স্টাফ রিপোর্টার: আইপিএল কি এবছর আদৌ হবে? নাকি এবার বন্ধ করে পরের বছর নতুন করে শুরু করবে বিসিসিআই? এই প্রশ্ন এখন ভারতীয় ক্রিকেট মহলে। এদিন মুম্বইয়ের ক্রিকেট সেন্টারে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সভা হয়ে গেল। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির বক্তব্য শুনে বোর্ড এবার নতুন রূপরেখা ঘোষণা করবে। তবে করোনা ভাইরাস যেভাবে বিশ্বব্যাপী থাবা বসিয়েছে, তাতে অনেকে মনে করছেন আইপিএল হওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। এদিকে, শনিবারই বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রয়োজন পড়লে আইপিএলের সূচি কাটছাঁট করা হতে পারে। অর্থাৎ ছোট করা হতে পারে এবারের আইপিএল।
বলা হচ্ছে, দিন দশেক পর বোর্ড নতুন করে ক্রীড়াসূচি প্রকাশ করবে। এবং প্রত্যেকদিন দুটো করে ম্যাচ হবে। তার মানে বিকেল চারটের পর রাত আটটায় খেলা হবে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন, ক্লাবগুলি কি এই শর্তে রাজি হবে? কেকেআর কর্ণধার শাহরুখ খান জানিয়েছেন, “এই অবস্থায় সবার আগে মানুষ অগ্রধিকার পাবে। তাঁদের কথা আগে ভাবতে হবে। আশা করব, অন্যবারের মতো আইপিএল হবে।” ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) জানিয়েছে, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আইপিএল মুলতুবি রাখা হল। তারপর শুরু করা যাবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ঘোষণা করেছে, ১৫ এপ্রিলের মধ্যে বিদেশিদের দেশের মাটিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তাই বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে আইপিএল চালু করার প্রশ্ন নেই।
কিন্তু যা বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে, এবছর আদৌ আইপিএল চালু করা যাবে? বোর্ডের প্রভাবশালী এক কর্তা যা বলছেন তাতে আইপিএল শুরু হওয়া নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেন? “যদি ২০ এপ্রিল থেকে আইপিএল শুরু করতে হয় তাহলে ১০ এপ্রিল কাজে নামতে হবে। ২০ এপ্রিল যদি টুর্নামেন্ট শুরু করতে না পারি, তাহলে এবছর আইপিএল করা যাবে না। পরের বছরের কথা ভাবতে হবে।” এ কথা জানিয়েছেন বোর্ডের এক কর্তা। আইপিএলের জন্য ছ’সপ্তাহের উইন্ডো খোলা রাখে আইসিসি। সেই উইন্ডোর তারিখ হল, ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে। অর্থাৎ এই সময়ের মধে্য আইপিএল শেষ করতে হবে। টুর্নামেন্টের ৬০টা ম্যাচ যদি এই সময়ের মধ্যে করা না যায়, তাহলে মুশকিলে পড়বে বিসিসিআই। আইসিসির ক্যালেন্ডারের পরের ম্যাচগুলির তারিখ আগেই ঘোষণা করা হয়েছে।
এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু’র কর্তারা বলছেন, করোনার প্রকোপ এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে কমবে বলে মনে হয় না। তার মানে প্রকোপের মাত্রা বাড়তে পারে বা এমনই থাকবে। তাহলে ১৫ এপ্রিলের পর খেলা কীভাবে শুরু হবে? আরও একটা সমস্যা বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে, ভারতে ঢোকার ভিসা বিদেশিরা পাবেন ১৫ এপ্রিলের পর। মাত্র পাঁচদিন প্র্যাকটিস করে টুর্নামেন্টে দলগুলি কীভাবে খেলবে? ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও চাইবে না, বিদেশি ক্রিকেটার বা কোচদের বাইরে রেখে আইপিএল খেলতে। তাই ২০ এপ্রিলের আগে খেলা শুরু সম্ভব নয়। এদিন ফ্র্যাঞ্চাইজিরা বসছেন আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সভায়। সেখানে তাঁরা বিদেশিদের বাদ দিয়ে খেলা করা যায় কিনা, তা নিয়েও আলোচনা করবেন। বোর্ড সচিব জয় শাহ বলেছেন, তাঁরা পুরো বিষয়টার উপর নজর রাখছেন। “আমরা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে শুরু করে বিদেশমন্ত্রক সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। এ ব্যাপারে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা উচিত তাই করছি।” জানিয়েছেন জয় শাহ।
ফ্র্যাঞ্চাইজিরা বিদেশি কোচ বা ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে আইপিএলে মাঠে নামবে না, এটা পরিষ্কার। সুতরাং আইপিএল গভীর সংকটের মুখে। তবে শোনা যাচ্ছে, বি টু ভিসা নিয়ে ক্রিকেটার বা সাপোর্ট স্টাফদের দেশে নিয়ে আসার কথাও ভাবা হচ্ছে। তা হলে আগাম প্রস্তুতিতে বাধা আসবে না। ১৫ এপ্রিলের পর আইপিএল শুরু করা মানে টুর্নামেন্ট দু’সপ্তাহ পিছিয়ে যাওয়া। সেক্ষেত্রে ফাইনাল জুনের প্রথম সপ্তাহে হবে। ৪ বা ৫ জুন ফাইনাল হতে পারে। সেটা হলেও সমস্যা। কারণ, ৪ জুন ইংল্যান্ড দেশের মাঠে টেস্ট সিরিজ খেলতে নামবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ইসিবি আগেই আইপিএলে খেলতে আসা ক্রিকেটারদের জানিয়ে দিয়েছে, ২৬ মে’র মধ্যে দেশে ফিরতে হবে। এটা করোনা ভাইরাসের আগে অসুবিধা ছিল না। কারণ, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল ২৪ মে। এখন পরিস্থিতি বদলে যেতে অনেক কিছুর বদল দরকার। জুনে ফাইনাল হলে ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের বাইরে রেখে দলগুলি কি মাঠে নামতে রাজি হবে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.