গৌতম গম্ভীর: ভারত-পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশ হলেও অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মধ্যে তেমন ক্রিকেট-বৈরিতা দেখা যায় না। অথচ ভারত-পাকিস্তান যেমন একে অন্যের কাছে হারতে তীব্র অপছন্দ করে, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডও তাই। উইকিপিডিয়ায় ভারত-পাকিস্তান মহাযুদ্ধ নিয়ে আলাদা পেজ রয়েছে। কিন্তু আদতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড (Australia vs New Zealand) যুদ্ধ অনেক বেশি বিস্তৃত। ক্রিকেটে, রাগবিতে- সর্বত্র এই লড়াইটা চলে। তবে গনগনে ব্যাপারটা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অনেক বেশি। ভেবে দেখেছেন কেন? ওদের যুদ্ধটা কি যথেষ্ট আকর্ষক নয় যা দিয়ে বিজ্ঞাপনী বাজারে ঝড় তোলা যেতে পারে? নাকি স্টেকহোল্ডারদের অর্থনীতি আসল কারণ?
আমার ব্যক্তিগত কিছু ধারণা আছে। বলছি পুরোটা। খেলাধুলোয় যে কোনও বৈরিতাকে বহুদিন ধরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের মাপকাঠিতে বিচার করা হয়ে থাকে। দেখা হয়, উত্তেজনায় সেটা ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে কম, নাকি বেশি। আসলে ১৯৪৭ সালের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বার কয়েক সীমান্তে যুদ্ধ হয়েছে আমাদের। যার প্রভাব পড়েছে ক্রিকেট থেকে অন্যান্য খেলাধুলোয়। আর এখনকার সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ভারত-পাকিস্তান লুডো ম্যাচ হলেও তা নিয়ে সমান প্রচার চলবে, আলোচনা হবে। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটযুদ্ধ আদতে একটা ইন্ডাস্ট্রি হয়ে গিয়েছে। আর কেউ চায় না, এই যুদ্ধের উত্তেজনা এতটুকু কমুক। কারণ, ভারত-পাকিস্তান খেলা হলে টাকা আসে।
তাছাড়া ভারতীয় আর পাকিস্তানিদের ম্যাচটা নিয়ে আবেগও আলাদা। ভারত-পাকিস্তান (India vs Pakistan) ম্যাচ শেষে আমরা একে অন্যকে বলতে পারি না, “তোমাদের ভাগ্যটা আজ খারাপ ছিল।” কিংবা “ভাল খেলেছ।” বিরাট কোহলি একা নয়, আমাদের সবার কাছেই এটা জীবন-মৃত্যুর ম্যাচ। মর্যাদার ম্যাচ। যে আবেগের ফায়দা তুলে চলে যায় বহুজাতিক সংস্থাগুলো। তারা যা খুশি বিজ্ঞাপনী প্রচার চালায়। এই তো, অস্ট্রেলিয়া নিবাসী এক বন্ধুর সঙ্গে কথা হল। বলল, ফাইনালের (T-20 World Cup Final) আগে জীবন সাধারণ ভাবেই চলছে। যেমন আর পাঁচটা দিন চলে। ওদের দুশ্চিন্তা হল, মাঝরাতে উঠে খেলা দেখতে পারবে কি না।
লেখাটা শেষ করি। আমি চাই আজ নিউজিল্যান্ড জিতুক। ওদের খেলা আমার বেশ পছন্দ। তাছাড়া অনলাইনে একটা কিউয়ি জোক পড়লাম, বেশ ভালও লাগল। নিউজিল্যান্ড নিবাসী একজন অস্ট্রেলীয় বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করছে, “অস্ট্রেলিয়ার কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে একটা জোক শুনবে?” তা, সেই অস্ট্রেলীয় বেশ রাগত ভাবেই বলল, “বলো।” কিউয়ি ভদ্রলোকের জবাব, “দুঃখের হল, তোমাদের এখনও কোনও কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিই নেই!”
(দীনেশ চোপড়া মিডিয়া/গেনপ্ল্যান)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.