Advertisement
Advertisement

Breaking News

Border Gavaskar Trophy

১০ বছর পর বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি হাতছাড়া, হারের ময়নাতদন্তে উঠে এল এই পাঁচ কারণ

শেষ ৮ টেস্টের মধ্যে ৬টিই হারতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। কিন্তু কেন এই ব্যর্থতা?

Border Gavaskar Trophy: Here is the reason why Team India lost the series
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:January 5, 2025 12:05 pm
  • Updated:January 5, 2025 12:05 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৪ সালে শেষবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হেরেছিল ভারত। তারপর টানা চার সিরিজ জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। অজিদের বিরুদ্ধে টেস্টে জয়ের সেই রীতিতে ছেদ পড়ল। এর আগে যে দুবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছে, সেই দুবারই ফাইনাল খেলেছে ভারত। এবার সেই সুযোগও হাতছাড়া। আসলে শেষ ৮ টেস্টের মধ্যে ৬টিই হারতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। কিন্তু কেন এই ব্যর্থতা? নেপথ্যে উঠে আসছে একাধিক কারণ।

ব্যাটিং ব্যর্থতা: লালবলের ক্রিকেটে ভারতের অধিকাংশ ব্যাটার ফর্মে নেই। শেষ ১৫ টেস্ট ইনিংসে রোহিত শর্মা মোটে ১৬৭ রান করেছেন। মেলবোর্নের একটি সেঞ্চুরি বাদ দিয়ে একই অবস্থা বিরাট কোহলির। কে এল রাহুল, শুভমান গিলরা ধারাবাহিক নন। ঋষভ পন্থ ভালো শুরু করলেও ভুল সময়ে ভুল শট খেলে আউট হচ্ছেন। ব্যাটারদের লাগাতার এই ব্যর্থতা বাড়তি চাপ তৈরি করছে বোলারদের উপর। বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে মোট ৯ বার ব্যাট করেছে ভারত। এর মধ্যে ৩৫০ রান পেরিয়েছে মাত্র দুবার। সেগুলিও লোয়ার মিডল-অর্ডারের ব্যাটারদের দৌলতে।

Advertisement

ভুল দল নির্বাচন: গম্ভীর-রোহিত জমানায় দল নির্বাচন বা প্রথম একাদশ নির্বাচন নিয়ে একটা বড়সড় প্রশ্ন উঠছেই। কোচ গম্ভীরের কেকেআরের ক্রিকেটারদের প্রতি দুর্বলতা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। তবে সমস্যা সেখানে নয়। সমস্যা দলের কম্বিনেশনেই। গোটা বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতেই ব্যাটারদের ব্যর্থতা ঢাকতে অলরাউন্ডারদের দিকে ঝুঁকেছে ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে শুধু অলরাউন্ডার দিয়ে কাজ চলে না। স্পেশ্যালিস্ট দরকার। মনে রাখতে হবে টেস্ট জিততে হলে বিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়া প্রয়োজন। ওয়াশিংটন সুন্দর, নীতীশ রেড্ডি দুজনকে একসঙ্গে খেলানোর যুক্তি কি? আবার শেষ টেস্টে খারাপ ফর্মের জেরে অধিনায়ক রোহিত শর্মা নিজেই বসে গেলেন। সমস্যা হল, রোহিত যতই দলের স্বার্থের কথা বলুন, এটাও ঠিক অধিনায়ক নিজেই লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালানোর মানসিকতা দেখালে সেটার প্রভাব দলের অন্য ক্রিকেটারদের উপরও পড়ে।

অতিরিক্ত বুমরাহ নির্ভরতা: আগেই বলা হয়েছে টেস্ট জিততে ২০ উইকেট নেওয়া প্রয়োজন। আর অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে দুবার আউট করার জন্য প্রয়োজন হয় প্রথম সারির বোলিং বিভাগ। দুঃখজনক হলেও সত্যি ভারত যে বোলিং লাইন-আপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিল সেটা আর যা-ই হোক বিশ্বমানের নয়। শেষ টেস্ট বাদ দিলে গোটা সিরিজে ভারতের বোলিং বিভাগকে কার্যত ওয়ান ম্যান আর্মি মনে হয়েছে। বুমরাহ একা ৩২ উইকেট পেয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন। অথচ, বুমরাহ ছাড়া আর কোনও বোলার সেভাবে প্রভাবই ফেলতে পারলেন না। বুমরাহর পর সবচেয়ে সফল ভারতীয় বোলার মহম্মদ সিরাজ। তাঁর উইকেট সংখ্যা ২০। আকাশদীপ পেয়েছেন ৫ উইকেট। নীতীশ রেড্ডিও তাই। ভারতের স্পিনাররা কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেননি।

অসুখী ড্রেসিংরুম: বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি চলাকালীন ভারতীয় ড্রেসিং রুম থেকে একের পর এক খবর প্রকাশ্যে এসেছে। শোনা গিয়েছে, ভারতীয় কোচ গৌতম গম্ভীর নাকি সাজঘরে গিয়ে ক্রিকেটারদের বকাঝকা করেছেন। আবার শোনা গিয়েছে ড্রেসিংরুমে নাকি ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথোপকথন আগের মতো মসৃণ নয়। তাছাড়া রোহিতের ফর্ম খারাপ হওয়ার পর দলে ঐক্যের ঘাটতি পড়েছে। একাধিক ক্রিকেটার পরবর্তী অধিনায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। সিরিজের মাঝপথে অশ্বিন যেভাবে অবসর নিলেন, শেষ ম্যাচে রোহিত যেভাবে নিজেকে সরিয়ে নিলেন, সেগুলি মোটেই ভালো বার্তা দেয় না। যদিও এসবই জল্পনা। সত্যি-মিথ্যা জানার উপায় নেই। তবে একটা জিনিস নিশ্চিত। ভারতীয় ড্রেসিংরুম আর সুখী পরিবার নয়। যার অবশ্যম্ভাবী প্রভাব পড়েছে খেলার মাঠে।

ট্রানজিশন: ভারতের হারের একাধিক কারণ রয়েছে। তবে এটাও ঠিক যে এই ভারতীয় দল একটা সার্বিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবীন্দ্র জাদেজারা কেরিয়ারের সেরা সময় সম্ভবত পেরিয়ে এসেছেন। আবার দুর্ভাগ্যজনকভাবে শুভমান গিল, যশস্বী জয়সওয়ালরা একার কাঁধে ম্যাচ জেতানোর মতো দায়িত্ব নিতে এখনও শেখাননি। বোলিং বিভাগের অবস্থা আরও খারাপ। বুমরাহ ছাড়া আর কোনও বোলার দাগও কাটতে পারেননি। আকাশদীপ, হর্ষিত রানা বা ওয়াশিংটন সুন্দররা প্রতিভাবান হলেও আনকোরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement