ফাইল ছবি।
আলাপন সাহা: অনুষ্টুপ মজুমদারকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা একটা কথা খুব ভালোভাবেই জানেন বাংলা ক্রিকেটের ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবলকে’ এখন আর কোনও কিছুই খুব একটা আবেগতাড়িত করে না। সাফল্য এলেও বাড়তি ‘অহংকারের’ ঢেঁকুর অনুষ্টুপ কোনও কালেই তোলেননি। ক্রিকেট কেরিয়ারের সায়াহ্নে এসেও সেটা একইরকম রয়ে গিয়েছে। তাই এবার সিএবি বর্ষসেরা পুরস্কার হওয়ার পরও একইরকম নির্লিপ্ত তিনি। অস্ফুটে বলে দেন, “আমি আবার এমন কী করলাম? মাঠে নেমে আমার যা কাজ, সেটাই শুধু করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।”
অনুষ্টুপের কথাগুলো শুনে বোঝা যাবে না যে, গত কয়েক বছরে বাংলার জন্য কীভাবে নিজেকে নিংড়ে দিয়েছেন। সেটা গ্রুপের ম্যাচ হোক কিংবা ইডেনে মহাশক্তিধর কর্নাটক। দল যখনই বিপদে পড়েছে টিমের ‘ক্রাইসিস ম্যান’ হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন অনুষ্টুপ। গত কয়েকটা মরশুমে বঙ্গ ক্রিকেটে অনেক কিছু বদল ঘটেছে। কোচিং স্টাফ বদলেছে। কিন্তু একটা ব্যাপার আজও একই রয়ে গিয়েছে। চাপের পরিস্থিতি অনুষ্টুপের অতিমানব হয়ে ওঠা। কথাগুলো বলতেই প্রসঙ্গ বদলে দেন অনুষ্টুপ, “প্লিজ এভাবে বলবেন না। টিমের হয়ে সবাই পারফর্ম করে। আমি আলাদা কিছুই করি না। হ্যাঁ এটা ঠিক যে ওই পরিস্থিতিতে বারবার ব্যাটিং করার ফলে সেটা আমার কিছুটা সুবিধে হয়। জানি ওরকম সিচুয়েশনে কী করতে হবে। আলাদা কোনও চাপ অনুভব করি না। বলতে পারেন ওই পরিস্থিতিগুলো আমাকে আরও ভালো ব্যাটিং করতে তাতিয়ে দেয়। তাছাড়া টিমের সিনিয়র হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব কিছুটা নিতেই হয়। আমি শুধু সেটাই করে গিয়েছি।”
অনুষ্টুপ নিজেও জানেন যে খুব বেশি হলে আর বছর কয়েক খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন। তারপর অবসর নিতে হবে। ছাড়ার আগে একটাই লক্ষ্য রয়েছে। বাংলাকে রনজি জেতানো। দু’বার ফাইনালে উঠেও কাপ জিততে পারেননি। সেই আক্ষেপ আজও তাড়া করে অনুষ্টুপকে। বিশেষ করে চার বছর আগে রাজকোটে সৌরাষ্ট্রের কাছে ফাইনাল হারটা এখনও ক্ষতবিক্ষত করে দেয় তাঁকে। ভাবলে মন খারাপ হয়ে যায়। বলছিলেন, “দুটো ফাইনাল হেরেছি আমরা। তবে রাজকোটের হারটা বেশি কষ্ট দেয়। ওই ম্যাচটা জেতা উচিত ছিল আমাদের। মনে হয় আর কিছুক্ষণ ব্যাটিং করতে পারলে, আমরা জিতে যেতাম। নিজেকে এখনও ক্ষমা করতে পারিনি। আমরা এখন একটাই স্বপ্ন রয়েছে। বাংলার হয়ে রনজি জেতা। যদি বাংলাকে রনজি জেতাতে পারি, তাহলে মনে করব অন্তত কিছু একটা করতে পেরেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.