স্টাফ রিপোর্টার: বছর কুড়ির শোয়েব বশিরকে ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকস (Ben Stokes) সর্বপ্রথম মাঠে নয়, দেখেন টুইটারে (বর্তমানে এক্স)! আজ্ঞে হ্যাঁ, সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিওয়! যেখানে স্যর অ্যালিস্টার কুককে বল করছিলেন তরুণ স্পিনার বশির। ইংল্যান্ডের কাউন্টি কভারেজ অসম্ভব ভালো। প্রতিটা ম্যাচের ডিজিটাল ফুটেজ রাখা থাকে। তা স্টোকস, সেই ভিডিও দেখার পর চটজলদি সেটা টিমের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দেন। শেষে কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, ‘এর খেলাটা একটু দেখো পারলে। এই ছেলেকে ভারত সফরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।’
পাকেচক্রে শোয়েব বশিরের সেটাই প্রথম কাউন্টি ম্যাচ ছিল। গত বছরের জুন মাসে। খেলতে নেমেছিলেন এসেক্সের বিরুদ্ধে। আহামরি করেননি কিছু। ৩৫ ওভারে ১২৮ রান দেন। পান এক উইকেট। অথচ সেই একটা ভিডিওই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বশিরের কি না কেরিয়ার তৈরি করে দিল!
রাঁচি টেস্টে এখনও পর্যন্ত ইংরেজ দাপটের নেপথ্যে কৃতিত্ব নিরিখে বশির যেমন আসবেন, তেমনই আসবেন জো রুট (Joe Root)। সেই রুট, যাঁর কি না রাঁচি টেস্টের প্রথম ইনিংসের আগে সর্বোচ্চ রান ছিল ২৯! রাঁচিতে রুট অপরাজিত সেঞ্চুরি করলেন। ১২২ নটআউট থাকলেন। টিমকে বাঁচিয়ে তুলে টেস্ট জয়ের সম্ভাবনার মুখে দাঁড় করিয়ে দিলেন। ছুঁড়ে ফেললেন সেই সমস্ত সমালোচনার বাঘনখকে, যা বের হয়েছিল রাজকোটে তৃতীয় টেস্টে, জসপ্রীত বুমরাকে মারা তাঁর ‘কালান্তক’ রিভার্স স্কুপের পর। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে রুট বলেও গেলেন, ‘‘আমি জানি, ওই শট খেলার দায় সম্পূর্ণ আমার। রাজকোটে রিভার্স স্কুপ খেলেছি বলে আমার কোনও সমস্যা নেই। শট নির্বাচনে ভুল ছিল না। শটটা যে ভাবে খেলেছি, সেটা ভুল ছিল। ওই শটটা আমি অনেক ভালো খেলতে পারি। আর ‘বাজবল’ মোটেও ঔদ্ধত্য নয়। ‘বাজবল’ আমরা বলিও না। আপনারা, মিডিয়ার লোকজন সেটা বলেন। আমরা স্মার্ট ভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাই।’’
কিন্তু তার পরেও ম্যাচের নায়ক রুট নন, বছর কুড়ির বশির। যিনি ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড চূর্ণবিচূর্ণ করে দিলেন। যশস্বী জয়ওয়াল, শুভমান গিল, রজত পাতিদার, রবীন্দ্র জাদেজা-এঁরা সবাই বশিরের ঘূর্ণির ‘শিকার’। যাক গে, কথা হল সেই ভিডিও স্টোকস না দেখলে কি বশির ভারত সফরে আসতে পারতেন না? পারতেন হয়তো। হয়তো পারতেন না। এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ওই ভিডিও দেখার পরই বশিরকে ইংল্যান্ড লায়ন্সের সঙ্গে আগে ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখান থেকে মূল টেস্ট স্কোয়াড। এখানে ব্র্যাডলি অ্যাডামস নামক এক ভদ্রলোকেরও বড়সড় ধন্যবাদ প্রাপ্য। মহাশয় কাউন্টি ডিজিটাল টিমে কাজ করেন। তরুণ স্পিনারের বোলিং দেখে আগ্রহী হয়ে পড়ে ব্র্যাডলিই এক বন্ধু মারফত এআই ব্যবহার করে অ্যালিস্টার কুককে সে দিন করা বশিরের প্রতিটা বল, ডিজিটাল প্যাকেজের পোস্টে রেখেছিলেন। যা চতুর্দিকে ভাইরাল হয়ে যায়। ক্রমে যা চোখে পড়ে স্টোকসের। অতঃকিম? কী আর, সোশ্যাল মিডিয়া শুধুই ‘আমিত্ব’র আখড়া নয়। কখনও কখনও তা শোয়েব বশিরদেরও খোঁজ দেয়, যাতে উপকৃত হয় ক্রিকেট!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.