সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর দু’য়েক পর ঘটনাটা ঘটালে পার পেয়ে যেতে পারতেন ডেভিড ওয়ার্নার (David Warner)! কে বলতে পারে, স্টিভ স্মিথকেও (Steve Smith) হয়তো তখন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব হারাতে হত না! ক্রিকেটের চিরকালীন কলঙ্কের উপাখ্যান কেউ কোনও দিন লিখতে বসলে স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নার কৃত ‘স্যান্ডপেপারগেট’ উপরের দিকেই থাকবে। ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কেপটাউন টেস্টে শিরীষ কাগজ দিয়ে বল ঘষে স্মিথ-ওয়ার্নার শুধুমাত্র যে এক বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হয়ে যান, তা নয়। ক্রিকেটে ফেরার পরেও আন্তর্জাতিক গণরোষের ক্রমাগত শিকার হতে থাকেন। গত অ্যাসেজে (Ashes Series) স্মিথকে ‘প্রতারক’ বলে গালিগালাজ করেছেন ইংরেজ সমর্থকরা। বিশ্বকাপে করেছেন। অথচ ঘটনাটা বছর দু’য়েক পর ২০২০-র ডিসেম্বরে ঘটলে কে বলতে পারে স্মিথ-ওয়ার্নারকে শাস্তি দূরস্থান, সামান্য তিরস্কৃতও হতে হত না?
আশ্চর্য শোনাচ্ছে? কিন্তু করোনা যে তেমনই পরিস্থিতি তৈরি করেছে! করোনা পরবর্তী ক্রিকেট যুগে বল বিকৃতিকে যদি অনুমোদন দিয়ে দেয় আইসিসি (ICC), সেটা খুব অবাক হবে না। কারণ- করোনার প্রভাবে এত দিন বলে লালারস ব্যবহার করে যে মুভমেন্ট আদায় করে নিতেন পেসাররা, তা অন্তত বেশ কিছুদিনের জন্য বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা। আর তারই বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে বল বিকৃতিকে আইনসিদ্ধ করে দেওয়ার ভাবনা। যা ব্যালান্স ফেরাবে ব্যাট-বলের যুদ্ধে। এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটের খবর অনুযায়ী, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার কর্তারা নাকি ভেবে দেখছেন ব্যাপারটা। ভেবে দেখছেন যাতে কিছু কৃত্রিম বস্তু দিয়ে বল বিকৃতিতে অনুমোদন দেওয়া যায় কি না? তবে সেই বস্তু কী কী, কিছুই জানা যায়নি। তবে সেটা হলেও হবে পুরোপুরি আম্পায়ারের উপস্থিতিতে। তিনি দেখবেন, কী হচ্ছে না হচ্ছে। পুরোটাই এখন ভাবনার স্তরে। আসলে টেস্ট ক্রিকেটে লাল বলের পালিশ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তা সে সনাতনী সুইংই হোক কিংবা রিভার্স সুইং।
আইসিসির মেডিক্যাল কমিটি ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে যে, করোনা পর্ব মিটে গিয়ে ক্রিকেট শুরু হলে বলে লালা ব্যবহার করতে দেওয়াটা অতীব ঝুঁকির হয়ে যাবে। যার পরপরই তীব্র টেনশনে পড়ে গিয়েছে ক্রিকেটবিশ্বের পেসারকুল। তাঁদের বক্তব্য, মুভমেন্ট তা হলে পাওয়া যাবে কী ভাবে? অস্ট্রেলীয় পেসার জশ হ্যাজেলউড যেমন বলেছেন, “সাদা বলের ক্ষেত্রে ঠিক আছে। কিন্তু লাল বলে কাজটা খুব কঠিন হয়ে যাবে তখন।” আর এক অস্ট্রেলীয় পেসার প্যাট কামিন্সেরও মনে হচ্ছে, বল পালিশ না করতে পারলে জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাবে পেসারদের। বলা হচ্ছে, সেই কারণেই আইসিসি-র এ হেন ভাবনা। তবে শেষ পর্যন্ত হবে কি না, দ্বিমত আছে। আইসিসি-র এক কর্তা আবার বলেছেন, বল বিকৃতিকে অনুমোদন দেওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। যেমন লালা ব্যবহার করা হত, তেমনই হবে। তবে বেশ কয়েক দিন পর থেকে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.