ফের একবার ব্যাটে-বলে নজর কাড়লেন নিউজিল্যান্ডের রাচীন রবীন্দ্র। ছবি: টুইটার
শ্রীলঙ্কা: ১৭১ (কুশল ৫১, থিকসানা ৩৮*, ট্রেন্ট বোল্ট ৩/৩৭, রাচীন রবীন্দ্র ২/২১)
নিউজিল্যান্ড: ১৭২/৫ (কনওয়ে ৪৫, রাচীন রবীন্দ্র ৪২, ড্যারিল মিচেল ৪৩)
নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইশ গজে আগাগোড়া দাপট দেখিয়ে শ্রীলঙ্কাকে (Sri Lanka) ৫ উইকেটে হারিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড (New Zealand)। চলতি বিশ্বকাপে (ICC ODI World Cup 2023) আগেই নকআউটে চলে গিয়েছিল ভারত (Team India), অস্ট্রেলিয়া (Australia) ও দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa)। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৯ নভেম্বর এই জয়ের সৌজন্যে সেমিফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল কেন উইলিয়ামসনের (Kane Williamson) দল। এবং এর ফলে কার্যত বিদায়ের পথে পাকিস্তান (Pakistan) ও আফগানিস্তান (Afghanistan)।
শেষ চারের লড়াইয়ে কিউইরা অনেকটা এগিয়ে যাওয়ার পর, আফগানিস্তানের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। পাকিস্তানও ব্যাপক চাপে। কারণ ১১ নভেম্বর ইডেন গার্ডেন্সে ইংল্যান্ডকে শুধু হারালেই চলবে না, মহম্মদ রিজওয়ান-শাহিন শাহ আফ্রিদিদের অনেক বড় ব্যবধানে জিততে হবে। সেই ম্যাচে পাকিস্তান প্রথম ব্যাট করলে তাদের ৩০০ রান তুলতেই হবে। এর পর জস বাটলারের দলকে অলআউট করতে হবে ৩০ রানের মধ্যে। আর ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৩০০ রান স্কোরবোর্ডে তুলে দিলে, পাকিস্তানকে সেই রান মাত্র ৬ ওভারের মধ্যে চেজ করতে হবে! যা অসম্ভব।
তাই ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের মতো, আগামী ১৫ নভেম্বর ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনাল খেলবে। অন্যদিকে ১৬ নভেম্বর ইডেন গার্ডেন্সে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে ১৯৯৯ সালের কাপ যুদ্ধে দুই দল শেষ চারের লড়াইয়ে নেমেছিল।
ফর্মে থাকা ডেভন কনওয়ে এবং রাচীন রবীন্দ্রের কাছে ১৭২ রান চেজ করা জলভাতের মতো ছিল। দুই ওপেনার সেভাবেই ইনিংস শুরু করেছিলেন। মাত্র ১২.২ ওভারে উঠে যায় ৮৬ রান। যদিও সেই সময় ৪২ বলে ৪৬ রানে আউট হন কনওয়ে। এর পর দলের রান যখন ৮৮, তখন ৩৪ বলে ৪২ রানে ফিরে যান চলতি কাপ যুদ্ধে ফর্মে থাকা রাচীন রবীন্দ্র। কেন উইলিয়ামসন বেশি রান করতে পারেননি। তিনি মাত্র ১৪ রানে ফিরে যান। মার্ক চ্যাপম্যানও রান আউট হয়ে যান। তবে এতে জয় পেতে সমস্যা হয়নি। ড্যারিল মিচেল ৩১ বলে ৪৩ রান করেন। গ্লেন ফিলিপস ১০ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ফলে সেই সুবাদে ২৩.২ ওভারেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৭২ রান ৫ উইকেটে তুলে শেষ চার কার্যত নিশ্চিত করে নেয় কিউইরা।
ম্যাচটা জিতলেই খাতায়-কলমে সেমিফাইনালের অনেক কাছে পৌঁছে যাবে কিউইরা। পুরো ম্যাচেই দাপট দেখাল কেন উইলিয়ামসনের দল। বোলারদের দাপটে ৪৬.৪ ওভারে মাত্র ১৭১ রানে অল আউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। বিপক্ষের ব্যাটিংকে ভাঙতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিলেন ট্রেন্ট বোল্ট। কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সমরাবিক্রমা ও চরিথ আসালঙ্কাকে আউট করে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংকে শেষ করে দেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার। নিলেন ৩৭ রানে ৩ উইকেট।
যদিও শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ধাক্কাটা দেন টিম সাউদি। আঙুল ভেঙে যাওয়ায় যিনি বিশ্বকাপের শুরুর দিকে খেলতে পারেননি। ফিট হয়ে ফিরে নিয়মিত উইকেট তুলছেন। এদিন নিজের প্রথম ওভারেই তিনি পাথুম নিশাঙ্কাকে তুলে নেন। ওই ওভারেই কুশর পেরেরার ক্যাচ উইকেটের পিছনে টম ল্যাথাম ফেলে না দিলে উইকেট সংখ্যা বাড়ত সাউদির।
কুশল পেরেরার যখন ক্যাচ পড়ে, কোনও রান করেননি তিনি। তারপর ২৮ বলে ৫১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে যান তিনি। কুশলই শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ স্কোরার।
তবে একটা সময় ১২৮ রানে ৯ উইকেট হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তখন মনে হয়েছিল, ইনিংস শেষ হয়ে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। যদিও দশম উইকেটে ৪৩ রান যোগ করে লড়াই করলেন মহেশ তিকশানা ও দিলশান মধুশঙ্কা। তিকশানা ৯১ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত রইলেন। আর ৪৮ বলে ১৯ রান করলেন মধুশঙ্কা।
তবে এতে লাভ হল না। প্রত্যাশামতোই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালের আরও কাছে চলে গেল নিউজিল্যান্ড। বাবর আজম ও রশিদ খানের দল তাদের শেষ ম্যাচে যথাক্রমে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালেও, দুই দলের নেট রানরেট নিউজিল্যান্ডের তুলনায় অনেক কম। এই মুহূর্তে চার নম্বরে থাকা কিউইদের ৯ ম্যাচে রয়েছে ১০ পয়েন্ট। রান রেট ০.৭৪৩। ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে রয়েছে পাকিস্তান। রান রেট ০.০৩৬। অন্যদিকে ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ছয় রয়েছে ছয় নম্বরে রয়েছেন আফগানরা। রানরেট -০.৩৩৮। শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নামবে আফগানিস্তান। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে মহম্মদ নবিদের শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ তাদের রান রেট মোটেও ভালো নয়। অন্যদিকে পাকিস্তানও বেশ চাপে। ইংল্যান্ডকে হারালেও বাবর আজমের খালি হাতে দেশে ফিরে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.