলেন, ”তু বার বার উধার ক্যায়া দেখ রাহা হ্যায়? গাড়ি কো কিঁউ দেখ রাহা হ্যায়? ও নেহি মিলনে ওয়ালি হ্যায় তেরে কো।” মিয়াঁদাদকে পালটা দেন শাস্ত্রী, ”জাভেদ, মেরি তরফ হি আ রহি হ্যায়।” ম্যাচের শেষে শাস্ত্রীর গাড়িতে উঠে পড়ে গোটা ‘ভারত’। বিশ্বনাথ বলছিলেন, ”আমি, আজহার আর মহিন্দর অমরনাথ গাড়ির একেবারে সামনে বসেছিলাম।”

সেবারের ফাইনাল ছিল ঘটনাবহুল। ভারতীয় দল টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়ার আগের ঘটনাও কম নাটকীয় ছিল না। বিশ্বচ্যাম্পিয়শিপে ভারতীয় দলের অধিনায়ক কে হবেন, তা স্থির করার জন্য চণ্ডীগড়ে বসেছিলেন নির্বাচকরা। গাভাসকরের হাতেই ক্যাপ্টেনের আর্ম ব্যান্ড তুলে দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। বোর্ডের তৎকালীন সচিব রণবীর সিং মহেন্দ্রর গাড়িতে বসে বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপের দল তৈরি হয়েছিল। লক্ষ্ণণ শিবরামকৃষ্ণণ, সদানন্দ বিশ্বনাথের মতো তরুণদের দলে সুযোগ দিয়েছিলেন ভারতের সর্বকালের সেরা ওপেনার।

স্মৃতিরোমন্থন করে বিশ্বনাথ বলছিলেন, ”সেবার টুর্নামেন্ট জেতার পরে এয়ার ইন্ডিয়া আমাদের দারুণ পার্টি দিয়েছিল সিঙ্গাপুরে। ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম মাইলস্টোন ছিল বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপ।” ফাইনালে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে তোলে ৯ উইকেটে ১৭৬ রান। রান তাড়া করতে নেমে ভারত ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয়। পাকিস্তানকে সেই ফাইনালে দাঁড়াতেই দেয়নি ভারত। কিন্তু এতকিছুর পরেও ১৯৮৩-র ২৫ জুন বা ২০১১-র ২ এপ্রিলের সঙ্গে কি একই আসনে বসে ১০ মার্চ, ১৯৮৫? আগেরগুলো বিশ্বজয়ের দিন। আর পরেরটা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ। মেলবোর্নের ফাইনালের দিন দুই এশীয় দেশকে কটাক্ষ করে গ্যালারিতে দেখা গিয়েছিল পোস্টার- “ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল: ট্রাম কনডাক্টরস ভার্সাস বাস ড্রাইভার্স”। 

এ তো গেল অতীতের কথা। আজ তো নতুন লড়াই। কী হবে? কার পাল্লা ভারী? বিশ্বনাথ বলছেন, ”টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কথা কে বলতে পারে? কারও পক্ষেই আগেভাগে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়। মানসিকতায় পরিবর্তন এনে খেলতে নামবে রোহিত শর্মা। এটুকু বলতে পারি শাহিন আফ্রিদির বলে হরাইজন্টাল ব্যাট শট খেলবে না রোহিত। পাকিস্তানের ট্রাম্প কার্ড আফ্রিদি। রোহিত ওকে কীভাবে খেলে, সেটাই দেখব আগ্রহ ভরে। প্রথম ছয় ওভার খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভারত শুরুটা অবশ্যই ভাল করতে চাইবে। হাতে উইকেট থাকলে রান আরও বাড়ানোর চেষ্টা করবে। দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হবে। আশা করব আমাদের ছেলেরাই শেষ হাসি হাসবে। দিনের শেষে কিন্তু জিতবে ক্রিকেট।” কিন্তু সূর্যদেব সত্যিই আজ হাসবেন তো মেলবোর্নের আকাশে? গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া দপ্তর যা পূর্বাভাস দিচ্ছে তাতে রবিবার বরুণদেবের ঝরার কথা। 

[আরও পড়ুন: পাক ম্যাচের আগে অনুশীলনে গড়িমসি! কোহলিদের উপর চরম ক্ষুব্ধ গাভাসকর]

দুই দেশের ক্রিকেটযুদ্ধে আজ আর নেই আগের সেই জিঘাংসা। নেই হিংসের মেঘ। ক্রিকেট নিয়ে যারা বিস্তর রিসার্চ করেন, তাঁরা বলে থাকেন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আসলে ইতিহাসের চক্রব্যূহ। সেই কারণে তিন যুগ আগের এক ফাইনাল ম্যাচ ক্রিকেটভক্তদের কাছে হয়ে উঠেছে এত প্রাসঙ্গিক। ১৯৮৫ সালের ১০ মার্চের ফাইনালে পাকিস্তান শিবিরে ছিলেন মুদস্সর নজর। আজকের ম্যাচ প্রসঙ্গে প্রাক্তন পাক তারকার বক্তব্য, ”বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের রেকর্ড ভাল নয়। পাকিস্তান সবে চাকা ঘোরাতে শুরু করেছে। আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই নামবে পাকিস্তান। দু’ জন ওপেনার ভাল ফর্মে রয়েছে। শাহিন শাহ কতটা ফিট জানি না। আশা করব ও ছন্দেই রয়েছে। রাউফ সমস্যা তৈরি করতে পারে। রোহিত দ্রুত ফিরে গেলে কিন্তু চাপে পড়বে ভারত। তবে এই ভারত কেবল একজন-দু’ জনের উপরে নির্ভরশীল নয়। দলে পাঁচ-ছয় জন এমন ব্যাটার রয়েছে, যারা যে কোনও সময়ে ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। সূর্যকুমার যাদবের খেলা আমার বেশ লাগে। পাণ্ডিয়া রয়েছে। শেষের ওভারগুলোয় ও কিন্তু ভয়ংকর। সব মিলিয়ে ম্যাচটা বেশ উপভোগ্য হবে বলেই মনে হয়। তবে আবহাওয়া কেমন থাকবে কেউ জানে না। আমি চাই পুরো খেলা হোক।”

বিশ্বকাপের ঠিক আগে চোট পেয়ে মেগা টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছেন জশপ্রীত বুমরা। এশিয়া কাপে ভুবনেশ্বর কুমারের মতো অভিজ্ঞ বোলার বিপক্ষের ব্যাটারদের থামিয়ে রাখতে পারেননি। রান বিলিয়েছেন দেদার। ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছে ভারতের হাত থেকে। ভুবির হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখে বিস্মিত মুদস্সর নজরও। তিনি বলছেন, ”ভুবনেশ্বর কুমার বেশ ভাল বোলার। সম্প্রতি ওর বোলিং দেখে আমি হতাশই হয়েছি। তবে রবিবার নতুন দিন। ভুবনেশ্বর কুমার হয়তো জ্বলে উঠবে।”

এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিল ভারত। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরোয়া সিরিজে আবার ভারত স্বমহিমায় ফিরে আসে। অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে এক ওভার হাত ঘুরিয়ে তিন-তিনটি উইকেট নিয়ে শামি শিরোনামে। তাঁর অন্তর্ভুক্তি ভারতের বোলিংয়ের শক্তি বাড়াবে বলেই মনে করেন প্রাক্তন পাক অলরাউন্ডার মুদস্সর।

ভারতের প্রাক্তন পেসার মদনলাল আবার এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে হারকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না। গর্জে উঠে বলছেন, ”তাতে কী হয়েছে? খেলায় তো হার জিত রয়েছে। কেউ জিতবে, কেউ হারবে।” অভিজ্ঞতা থেকে মদনলাল আরও বলেন, ”ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আবেগ, টেনশন, চাপ। আমাদের সময়েও ছিল। টেনশন-প্রেশার হয় বলে জিতব ন, তা তো হয় না। টেনশনকে হ্যান্ডল করতে জানতে হয়। পাকিস্তানের সঙ্গে খেলতে নামলে একটা কথাই আমাদের মনে হত, চলো হারাতে হবে ওদের। মেলবোর্নে ৮৫ সালের ফাইনালের কথাই ধরুন না। আমরা ওদের রান করতেই দিইনি। পরে ব্যাট করতে নেমে আমরা সহজেই রান তুলে ফেলি। তবে ওটা ছিল পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছোট। কিন্তু উইকেট নিয়ে, রান তুলে প্রতিপক্ষের উপর চাপ বাড়াতে হবে। নির্দিষ্ট দিন যে দল এই কাজগুলো ভাল করে করতে পারবে তারাই জিতবে।”

৩৭ বছর নেহাত কম সময় নয়। বিভিন্ন ঘটনার অভিঘাতে মুছে যেতে পারে সোনালি অতীতের সুখস্মৃতি। কিন্তু বিশ্বনাথের হৃদয়ে যে এখনও টাটকা সেই ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত। তিনি বলছিলেন, ”কপিল মারাত্মক বোলিং করেছিল। ঠিক জায়গায় বলটা রাখছিল। শুরুতেই উইকেট তুলে জোর ধাক্কা দিয়েছিল ভারত। তাছাড়া আমাদের ফিল্ডিং দারুণ হয়েছিল। রামিজ রাজার ক্যাচ ধরেছিল শ্রীকান্ত। আজহারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয় মহসিন খান। দলগত পারফরম্যান্সের জোরেই আমরা ম্যাচটা জিতেছিলাম।”

বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ জেতার ১৫ দিনের মধ্যেই শারজায় আরও একবার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। মরুশহরেও ভারতের জয়ের ধারা অব্যাহত ছিল। ভারতের ১২৫ রান তাড়া করতে নেমে পাকি্স্তান থেমে গিয়েছিল ৮৭ রানে। সেবারের চতুর্দেশীয় রথম্যান্স কাপ জিতেছিল ভারত। মুদস্সর নজর বলছিলেন, ”মেলবোর্নের হার আমাদের জোর ধাক্কা দিয়েছিল। তার পরেই শারজায় আমরা হেরে যাই ভারতের কাছে। লো স্কোরিং ম্যাচ ছিল। ভারত খুব অল্প রান করেছিল। সেটাও আমরা তুলতে পারিনি। পরে অবশ্য দীর্ঘসময়ে আমরাই আধিপত্য বজায় রেখেছিলাম।”

ইতিহাসের নিয়মে সেই চাকাও ঘুরে যায়। বিশ্বকাপে ভারতকে খেলার নামে পাকিস্তানের শিরদাঁড়া দিয়েই শীতল স্রোত বইত। বিশ্বনাথ হাসতে হাসতে বলছিলেন, ”২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা মনে পড়ছে? যোগিন্দর শর্মার শেষ ওভারে মিসবা স্কুপ করল, বল গিয়ে পড়ল শ্রীসন্থের হাতে। তার পর থেকে পাকিস্তানের ব্যাটাররা আর স্কুপ মারে না।” মুদস্সর আবার বলছেন, ”ভারতের দলটা খুবই ভাল। কিন্তু বড় কোনও ট্রফি ওরা জেতেনি বহুদিন।” ম্যাচের উত্তাপ গায়ে মাখছেন দু’দেশের প্রাক্তনরা।

সময় এগিয়ে যায়। কালের নিয়মে পরিবর্তন আসে ক্রিকেটে। বদলে যায় নায়কদের মুখ। ভারত-পাক ম্যাচের স্বাদ, গন্ধ, বর্ণ একই থেকে যায়। এই ম্যাচ ফিরিয়ে দেয় হারিয়ে যাওয়া কোনও সময়কে। মিলিয়ে দিয়ে যায় অতীত ও বর্তমানকে।

[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ কে জিতবে? ভবিষ্যদ্বাণী করলেন ‘বাংলার নস্ত্রাদামুস’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement