স্টাফ রিপোর্টার: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখলে ভয়ই লাগত। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে শেষ কবে দৃশ্যত এতটা উত্তেজিত দেখিয়েছে, সন্দেহ আছে। ঠিক তেমনই লক্ষ্মীরতন শুক্লাকেও মনে পড়া উচিত। সাইরাজ বাহুতুলে নিয়ে সবচেয়ে বড় ঘা তো প্রাক্তন বাংলা অধিনায়কই দিয়েছিলেন। বলেছিলেন যে, সাইরাজকে তাড়ানো উচিত। লক্ষ্মী বলেছিলেন যে, সিএবি তাঁর কথা না শুনে বড় ভুল করছে।
[ পাঁচ বছরের জন্য ব্যান হতে পারেন জয়সূর্য!]
লক্ষ্মী বর্তমানে অসুস্থ। পুজোর মধ্যে একটা অপারেশন হয়েছে। ফোন এখনও বন্ধ করে রেখেছেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা গেল না। কিন্তু সৌরভ? তিনি তো বললেন। মঙ্গলবার ক্লাবহাউস গেটে দাঁড়িয়ে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক তো উত্তেজিত ভাবে বলে গেলেন, “দু’টো ম্যাচ। জাস্ট আর দু’টো ম্যাচ দিলাম সাইরাজ-মনোজকে। পারলে ভাল। না পারলে ভাবতে হবে। আমার আমলে এ সব চলবে না। যত দিন আছি, পারফর্ম করে সবাইকে থাকতে হবে!”
ক্যাপ্টেন গাঙ্গুলির রেগে যাওয়া স্বাভাবিক। আসলে বাংলার কোচ সাইরাজ বাহুতুলে এবং অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির নামে ক্রিকেটার-সাপোর্ট স্টাফদের এত অভিযোগ জমা পড়ছে যে, মাথা ঠাণ্ডা রাখা অসম্ভব। অভিযোগনামা এ রকম:
১) সাইরাজ বাহুতুলে শুধু ক্রিকেটারদের জীবন অতিষ্ঠ করছেন না। বাংলা ক্রিকেটেরও অপমান করছেন। বিজয় হাজারে ট্রফির একটা ম্যাচে বাংলা হেরে যাওয়ার পর নাকি ক্রিকেটারদের সর্বসমক্ষে অপমান করেছেন সাইরাজ। যা দেখে এক ক্রিকেটার থাকতে না পেরে উত্তেজিত ভাবে কোচকে বলে বসেন যে, তিনি বেঙ্গল ক্যাপের অসম্মান করছেন কোন অধিকারে?
২) টিমের কারও সঙ্গে কথা না বলে নিজেদের মতো স্ট্র্যাটেজিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন সাইরাজ-মনোজ। এমনকী সহ অধিনায়কের সঙ্গেও কথা বলা হয় না।
৩) কেউ টিম থেকে বাদ পড়লে তাকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় না সে কেন বাদ।
৪) অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি ছাড়া আর কোনও ক্রিকেটারকে ভরসা করতে পারেন না কোচ বাহুতুলে।
৫) বাকি সাপোর্ট স্টাফদের কাজের স্বাধীনতা দিতে চান না সাইরাজ। উলটে ব্যর্থতার দায় তাঁদের উপর চাপিয়ে নিজে নিষ্কৃতি খোঁজেন।
বিস্ফোরক সব অভিযোগ। সিএবি-র কেউ কেউ মঙ্গলবার বলছিলেন যে, এ দিনই সাইরাজ নিয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া যেত। হল না একটাই কারণে। গত বছর সাইরাজ-মনোজ জুটি বাংলাকে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে তুলেছিল। বিজয় হাজারে ট্রফিতে বাংলা জঘন্য করেছে ঠিকই। কিন্তু সেটা ওয়ান ডে ফর্ম্যাট। রঞ্জি চার দিনের খেলা। আপাতত তাই বাংলার কোচ-অধিনায়ককে জীবন দেওয়া হল। কিন্তু শর্তসাপেক্ষে। রঞ্জিতে বাংলার প্রথম দু’টো ম্যাচ হিমাচলপ্রদেশ আর মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে। সেই ম্যাচ দু’টো হারলে সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের মতো কাউকে কাউকে যেমন নতুন বাংলা অধিনায়ক হিসেবে দেখলে অবাক হওয়ার থাকবে না। তেমনই আশ্চর্যের হবে না, সাইরাজকে রিটার্ন টিকিট কেটে মুম্বইয়ের ফ্লাইটে তুলে দিলে। তাঁর সঙ্গে চুক্তিটা কোনও অসুবিধেই নয়। কারণ সাইরাজকে দু’তিন মাসের টাকা শুধুমাত্র দিতে হবে।
বঙ্গ ক্রিকেটে এমন বিতর্ক অভূতপূর্ব। শোনা যাচ্ছে, সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে ছ’জন ক্রিকেটার নাকি সাফ বলে দিয়েছেন, সাইরাজ কোচ থাকলে তাঁরা খেলতে চান না! পরিস্থিতি সামাল দিতে অরুণ লালকে বাংলা দলের মেন্টর নিয়োগ করেছে সিএবি। তবে নামেই মেন্টর! আদতে অরুণলালই বাংলা দলের কোচ। জানা গিয়েছে, প্রথম দল নির্বাচন-সহ সব বিষয়েই তিনিই শেষকথা বলবেন। কিন্তু, সদ্য ক্যানসারকে হারিয়ে ওঠা বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক এখনও পুরোপরি সুস্থ নন। তিনি কী দলের সঙ্গে বছরভর ট্রাভেল করতে পারবেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
[ এভাবেও রানআউট হয়? আজহারের পর ভাইরাল আরেক অবিশ্বাস্য ভিডিও]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.