Advertisement
Advertisement
Arun Lal

‘‌প্রধানমন্ত্রীরও বয়স হয়েছে, তাঁকে তো সরাচ্ছে না!‌’, বোর্ডের নির্দেশ নাপসন্দ অরুণলালের‌

ক্রিকেটারদের ট্রেনিংয়ের জন্য ভারতীয় বোর্ডের পাঠানো SOP নিয়ে ক্ষুব্ধ বাংলার কোচ।

Bengal coach Arun Lal took a dig at BCCI's SOP on cricketer's training

ফাইল ছবি

Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:August 4, 2020 8:38 pm
  • Updated:August 4, 2020 9:05 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:‌ ক্ষুব্ধ বাংলার কোচ অরুণলাল (‌Arunlal)‌। সৌজন্যে করোনা (Corona) আবহে ক্রিকেটারদের ট্রেনিংয়ের জন্য ভারতীয় বোর্ডের ‘এসওপি’ বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, কঠোর নিয়মাবলী মেনে শিবির শুরু হলেও ষাটোর্ধ্ব কোনও সাপোর্ট স্টাফ বা মাঠকর্মী সেখানে থাকতে পারবেন না। আর এই নিয়ম নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে অরুনলাল টেনে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) প্রসঙ্গও। তাঁর প্রশ্ন, দেশের প্রধানমন্ত্রীও তো ষাটোর্ধ্ব। কিন্তু তাঁর জন্য কী তিনি কাজ বন্ধ করেছেন?‌ নাকি তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে?‌ আসলে আর পাঁচটা রোগ নয়। মনুষ্যজীবনের যা আজও ভয়ঙ্করতম শত্রু, সেই কর্কট রোগকে পরাভূত করেছেন তিনি। ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ বাংলা কোচ অরুণলাল তাই ভাবতেই পারেননি, করোনার সামনে তাঁকে এভাবে নতজানু হতে হবে! কখনও বোর্ডের আইনের বিরুদ্ধে মৃদু উষ্মা দেখাচ্ছেন। কখনও করোনাকে শাপ-শাপান্ত করছেন। ডাকাবুকো বঙ্গ কোচ রবিবার রাতের পর বেশ বিরক্ত। অশান্ত।

[আরও পড়ুন: চাপের মুখে নতিস্বীকার, আইপিএলের স্পনসরশিপ থেকে সরে দাঁড়াল VIVO]

‌রবিবার গভীর রাতে ভারতীয় বোর্ড (‌BCCI)‌ থেকে যে ট্রেনিং শুরুর ‘এসওপি’ কিংবা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, তার একটা নির্দেশিকাই কাঁপিয়ে দিয়েছিল সিএবিকে। যেখানে পরিষ্কার বলা ছিল, কঠোর নিয়মাবলী মেনে শিবির শুরু হলেও ষাটোর্ধ্ব কোনও সাপোর্ট স্টাফ বা মাঠকর্মী সেখানে থাকতে পারবেন না। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, কিংবা যাঁদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম– তাঁরাও না। সিএবি আবিষ্কার করে যে সেই নিয়মে বিভিন্ন পর্যায়ের বাংলা কোচ থেকে শুরু করে কিউরেটর– একাধিক ব্যক্তি আটকে যাচ্ছেন। কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় পারবেন না। তাঁর বয়েস পঁয়ষট্টি। নির্বাচক প্রধান পলাশ নন্দী পারবেন না। তাঁর আটষট্টি। জুনিয়র টিমের কোচ প্রণব নন্দী পারবেন না। তিনি পঁয়ষট্টি। সর্বোপরি, বাংলা সিনিয়র টিমের কোচ অরুণ লাল পারবেন না। কারণ– তাঁরও বয়স পঁয়ষট্টি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: চিনা স্পনসর বাতিল না করার জের, আইপিএল বয়কটের ডাক আরএসএস অনুমোদিত সংগঠনের]

‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে ফোনে অরুণ বলেন, “আমি বুঝতে পারছি যে, বোর্ড আমাদের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই গাইডলাইন করেছে। বলেছে যে, ষাটোর্ধ্বরা এই সময়ে টিমের ট্রেনিংয়ে না এলেই ভাল। কোথাওই বলা হয়নি, আমাদের বাদ দিতে হবে। কিন্তু একটা জিনিস বুঝতে পারছি না যে, ষাট বছর বয়সটা বেঞ্চমার্ক কী করে হতে পারে? করোনা কি বয়স দেখে আসে?”। এর সঙ্গেই তিনি বলেন, “আরে, এটা তো হতে পারে না যে, আমার বয়স ৫৯ বলে আমি সেফ। আমার কিছু হবে না। আর ষাট হলেই হবে। দেশে ষাটের নীচের লোকজনদের যা করোনা গাইডলাইন, ষাটোর্ধ্বদেরও তাই। আমরাও তাই মতোই বারবার হাত ধুই। আমরা তাদেরই মতো স্যানিটাইজার ব্যবহার করি। মাস্ক পরি। এটা ঠিক যে, আমরা একটু বাড়তি সতর্ক থাকি। এর বাইরে তো কিছু নয়। কিন্তু ষাট বলে কি আমি বাড়ি বসে থাকব? দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বয়সও তো ষাটের উপরে। উনি কি কাজ করছেন না?”

[আরও পড়ুন: ‘২০১৯ বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়ব, আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ধোনি’, অকপট যুবরাজ]

তবে শুধু বাংলা নয়, বোর্ডের পাঠানো ‘এসওপি’-র এই নির্দেশিকা বরোদাকেও (Baroda) বিপদে ফেলেছে। বরোদা কোচ আবার শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) ’৯৬ বিশ্বজয়ী কোচ ডাভ হোয়াটমোর (Dav Whatmore)। যাঁর বয়স ৬৬। হোয়াটমোরকে আর হয়তো রাখবে না বরোদা। কিন্তু অরুণকে ছাড়া হচ্ছে না। এ দিন তাঁকে CAB–র উচ্চপদস্থ কর্তারা ফোন করে বলে দেন যে, এটা নিছকই একটা সাময়িক গাইডলাইন। দেশের করোনা পরিস্থিতির একটু উন্নতি হলে যা ফের পাল্টাতেই পারে। পরে সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়াও এক বিবৃতিতে সেটা বলেন যে, ‌এ হেন নির্দেশিকা তাঁর মতে সাময়িক।

‌এই প্রসঙ্গে অরুণলালের স্পষ্ট বক্তব্য, “জানি আমি সেটা। ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়, অগাস্টের পর থেকে অবস্থার উন্নতি হবে। তা ছাড়া ডিসেম্বরের আগে তো এবার ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই সময় আছে এখনও। কিন্তু ষাট বছর মানেই যে, জীবন শেষ সেটাও নয়। আর একটা নির্দিষ্ট বয়সে এসে কে পারবে আর কে পারবে না, সেটা তো সেই লোকটার উপর নির্ভর করে, তাই না?” বঙ্গ কোচ ইঙ্গিত দেন, কে ফিট আর কে ফিট নয়, তা বিচার করে গাইডলাইন করা যেতে পারত। “মনে রাখবেন, আমি কিন্তু এই করোনার সময়েও দিনে সাড়ে তিন ঘণ্টা করে ট্রেনিং করছি। দেড় ঘণ্টা হাঁটছি। সুইমিং করছি। যোগব্যায়াম করছি। স্কিপিং করছি। এত ট্রেনিং তো যখন খেলতাম, তখনও করিনি। আমার সঙ্গে পঁয়ত্রিশ বছরের একটা ছেলেকে নামিয়ে দেখুন তো, সে পারে কি না?” সাফ জবাব পঁয়ষট্টির অরুণের। সঙ্গে সংযোজন, “যদি আমার নিজের মনে হত আর পারব না, নিজেই ছেড়ে দিতাম। কিন্তু কোনও অসুবিধেই তো হচ্ছে না। বলছি না, নিজেকে এত ফিট কখনওই মনে হয়নি। এ রকমই লম্বা সময় চালিয়ে যেতে চাই আমি। যত দিন বাঁচব, তত দিন। ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়ে জিতেছি আমি। আমার ভয় কীসের? তবে সত্যি, আজব একটা রোগ বটে করোনা! কেউ আজও কিছু জানে না। বিজ্ঞানীরা না। কেউ না। দেখা যাক। যা বুঝছি, অগাস্ট মাসটা এ ভাবেই চলবে। সেপ্টেম্বর থেকে যদি তারপর উন্নতি হয়।”

[আরও পড়ুন: মাস্কে লিখতে হবে নাম, ক্রিকেটারদের ট্রেনিংয়ের জন্য একাধিক নিয়ম আনল বোর্ড]

কিন্তু প্রতিষেধক না বার হওয়ার আগেই যদি ট্রেনিং শুরু হয় ক্রিকেটারদের, যদি বসাতে হয় শিবির, কী করবেন তিনি? বোর্ড আইনে তো থাকতে পারবেন না। অগত্যা কি তা হলে অনলাইন কোচিং? শুনে একটু চুপ করে যান অরুণ। তার পর বলেন, “দেখা যাক। কিছু না কিছু রাস্তা ঠিক বেরোবে। করছি তো এখনও। অনলাইনে ছেলেদের সঙ্গে কাজ করছি। কথা বলছি। ভাল রেসপন্সও করছে ওরা। কী হবে, এখনই বলাটা মুশকিল।”
ঠিক আছে, সময়ই বলুক!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement