ছবি AFP
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাঠের ভিতরে যেমন তিনি বর্ণময়, তেমনই সবুজ গালচের বাইরেও তিনি ছিলেন রঙিন এক মানুষ। বিতর্ক, নারী সঙ্গ, মাদকযোগ, ফিক্সিং সব কিছুতেই নাম জড়িয়েছিল শেন ওয়ার্নের (Shane Warne)। তবুও মাঠের ভিতরে তাঁর কীর্তি চিরকাল অমলিন থেকে যাবে।
২০০৩ সালে বিশ্বকাপের ঠিক আগে ডোপ টেস্টে ধরা পড়েন ওয়ার্ন। সেবার দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ার ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে তাঁকে দেশে ফিরে আসতে হয়। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিষেধাজ্ঞায় পড়েন তিনি। তারও আগে ২০০০ সালে জনৈক ব্রিটিশ মহিলাকে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ আসে ওয়ার্নের বিরুদ্ধে। তার জেরে সহ অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ওয়ার্নকে। কিংবদন্তি লেগ স্পিনারের সিগারেট প্রীতির কথা সবারই জানা। ২০০৮ নিউজিল্যান্ড সফরের সময়ে ধূমপানরত অবস্থায় তাঁর ছবি সামনে আসে। তা নিয়ে ঝামেলায় জড়ান ওয়ার্ন। কেননা নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় ধূমপানকে বিদায় জানানোর কথা ছিল তাঁর। খামখেয়ালিপনা যেন তাঁর মজ্জাগত।
১৯৯৫ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত সিমোন কালাহানের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে ছিলেন ওয়ার্ন। বিচ্ছেদের পরে ২০০৭ সালে তাঁরা আবার একসঙ্গে থাকবেন এমন গুঞ্জন শোনা যায়। কিন্তু আবার বিপত্তি। অন্য এক মহিলাকে মেসেজ পাঠাতে গিয়ে কালাহানকেই তা পাঠিয়ে দেন ওয়ার্ন। তার পরই সব সম্পর্ক ছিন্ন করে কালাহান ইংল্যান্ডে চলে যান। অবশ্য ওয়ার্নের রঙিন জীবন তাতে ফিকে হয়নি। শোনা যায়, অভিনেত্রী লিজ হার্লির (Elizabeth Hurley) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার। অন্য এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগে লিজ হার্লিও তাঁকে ছেড়ে চলে যান।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গেও নাম জড়িয়েছিল ওয়ার্নের। ১৯৯৪ সালে ভারতীয় বুকি জন ওরফে মুকেশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহের অভিযোগ ওঠে তাঁর ও মার্ক ওয়ার বিরুদ্ধে। যদিও তা নিয়ে জলঘোলা হলেও পরবর্তীকালে সে সবকে বিশেষ পাত্তা দেননি ওয়ার্ন। বরং বলেছিলেন, ”ও এমন কিছু ব্যাপার নয়।”
১৯৯৪ সালের করাচি টেস্টে ওয়ার্নকে খারাপ বল করার জন্য ঘুষ দিয়েছিলেন সেলিম মালিক। এমনটাই অভিযোগ ছিল ওয়ার্নের। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া মোটা অংকের জরিমানা করে ওয়ার্ন ও মার্ক ওয়াকে। যা দেখে পাকিস্তানের সেলিম মালিক বলেছিলেন, সেটাই নাকি তাঁর জীবনের সবথেকে সুখের মুহূর্ত। কেননা তিনি যখন কেরিয়ারের শীর্ষে ছিলেন তখন এই ঘটনার জেরে তাঁর ক্রিকেট জীবনে ইতি ঘটে।
তিনি কিংবদন্তি। মাঠের ভিতরে তাঁর পারফরম্যান্স চিরকাল স্মরণীয় হয়েই থাকবে ক্রিকেটের ইতিহাসে। তবে মাঠের বাইরে তাঁর কীর্তি চিরকালই কৌতূহল জাগাবে বিশ্ববাসীর। চূড়ান্ত প্রতিভাবান তেমনই বিতর্কিত এমন চরিত্র আর হয়তো পাবে না বিশ্বক্রিকেট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.