Advertisement
Advertisement

Breaking News

আজ ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, নিরুত্তাপ ইডেনে যত কাণ্ড পিচ নিয়ে

ভারত নাকি পুরোদস্তুর ব্যাটিং উইকেট চায়।

First T20 match between India and West Indies will take place at Eden Gardens । Sangbad Pratidin
Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:February 16, 2022 10:29 am
  • Updated:February 16, 2022 10:33 am  

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: আচ্ছা, ঠিক কী চলছে ওখানে? ওই জটলায়, ঠিক ইডেন পিচের সামনে, ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) দাঁড়িয়ে যেখানে? বিরাট কোহলি এলেন নাকি?

নাহ্। বোর্ড প্রেসিডেন্ট যখন সন্ধের ইডেনে ঢুকলেন, কোহলি (Virat Kohli) তার অনেক আগে ব্যাগপত্তর নিয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকে গিয়েছেন। মাস দু’য়েক আগে যে দুই ক্রিকেট—চরিত্রের ধুন্ধুমারকে ঘিরে রীতিমতো অশান্ত হয়ে পড়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট, মঙ্গলবারের ইডেনে (Eden Gardens) তাঁদের মধ্যে বাক্যালাপ দূরস্থান, সামান্য চোখাচোখি পর্যন্ত হয়নি। আর বিরাট কেন, কোনও ক্রিকেটারের সঙ্গেই বোর্ড প্রেসিডেন্ট দাঁড়িয়ে নেই। বঙ্গ ক্রিকেটের একঝাঁক হর্তাকর্তার সঙ্গে তিনি দাঁড়িয়ে ইডেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: যৌবনের দূত ‘ডিস্কো কিং’ বাপি লাহিড়ী! তরুণ প্রজন্ম তাঁর গানেই পেয়েছিল সমকালের হৃদস্পন্দন]

আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ—নিস্তেজ একটা ক্রিকেট যুদ্ধকে ঘিরে যে বিতর্কের মশালে এত বড় অগ্নিসংযোগ হতে পারে, স্রেফ ভাবা যায়নি। ক্রিকেটীয় দিক থেকে বুধবার থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শুরু হতে চলা টি—টোয়েন্টি সিরিজের তবু একটা আগ্রহ আছে। মাস আটেকে আর একটা টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসছে। ক্রিকেটারদের সবাইকে খেলিয়ে—খেলিয়ে কম্বিনেশনের খসড়া তৈরি করতে হবে। বিরাট কোহলির দু’বছরের সেঞ্চুরি—উপোস শেষ পর্যন্ত কাটে কি না, দেখতে হবে। কিন্তু আবহে আগ্রহের ছিটেফোঁটাও নেই। মাঠে দর্শকই আসবে না, লম্ফঝম্ফ করে আর লাভ কী? এ সব দিনে লেখাই কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু কে জানত, পারিপার্শ্বিকের যাবতীয় ক্রিকেট—বৈরাগ্যকে এক ঝটকায় সরিয়ে বিতর্কিত আত্মপ্রকাশ ঘটাবে ইডেন পিচ? বাকি সব কিছুকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে?

বিরাট—ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করায় রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) মিডিয়াকে শাপ—শাপান্ত। টিমের সতীর্থদের মগজ থেকে আইপিএল তাড়িয়ে দেশজ ক্রিকেটে নতুন ভারত অধিনায়কের মন দিতে বলা। ইডেনের বরপুত্র হয়েও ইডেন—আবেগকে ‘আত্মজ’ রোহিতের বিন্দুমাত্র পাত্তা না দেওয়া। নেটে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলির দু—দু’বার বোল্ড হওয়া (একবার দীপক চাহারের বলে, একবার ঘাতক হরপ্রীত ব্রার)। দিন শেষে কোথায় এ সব? ভাবছে কে? শুনছে কে? কথা বলছে কে?

ইডেন বাইশ গজ নিয়ে একটা চোরা গণ্ডগোল যে চলছে, সোমবারই বোঝা গিয়েছিল। শোনা যাচ্ছিল, ভারতীয় টিম নাকি মৃদু অসন্তুষ্ট বাইশ গজের ঘাস নিয়ে। আর এ দিন যা হল, সব সামনাসামনি। সর্বপ্রথম দুপুরে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্র্যাকটিসে। তার পর ভারতীয় প্র্যাকটিসে। কায়রন পোলার্ডরা যে প্র্যাকটিস পিচে নেট করছিলেন, সেখানে ব্যাট করতে গিয়ে চোট পান পরপর দু’জন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার। এবং ফাবিয়েন অ্যালেন। বল লাফিয়ে দু’জনেরই তলপেটে লাগে এবং মুহূর্তে পপাত ধরণীতল!

নেট সেশন শেষ করে কায়রন পোলার্ডকে দেখা গেল, কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে ইডেন কিউরেটরের দিকে যেতে। ক্লাবহাউস আপার টিয়ারে দাঁড়িয়ে মুখের জ্যামিতি বোঝা সম্ভব হয়নি। কিন্তু শরীরী ভাষা দেখে পোলার্ডরা অতীব প্রসন্ন, তা—ও মনে হয়নি! দু—পাঁচ মিনিট নয়, ইডেন কিউরেটরের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা চালান পোলার্ডরা। পরে শোনা গেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ নাকি প্র্যাকটিস পিচ নিয়ে অসম্ভব ক্ষুব্ধ। এমনকী তারা নাকি এটাও বলে এসেছে যে, এ রকম অসমান বাউন্সের প্র্যাকটিস পিচ তাদের দেওয়া হয়েছে কোন যুক্তিতে?

ভাগ্য ভাল যে, বড়সড় কিছু হয়নি। হোল্ডার—আ্যালেন দু’জনেই খেলার জায়গায় আছেন। কিন্তু পিচ বিতর্ক নিয়ে এখানেই রেহাই পায়নি ইডেন। ভারতের প্র্যাকটিসে আসার কথা ছিল এ দিন বিকেলে। এবং মাঠে রাহুল দ্রাবিড়রা পদার্পণ করার আগেই দেখা যায়, ইডেনে ঘাস ছাঁটা চলছে। দ্রাবিড় এসে পিচ দেখার পর জল দিয়ে পিচ রোল করাও ফের শুরু করা হল। ভারত নাকি পুরোদস্তুর ব্যাটিং উইকেট চায়। আসলে গতকাল যা শোনা গিয়েছিল, তা আদতে হিমশৈলের চূড়ো মাত্র। সিএবি কর্তারা কিছুতেই স্বীকার করছেন না যে, পিচ নিয়ে সামান্যতম গণ্ডগোল হয়েছে। ইডেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ও কিছু বলতে চাইলেন না। কিন্তু অদ্ভুত হল, সিএবির লোকজনই আবার বিতর্ক নিয়ে বলছে। রাখঢাক নয়, সরাসরি বলছে!

শোনা গেল গতকাল ভারতীয় টিম নাকি পিচ দেখে এতটাই অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ে যে, ইডেন কিউরেটরকে সরাসরি বলে এত ঘাস রাখা হয়েছে কেন? টিমে কোনও আগুনে গতির পেসার নেই। ঘাস রেখে লাভ কী? পূর্বাঞ্চলের প্রধান কিউরেটর আশিস ভৌমিককেও নাকি নানাবিধ প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। তিনি আমতা—আমতা করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যার পরিণতি–এ দিন গোটা বিকেলজুড়ে ঘাস ওড়ানোর পর্ব। সন্ধের দিকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও দেখা গেল ইডেন কিউরেটরের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে। কিন্তু তার পরেও শঙ্কিত ওয়াকিবহাল মহল বুঝতে পারছে না, বুধবারের ইডেন পিচ ঠিকঠাক দাঁড়াল কি না? অনেকেই বলাবলি করছেন যে, একে তো এই পিচে কোনও খেলাই হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেট হয়নি। কোনও টিমের প্র্যাকটিসও হয়নি। তার উপর আবার অর্ডারি পিচ। শেষ পর্যন্ত না সব তালগোল পাকিয়ে যায়!

কী হবে, কী হবে না, জানতে আর চব্বিশ ঘণ্টা। কিন্তু রাতের ইডেন ছেড়ে বেরনোর সময় একটা কথা বারবার মনে হচ্ছে। ইতিহাস বলে, নিস্তেজ—নিরুত্তাপ ম্যাচে ইডেন সব সময়ই কিছু না কিছু দিয়ে এসেছে। চিরকাল অপ্রত্যাশিতই থেকেছে প্রত্যাশিত। না বিশ্বাস করলে, রোহিত শর্মার বিশ্বরেকর্ডের ম্যাচটাকেই মনে করুন। ইডেনে সেই শ্রীলঙ্কা ম্যাচের কোনও গুরুত্ব ছিল? সিরিজ জিতে সে বার খেলতে নেমেছিল ভারত। এবারও কি ইডেনের ক্রিকেট—মেনুতে তেমন কিছু? এবারও কি চিরাচরিত অপ্রত্যাশিত? এবার বিতর্ক নয় তো?

[আরও পড়ুন: কিশোর কুমারের প্রয়াণের পর গান ছাড়তে চেয়েছিলেন, ফিরে দেখা বাপিদার জীবনের অজানা গল্প]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement