রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: দু’শো কেজি চাল-ডাল।
দশ-পনেরো টিম সর্ষের তেল।
দুর্গা প্রতিমা গড়ার খরচ।
প্রাত্যহিক প্রসাদ হিসেবে কুড়ি কেজি করে বোঁদে সরবরাহ।
কী ভাবছেন? আসন্ন দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে কলকাতার কোনও ক্লাবের ফর্দ তৈরির কাজ চলছে? কবে কী লাগবে, কতটা লাগবে, অর্থ কী করে জোগাড় হবে, তার ‘ব্যালান্স শিট’ তৈরি হচ্ছে? তা, ভাবনাটা আংশিক ঠিক। আবার আংশিক ভুল। ফর্দটা এক ক্লাবের দুর্গাপুজোরই। তবে কলকাতার নয়। রাঁচির। এবং উপরে যা যা লেখা হল, তার জোগান দিচ্ছেন একজন। যিনি গোটা ভারতবর্ষের ‘আত্মার আত্মজ’। আসমুদ্রহিমাচলের এক ভালোবাসার ‘সাত নম্বর’।
ধোনি, মহেন্দ্র সিং ধোনি!
বিস্মিত লাগছে? তা লাগতে পারে। তবে এটা সত্যি যে, রাঁচির এক দুর্গাপুজোর সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে হলেও এবার জড়াচ্ছেন ধোনি। অন্তত তাঁর শৈশবের কোচ কেশব বন্দ্যোপাধ্যায় তেমনই বলছেন। ‘এম এস ধোনি, দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ সিনেমাখানা যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের কেশবকে চেনা উচিত। এমএসডি-র ক্রিকেট সফরে গুরু কেশবের অবদান কতটা ছিল, জানা উচিত।
আসলে ক্রিকেট পৃথিবীর সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধিনায়কের স্তরে উন্নীত হলে কী হবে, ধোনি আজও মাটির কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করেন। যে কারণে যশ-খ্যাতির শীর্ষে বিচরণ করার পরেও শৈশবের কোচের সঙ্গে যোগাযোগ কখনও বিচ্ছিন্ন হয়নি ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর। রাঁচির দক্ষিণ অফিস পাড়ায় নিবাস কেশবের। শোনা গেল, এবার রাঁচির অফিস পাড়া আয়োজিত দুর্গোৎসবের দায় ও ভার এসে পড়েছে কেশবের কাঁধে। কিন্তু দুর্গাপুজো করব বললেই তো আর করা যায় না। পুজো আয়োজনের খরচ প্রচুর। দুর্গাপুজো (Durga Puja 2024) করতে গেলে লোকবলের পাশাপাশি অর্থবলও লাগে। যে কারণে বিখ্যাত শিষ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কেশব।
‘‘মাহি (ধোনির ডাকনাম) অনেক কিছুরই বন্দোবস্ত করে দিচ্ছে। ভোগের খিচুড়ির জন্য দু’শো কেজি চাল-ডাল লাগবে। রান্না করতে তেল লাগবে। প্রতিদিন প্রসাদের জন্য কুড়ি কেজি করে বোঁদে লাগবে। সবই মাহি দিচ্ছে। তার উপর ধরুন, দুর্গাপ্রতিমা গড়ার খরচ। সেটাও ও-ই দিচ্ছে,’’ রাঁচি থেকে ফোনে বলছিলেন কেশব।
কিন্তু তাতেও পুরোটা নাকি ‘ম্যানেজ’ করা যাচ্ছে না। বরং দেড় লক্ষ টাকার ঘাটতি রয়েছে এখনও। ‘‘চেষ্টা করছি যতটা পারা যায় জোগাড় করতে। আমাদের পুজোর বাজেট আট লক্ষ টাকা। এখনও প্রায় লাখ দেড়েক টাকা জোগাড় করতে হবে। কাউকে যেচে বলছি না, আমরা পুজো করব, টাকা দিন। সহৃদয় কেউ যদি সামর্থ্য অনুযায়ী দেন, তা হলে দেবেন,’’ সঙ্গে যোগ করেন কেশব। কিন্তু বিখ্যাত ছাত্রকেই তো বললে পারেন। এত ঝঞ্ঝাটে না গিয়ে। জবাবে উত্তর আসে, ‘‘আর কত বলব? কম তো কিছু করছে না মাহি। এরপর বাকি যতটা আমরা পারব, করব।’’ ফোন ছাড়ার আগে ধোনির গুরুকে জিজ্ঞাসা করা হয়, অফিসপাড়ার পুজোয় তাঁর ভুবনবিখ্যাত শিষ্য আসতে পারেন কি না? শুনে কেশব হেসে বলেন, ‘‘আসতে পারে কিন্তু।’’
দেখা যাক। দেখা যাক, রাঁচির অফিসপাড়ার পুজোয় মহেন্দ্র মহাশয়ের আবির্ভাব ঘটে কি না? শেষ পর্যন্ত তিনি আসেন কি না? এলে আর দেখে কে!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.