সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিসিসিআইয়ের মসনদে বসেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর জমানাতেই প্রথমবার ভারতের মাটিতে গোলাপি বলে দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচ খেলতে চলেছে টিম ইন্ডিয়া। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশেরও প্রথমবার পিংক বলে খেলার অভিজ্ঞতা হবে। কিন্তু ইডেন টেস্টের জন্য কেন এসজি কোম্পানির পিংক বলকেই বেছে নেওয়া হল? বিশ্ব ক্রিকেটে পিংক বলের ইতিহাসই বা কী? ২২ নভেম্বর ভারতীয় ক্রিকেটের মক্কায় বল গড়ানোর আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সব খুঁটিনাটি?
১৮০০ শতকে জন্ম নেওয়া টেস্ট ক্রিকেট সময়ের সঙ্গে নিজেকে অনেক বদলে ফেলেছে। জার্সি থেকে খেলার নিয়ম- সবেতেই ছোট-বড় নানা পরিবর্তন এসেছে। আর ২০১৫ বদলে গিয়েছে বলের রংও। অ্যাডিলেডে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গোলাপি বলে খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। এখনও পর্যন্ত গোলাপি বলে হয়েছে মোট ১১টি টেস্ট। যেথানে পেসাররা পেয়েছেন ২৫৭টি উইকেট। স্পিনারদের ঝুলিতে এসেছে ৯৫টি উইকেট। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট তিন দিনেই গুটিয়ে গিয়েছিল। কোনও দলই আড়াইশোর গণ্ডি পেরতে পারেনি।
ইডেন মানেই ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন কোনও রেকর্ড। হরভজন সিংয়ের প্রথম টেস্ট হ্যাটট্রিক থেকে ওয়ানডে-তে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রোহিত শর্মার ২৬৪ রান- সব ইতিহাসেরই সাক্ষী এই ইডেন। আর এবার প্রথম ইডেনের বাইশ গজেই টেস্ট কোহলিরা খেলবেন গোলাপি বলে।
১৯৯৭ সালে গোয়ালিয়ারে প্রথমবার রনজি ট্রফিতে দিল্লি বনাম মুম্বই ম্যাচ হয়েছিল ফ্লাডলাইটে। যদিও সেখানে সাদা বলেই খেলা হয়। তবে গোলাপি বলে প্রথমবার প্রথম শ্রেণির ম্যাচ হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ২০০০ সালে গুয়ানা ও ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর মধ্যে হয়েছিল ম্যাচটি।
ভারতে সিএবি সুপার লিগের চারদিনের ম্যাচে প্রথমবার গোলাপি বলে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান ও ভবানীপুর। ২০১৬ সালে দুলীপ ট্রফি আবার আয়োজিত হয়েছিল ফ্লাডলাইটে।
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক এসজি পিংক বলের খুঁটিনাটি।
১. এতদিন টেস্ট খেলা হত লাল বলে। টেস্ট ক্রিকেটকে আকর্ষণীয় করতে আবির্ভাব গোলাপি বলের। দিন-রাতের টেস্টে এই রঙের বল দেখতেও সুবিধা।
২. টেস্টে ৮০ ওভারের পর বল বদলের নিয়ম রয়েছে। সেই শর্ত পূরণ করছে গোলাপি বল।
৩. বলটি ঝকঝকে করার জন্য এতে বিশেষ ধাতুর স্তর বা ‘ল্যাকার’ দেওয়া হয়। বল শুকিয়ে যাওয়ার পর করা হয় পালিশ। সেই জেল্লাই সুইংয়ে সাহায্য করে। ল্যাকারের জন্য এটি টেকেও বেশি সময়। পুরনো হতে সময় নেয়। লাল বা সাদা বলের তুলনায় গোলাপি বলের স্তর মোটা। ফলে পেসারদের সুবিধা হয়।
৪. এই বল তৈরিতেও তুলনামূলক বেশি সময় লাগে। একটা গোলাপি বল বানাতে লাগে ৭-৮ দিন। অন্য রংয়ের চামড়া শুকিয়ে তার উপর রং করা হয়। গোলাপি চামড়া পাওয়া যায় না বলে আলাদা করে গোলাপি রং করতে হয়। বলের চূড়ান্ত সেলাইয়ের আগে একবার এবং পর আরও একবার রং করা হয়। অতিরিক্ত রং থাকায় মাঝেমধ্যে একে কমলা রঙের দেখায়।
৫. লাল বলের তুলনায় গোলাপি বলের সিম বা সেলাই বেশি চওড়া। ফলে বাড়তি সুইং ও বাউন্স হয়। তবে এই বলে রিভার্স সুইং করা কঠিন।
৬. ইডেনে খেলা হবে এসজি গোলাপি বলে। কোকাবুরা ও ডিউক বলের তুলনায় এর সিম একটু বেশি উঠে থাকে। ফলে স্পিনাররাও ইডেনে বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন।
Kolkata gearing up for the #PinkBallTest 😊😊#TeamIndia #INDvBAN pic.twitter.com/16p66AvHTn
— BCCI (@BCCI) November 20, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.