স্টাফ রিপোর্টার: ১২১? নাকি ১৫০? আসন্ন সিএবি নির্বাচনে ভোটারদের সংখ্যা ঠিক কত দাঁড়াতে পারে?
ঐতিহাসিকভাবে সিএবি নির্বাচনের ভাগ্য সবসময় সংস্থার ১২১ অনুমোদিত সদস্যের ভোটাভুটিতে নির্ধারিত হয়ে এসেছে। কিন্তু লোধা সংস্কার মেনে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিএবি নির্বাচন হলে ভোটার সংখ্যা বাড়বে। সংস্থার ১২১ অনুমোদিত সদস্যের ভোটের উপর আর সব কিছু চূড়ান্ত নির্ভর করে থাকবে না। বরং ভোটার সংখ্যা দেড়শো কিংবা তারও বেশি হতে পারে!
লোধা সংস্কার অনুযায়ী ভারতীয় বোর্ড তো বটেই, রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাদেরও প্রশাসনিক খোলনলচে আমূল বদলে যাবে। দিন কয়েক আগেই বোর্ডের সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসনিক কমিটি জানিয়ে দিয়েছিল যে, আগামী ২২ অক্টোবর বোর্ড নির্বাচন হবে। যার পর সিওএ সরে গিয়ে পূর্ণ ক্ষমতা চলে যাবে নব নির্বাচিত বোর্ড আধিকারিকদের হাতে। এটাও জানানো হয়েছিল যে, ২২ অক্টোবর বোর্ড নির্বাচনের আগে দেশের রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাদের নির্বাচনও করে ফেলতে হবে। যার সময়সীমা আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর।
যার পর জল্পনা শুরু হয়, বঙ্গ ক্রিকেট প্রশাসনের পরিবর্তিত কাঠামো কী হবে? যদিও প্রধান আলোচনাটা হওয়া উচিত ছিল, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সিএবিতেই থাকবেন নাকি ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হবেন? সৌরভের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের জুলাইয়ে। সেদিক থেকে দেখলে, বোর্ড নির্বাচন পর্ব চুকেবুকে গেলেও সৌরভের হাতে থাকছে দশ মাস। যে সময়টা তিনি বোর্ডে থাকতেই পারেন।
কিন্তু দ্রুত পরিষ্কার হয়ে যায় যে, সৌরভের সিএবিতে থাকার সম্ভাবনাই বেশি। সিএবি কর্তাদের কাছে খবর হচ্ছে, সৌরভ আগামী জুলাই পর্যন্ত সিএবি প্রেসিডেন্ট হিসেবেই থাকছেন। আর নির্বাচন হলে যুগ্ম সচিব পদপ্রার্থী হবেন বর্তমান যুগ্ম সচিব অভিষেক ডালমিয়া। আলোচনাটা তাই দ্রুত ঘুরে যায় নির্বাচনের কাঠামোগত সম্ভাব্য পরিবর্তনের দিকে। শোনা গেল, বোর্ডের নতুন মডেল অনুসরণ করলে প্রচুর ক্রিকেটার আসবেন সিএবি প্রশাসনে। সোমবার সিএবি-র কেউ কেউ বললেন, ক্রিকেটাররা আসবেন শুধু নয়, তাঁরা ভোটাধিকার পাবেন। সিএবি নির্বাচনে অংশ নেবেন। কারণ লোধা আইনে বলা হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়, রেল, পুলিশ, কাস্টমস- এসব জায়গা থেকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন শুধু ক্রিকেটাররা। কোনও সরকারি আধিকারিক আসতে পারবেন না। বিশ্ববিদল্যায়, কাস্টমস, রেলের ভোট সিএবি নির্বাচনেও আছে। বোর্ড মডেলে চললে জাতীয় নির্বাচক দেবাং গান্ধীর মতো অনেক ক্রিকেটার ভোটাধিকার পাবেন। সিএবি প্রেসিডেন্ট-সহ সমস্ত পদ নির্বাচনে যাঁদের ভূমিকা থাকবে। আর সেটা হলে এত দিনের মতো ১২১ অনুমোদিত সদস্য নয়। সিএবি মসনদের ভাগ্য নির্ধারিত করবেন দেড়শো কী তার বেশি ভোটার।
কিন্তু এসব হবে সিওএ প্রদত্ত নির্দেশনামা মেনে নির্বাচন হলে। শোনা গেল, সিওএ যতই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিক, যতই তারা বলে দিক আগামী ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলতে হবে, আদৌ সেই সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন হওয়া নিয়ে নাকি ঘোরতর সন্দেহ আছে। সিওএ শেষ নির্দেশনামায় বলেছিল, বোর্ডের নয় সদস্যের অ্যাপেক্স কাউন্সিলের মতো রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় নয় সদস্যের পরিচালন কমিটি করা সম্ভব নয়। কারণ বোর্ডের প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে চরিত্রগত অনেক তফাত রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলোতে। তাই রাজ্য ক্রিকেটের সংস্থার অ্যাপেক্স কাউন্সিল সদস্য ৯ থেকে বাড়িয়ে ১৯
করার কথা বলা হবে। যেখানে প্রেসিডেন্ট, সচিব সমেত পাঁচ জন পদাধিকারীর সঙ্গে এগারো জন ওয়ার্কিং কমিটি সদস্য থাকবেন। আর থাকবেন একজন ‘ক্যাগ’ ও দু’জন ক্রিকেটার প্রতিনিধি। একজন পুরুষ ক্রিকেটার। একজন মহিলা ক্রিকেটার। বলা হচ্ছে, লোধা আইনে পরিষ্কার বরলা ছিল যে বোর্ডে যা হবে, রাজ্য সংস্থাতেও তাই করতে করতে হবে।
বোর্ড অ্যাপেক্স কাউন্সিলে ন’জন আর রাজ্যে উনিশ- এটা তা হলে কীভাবে সম্ভব? সুপ্রিম কোর্ট কী বলেছে? যদি না-ই বলে থাকে তা হলে সংখ্যা উনিশ না উনিশশো, ঠিক করার সিওএ কে? আরও বলা হচ্ছে, প্রচুর রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা ইতিমধ্যে লোধা সংস্কারের বিরুদ্ধে নিজ নিজ দাবিদাওয়া পেশ করেছে সুপ্রিম কোর্টে। সিওএ-র নির্দেশ মেনে নির্বাচন করে ফেললে সেই দাবি বকলমে তুলে নিতে হয়। সেটা কেন হবে? বলা হল, গরমের ছুটির পর আগামী ১ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট খুললে এ নিয়ে আদালত যাবেন বিভিন্ন রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কর্তারা। সুপ্রিম কোর্ট বললে তবে তারপর নির্বাচন।
সিএবি- তারা কী করছে? তারা করবে নির্বাচন? আপাতত তারা ‘ধীরে চলো নীতি’ নিয়ে চলছে। আপাতত দেখা হবে, বাকিরা কে কী করছে। কোন দিকে সব কিছু এগোচ্ছে। সময় আছে। তাইপরে ভাবা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.