সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি সবচেয়ে কম রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ছ’টি উইকেট। তার মধ্যে আবার উইকেট নেওয়ার হ্যাটট্রিকও করেছেন। আর সেই সৌজন্যেই র্যাঙ্কিংয়ে এক লাফে অনেকখানি উন্নতি করলেন দীপক চাহার। আইসিসির সদ্য প্রকাশিত টি-টোয়েন্টি বোলারদের তালিকায় ৮৮ ধাপ উঠে ৪২ নম্বর স্থানটি দখল করে নিয়েছেন তরুণ তারকা।
নাগপুরে সবে তখন ম্যাচ শেষ হয়েছে। তাঁর বিধ্বংসী স্পেলের রেশ পুরোপুরি কাটেনি। তাঁর বোলিংয়ের সামনে নাস্তানাবুদ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটিং অর্ডার। ভেঙে পড়েছে তাসের ঘরের মতো। কিন্তু, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাঁর শরীরীভাষা দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। হ্যাঁ, তিনি ঠিক এতটাই নির্লিপ্ত। মুখে চড়া হাসি। আবেগপ্রবণ গলা। সবে এক টুকরো ইতিহাস ছুঁয়ে উঠেছেন। প্রথম ভারতীয় পেসার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করেছেন। কিন্তু, তাতেও মুখে বাড়তি উচ্ছ্বাস নেই।
তিনি, দীপক চাহার। ছয় উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সেরা স্পেল উপহার দিয়েছেন। যা নিয়ে দীপক বললেন, ‘আমি কোনওদিন স্বপ্নেও দেখিনি হ্যাটট্রিক করছি। ছোটবেলা থেকে লক্ষ্য ছিল আমায় খাটতে হবে। ভাল লাগছে আজ আমার সমস্ত খাটনি সার্থক হল দেখে।’
নিজের চার ওভারের মধ্যে আজ প্রতিটাতেই উইকেট নিয়েছেন চাহার। যাঁর শিকার ছিল লিটন দাস, সৌম্য সরকারের মতো ব্যাটসম্যানরা। একার হাতে টপ অর্ডার যেমন ভাঙলেন। আবার হ্যাটট্রিক করে ম্যাচটাও শেষ করলেন। চাহার বলছেন, ‘রোহিত ম্যাচের আগেই বলেছিল গুরুত্বপূর্ণ ওভারগুলো আমাকে বল করতে হবে। আমি চেষ্টা করেছি প্রতিটা ডেলিভারি যেন নিখুঁত হয়। ভাল লাগছে আমার হ্যাটট্রিক দলকে সিরিজ জিতিয়েছে।’
শুধুমাত্র ম্যাচের সেরা হওয়াই নয়। একইসঙ্গে সিরিজ সেরাও সিএসকে-র পেসার। চাহারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা আবার বললেন, ‘বোলাররাই আজ আমাদের ম্যাচটা জেতাল। এমনিতেই শিশির পড়ছিল। বল গ্রিপ করতে সমস্যা হচ্ছিল। তার উপর বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের ৮ ওভারে মাত্র ৭০ রান বাকি ছিল। ওই সময় মনে হচ্ছিল ওরা জিতে যাবে। তাতেও আমাদের বোলাররা হাল ছাড়েনি। উইকেট তুলেছে। দলের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট।’
দীপকের বোলিং যদি জয়ের ফিনিশিং টাচটা দিয়ে থাকে তা হলে মঞ্চটা তৈরি করলেন লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়স আইয়ার। যাঁদের অনবদ্য পার্টনারশিপ দলকে ১৭০ রান টপকাতে সাহায্য করে। যা নিয়ে রোহিত যোগ করেন, ‘রাহুল আর আইয়ার যেমনভাবে খেলল ওদের প্রশংসা করতেই হবে। দলের থেকে এমন আশাই রাখি আমি। সব সময় চাই ব্যক্তিগত প্রতিভারা যাতে দায়িত্ব নিয়ে খেলে। আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে এমন পারফরম্যান্স দেখলে ভরসা পাওয়া যায়। কোনও সন্দেহ নেই যে এমন পারফরম্যান্স যদি নিয়মিত দেখা যায় তা হলে বিরাট (বিরাট কোহলি) আর নির্বাচকদের সমস্যা বাড়বে। কাকে ছেড়ে কাকে নেবে। কারণ সবাই এত দক্ষ।’
আর বাংলাদেশ? যাদের শেষ আট উইকেট পড়ল ৩৪ রানে। নাগপুরে সিরিজ হেরে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বললেন, ‘আমরা খুব দ্রুত উইকেট হারিয়েছি। আর সেটাই দিনের শেষে সমস্যায় ফেলে দেয়। নঈমের প্রশংসা অবশ্যই করব। দারুণ একটা ইনিংস খেলল। বিশ্বাস রাখি নঈমের ব্যাটে এমন ইনিংস ভবিষ্যতেও দেখা যাবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.