আফগানিস্তান: ২৭২-৮ (শাহিদি ৮০, ওমরজাই ৬২)
ভারত: ২৭৩-২ (রোহিত ১৩১, কোহলি ৫৫*)
ভারত ৮ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লিতে রোহিত রোশনাই। বিরাট কোহলির ঘরের মাঠে রোহিত শর্মা একগুচ্ছ রেকর্ড গড়লেন। আফগানিস্তান বোলিংকে নিয়ে ছেলেখেলা করলেন ভারত অধিনায়ক। পাকিস্তান ম্যাচের আগে ভয় ধরিয়ে দিলেন বাবর আজমের ড্রেসিং রুমে। শাহিন আফ্রিদি কি দেখলেন রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ইনিংস? আহমেদাবাদে পৌঁছে যাওয়া পাকিস্তান এবার কাটাছেঁড়া করুক রোহিতকে নিয়ে, ভারতকে নিয়ে। দিল্লিতে জিতে ভারতের ঠিকানা এবার আহমেদাবাদ। সেখানেই বিশ্বকাপের সব থেকে মেগা ম্যাচ।
অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে রোহিত শর্মা ছন্দে ফিরলেন। মনে করিয়ে দিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপকে। চার বছর আগের বিশ্বকাপে রোহিত শর্মা নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক অন্য উচ্চতায়। এবারের বিশ্বকাপে তিনিই দেশনায়ক। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে রান পাননি। হতাশ হয়েছিলেন নিজে। সমালোচিত হয়েছিলেন।
রক্তাক্ত রোহিত শর্মা দিল্লিতে সব রেকর্ড ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিলেন। ক্রিস গেইলের সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ড ভেঙে বিশ্বরেকর্ডের মালিক হলেন। বিশ্বকাপে সর্বাধিক সেঞ্চুরি লেখা তাঁর নামের পাশে। বিশ্বকাপে হাজার রানের মাইলস্টোনও টপকে গেলেন তিনি। সেই সঙ্গে দলের নেট রান রেটও এগিয়ে রাখলেন। যেদিন রোহিত খেলেন, সেদিন বাকিদের খেলা দেখা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও কাজ থাকে না। এই আপ্তবাক্যকে আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন মুম্বইকর।
শুরুর দিকে তিনি নাকি ঢিলেঢালা ব্যাটিং করেন। পা চলে না ঠিকঠাক। ম্যাচ যত গড়াতে থাকে, রোহিত শর্মা গিয়ার পরিবর্তন করেন তখন। এমনই সব কথা প্রচলিত রয়েছে রোহিত সম্পর্কে। এদিন কিন্তু শুরু থেকেই চলতে থাকে রোহিতের ধ্বংসলীলা। আফগান বোলারদের মাঠের যত্রতত্র ফেললেন। বিশাল বিশাল সব ছক্কা মারতে শুরু করেন। মুম্বইকর রানের গতি বাড়াচ্ছেন। উইকেটের অন্যপ্রান্তে দাঁড়ানো ইশান কিষান তখন দর্শকের ভূমিকায়। রোহিতকে স্ট্রাইক দেওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনও কাজ ছিল না তাঁর। আর ভারত অধিনায়ক ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে গেলেন আফগান বোলারদের।
৬৩ বলে সেঞ্চুরি করেন রোহিত। ভারতীয়দের মধ্যে চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে সাতটি সেঞ্চুরি হয়ে গেল তাঁর। আফগানদের বিরুদ্ধে নামার আগে বিশ্বকাপে হাজার রান থেকে ২২ রান দূরে ছিলেন রোহিত। হাজার রানের মাইলফলকও টপকে গেলেন। ক্রিস গেইলের সব চেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড টপকে নতুন রেকর্ডের মালিক হলেন তিনি।
ইশান কিষাণের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ১৫৬ রান জুড়লেন। মাত্র ১৮.৪ ওভারে ভারত এই রানে পৌঁছয়। ইশান কিষান অল্পের জন্য হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন। ৪৭ রানে ফেরেন তিনি। রোহিত শর্মাকে কিন্তু থামানো যায়নি। তিনি যখন থামলেন তখন ভারতের শিবিরে জয়ের গন্ধ ম ম করছে। মাত্র ৮৪ বলে ১৩১ রান করেন রোহিত। রশিদ খানের গুগলিতে ঠকে গিয়ে বোল্ড হন হিটম্যান। বাকি কাজটা সারেন বিরাট কোহলি ও শ্রেয়স আইয়ার। ঘরের মাঠে সবাই দেখতে এসেছিলেন বিরাট-ব্যাটিং। কোহলি খেললেন অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংস। সেই সঙ্গে নবীন উল হকের সঙ্গে বন্ধুত্বও করে নিলেন তিনি। আইপিএলের শত্রুতায় জল ঢেলে দিলেন তিনি। স্টেডিয়ামে তখন জোর করতালি। ১৫ ওভার বাকি থাকতে ভারত ম্যাচ জিতে নিল ৮ উইকেটে। নেট রান রেটে পাকিস্তানকে টপকে দুনম্বরে উঠে এল ভারত।
আফগানিস্তান প্রথমে ব্যাট করে তোলে ৮ উইকেটে ২৭২ রান। শাহিদি ৮০ ও ওমরজাই ৬২ রান করেন। আফগানদের ২৭২ দেখে মনে হয়েছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক রান। ভারতকে বেগ দিতে পারেন আফগানরা। কিন্তু যেদিন রোহিত শর্মা ঝড় তোলেন, সেদিন দর্শক হয়ে খেলা দেখা ছাড়া কিছু করার থাকে না। বুধবার সেরকমই একটা দিন ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.