স্টাফ রিপোর্টার: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সমস্ত বিষয় নিয়েই ‘ফ্ল্যাশ ওপিনিয়ন পোল’ চলে। কিন্তু রোববারের ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট মহাযুদ্ধ নিয়ে নিউ ইয়র্কবাসীর মধ্যে ‘ওপনিয়ন পোল’ চালালে, ক’টা আগ্রহী মুখ পাওয়া যাবে, ঘোর সন্দেহ! সম্প্রতি বিবিসি একটা ‘ভক্সপপ’ করেছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিউ ইয়র্ক নিবাসীদের মন কতটা জয় পেরেছে, তা নিয়ে। কিছুই সাড়া পায়নি। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ নিউ ইয়র্কবাসীর কোনও ধারণাই নেই ক্রিকেট খেলাটা আদৌ খায় না মাথায় দেয়! ভারত বনাম বাংলাদেশ ওয়ার্ম আপ ম্যাচে স্থানীয় কাগজ রিপোর্টিং করেছিল, ম্যাচে ১৮২-১২২ জিতেছে ভারত! ওটাকে যে ৬০ রানে জয় বলে, আমেরিকার কাগজের ক্রীড়া সাংবাদিক জানতেন না!
তা, সে মহল্লায় রোববার ভারত-পাকিস্তান। সে গোলার্ধে এশিয়ার অ্যাসেজ। আইসিসির (ICC) কাছে যা সোনার হাঁস। আমেরিকায় ক্রিকেট চলবে না উঠে যাবে, যে ম্যাচ আজ প্রমাণ দিয়ে যাবে। ভারত-পাক যুদ্ধেও যদি আগ্রহের সঞ্চার না হয়, মাঠ যদি না ভরে, তা হলে মার্কিন ভূমিতে ক্রিকেটের প্রসারের আশা আইসিসির ছেড়ে দেওয়াই ভালো। যদিও চেষ্টা-চরিত্র চলছে। আমেরিকার এশীয়বাসীরা নাকি আজ দলে-দলে নাসাও কাউন্টির মাঠ ভরিয়ে ফেলবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। স্টেডিয়াম নিকটবর্তী সেডার ক্রিক পার্কে দেদার খানাপিনার সঙ্গে খেলা দেখার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন টাঙিয়ে। নিউ ইয়র্ক লং আইল্যান্ডে ভারত-পাক ম্যাচ শেষ না হওয়া পর্যন্ত গাড়ি-ঘোড়া চলবে না। সে আপনার ক্রিকেট ভালো লাগুক বা না লাগুক।
! #TeamIndia gearing up for the #INDvPAK clash in New York #T20WorldCup pic.twitter.com/V9Q3qjsFEa
— BCCI (@BCCI) June 8, 2024
কিন্তু মাঠে দলে-দলে দুই প্রতিবেশী দেশের সমর্থকরা এলেও ভালো ক্রিকেট দেখে ফিরে যেতে পারবেন কি? নাসাও কাউন্টির বাইশ গজ যা ‘জাদু’ দেখাচ্ছে! আয়ারল্যান্ড ম্যাচে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) লেগেছে। ঋষভ পন্থের লেগেছে। যার পর নাসাও কাউন্টির পিচ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে আইসিসি। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আশ্বাস দিয়েছে যে, পিচ চরিত্র বদলে ফেলার প্রবল চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু ভারত অধিনায়কের ‘আস্থা ভোট’ তা পাচ্ছে কোথায়? রোহিত শর্মা তো প্রাক্ ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার বলে দিলেন, নাসাও কাউন্টি পিচ তিনি এখনও বুঝে উঠতে পারেননি! এমনকী কিউরেটর স্বয়ং বুঝতে পারছেন না!
‘‘নিউ ইয়র্ক আমাদের ঘরের মাঠ নয়। আমরা মাত্র দু’টো ম্যাচ খেলেছি এখানে। তাই পিচ কেমন হবে না হবে, বলা মুশকিল। এক-এক দিন পিচ এক এক রকম আচরণ করছে। এমনকী কিউরেটর নিজেও ধোঁয়াশায় রয়েছেন,’’ শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বলে যান রোহিত। ‘‘তাই আমাদের অবস্থাটা বুঝতেই পারছেন! আমরা এটাও জানি না, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোন পিচে খেলা হবে,’’ চিন্তিত সুরে জুড়ে দেন ভারত অধিনায়ক। একা পিচে রক্ষে নেই, দোসর আবার নাসাও কাউন্টি আউটফিল্ড। যা এতটাই মন্থর যে, বল অর্ধেক সময় গড়িয়ে-গড়িয়ে বাউন্ডারির আগেই থেমে যাচ্ছে! রোহিত বলছিলেন, ‘‘আউটফিল্ড বেশ মন্থর। কোনও বল প্রচুর বাউন্স পাচ্ছে আউটফিল্ডে। কোনওটা আবার গড়িয়ে থেমে যাচ্ছে।’’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রথম ম্যাচে কুৎসিত হেরে প্রবল চাপে পড়ে গিয়েছে বাবর আজমের (Babar Azam) পাকিস্তান। রোববার ভারতের কাছে হেরে গেলে টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যেতে পারে পাকিস্তানের। কিন্তু তার পরেও পাক পেস চতুর্ভুজকে হালকা নেওয়ার উপায় নেই। প্রথমত, পাকিস্তান চাপে পড়লে খোঁচা খাওয়া বাঘ। দ্বিতীয়ত, নাসিম শাহ-মহম্মদ আমের-শাহিন শাহ আফ্রিদি-হ্যারিস রউফদের তাঁদের দিনে থামানো মুশকিল। কী করবেন রোহিত? নাসাও কাউন্টির বিকট পিচে পাক পেসাররা তো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতেও পারেন? ভারত অধিনায়ক বলে গেলেন, তাঁরা খেলাটা দক্ষিণ আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়ায় হচ্ছে ধরে নিয়ে মাঠে নামবেন। ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়ায় খেলার সময়ও তো আমাদের নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। সে সব সামলেই তো খেলি আমরা। গাব্বা টেস্ট যেমন একটা বড় উদাহরণ,’’ সাফ জবাব দিয়ে দেন রোহিত। সঙ্গে বুঝিয়ে দেন, ইতিহাস নিয়ে তাঁর কোনও আগ্রহ নেই। আজ পর্যন্ত দুই ফর্ম্যাট মিলিয়ে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৪-১ এগিয়ে ভারত। কিন্তু ভারত অধিনায়ক ও সবে আমল দিলে তো? বরং বলে গেলেন, ‘‘আমি ইতিহাস দেখি না। আর টি-টোয়েন্টিতে যা কিছু হতে পারে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জিম্বাবোয়ের কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ফাইনাল খেলেছিল। তা হলে?’’
ভারত অধিনায়ক ঠিকই বলছেন। কিন্তু একবার যা করেছে, তা পাকিস্তান বারবার পারবে তো? অন্তত বাবর আজমের এ হেন ন্যুব্জ পাকিস্তান?
আজ টিভিতে
ভারত বনাম পাকিস্তান
নিউ ইয়র্ক, রাত ৮.০০
স্টার স্পোর্টস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.