বাংলা: ১৩৮ ও ২০২
পাঞ্জাব: ১৫১ ও ১৪১
স্টাফ রিপোর্টার: পাতিয়ালা ধ্রুব পাণ্ডে স্টেডিয়ামে চরম উত্তেজনার পর বাংলা ৪৮ রানে হারিয়ে দিল পাঞ্জাবকে। এই জয়ের ফলে বাংলা রনজির কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল। পাঞ্জাবের সামনে বাংলা টার্গেট দিয়েছিল ১৯০ রানের। কিন্তু রমনদীপের (৬৯ নট আউট) দুর্দান্ত লড়াইয়ের পরও বাংলার বোলারদের সামনে মাথা উঁচু করে ব্যাট করতে পারল না পাঞ্জাব। ৪৮ ওভারেই তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যায়।
এদিন সকালে বাংলার দ্বিতীয় ইনিংস যখন শেষ হয় তখন স্কোর বোর্ডে দেখা যাচ্ছে গতকালের থেকে মাত্র তিন রান যোগ হয়েছে। অর্থাৎ গতকাল ১৯৯/৯ রানে শেষ হলেও এদিন বাংলা দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে ২০২। সামগ্রিক দৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে, রানটা খুবই কম। পাঞ্জাব অনায়াসে তুলে দিয়ে বাংলার রনজি অভিযান শেষ করে দেবে। কিন্তু ধ্রুব পাণ্ডে স্টেডিয়ামের পিচ আষাঢ়ের মেঘের মতো। কখন খরা হবে আর কখন বৃষ্টি কেউ জানে না। পাতিয়ালায় গিয়ে এমনিতেই বোর্ডের কাছে চিঠি দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন কোচ অরুণ লাল। তবে মনোজ তিওয়ারির ইনিংস দেখে শান্ত হন তিনি। বাংলার কোচ বুঝতে পেরেছিলেন, ধৈর্য ধরে খেললে ব্যাটসম্যানরা সফল হবেন। পরের দিকে দেখা গেল বাংলার মতোই পাঞ্জাবও ঘরের মাঠে ফায়দা লুটতে ব্যর্থ।
পাঞ্জাবের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৯০ রান। কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতিতে ব্যাপক ধস নেমে আসে দলে। মাত্র ৮৩ রানের মধ্যে পড়ে যায় পাঁচ-পাঁচটা উইকেট। পাঞ্জাবের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন অর্ণব নন্দী। তারপর আকাশদীপ। তিনি অভিজিৎ গর্গকে কোনও রান তোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দেন। প্রথম ইনিংসে শাহবাজ পাঞ্জাবের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাকে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দেন এই বাঁ-হাতি স্পিনার। শাহবাজ নিয়েছেন চারটি উইকেট। আকাশদীপ দু’উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৭ রানের বিনিময়ে। পাঞ্জাবের পরবর্তী উইকেটও নেন আকাশ। এবার তিনি ফেরান শরদ লুম্বাকে। মাত্র তিন রানের মাথায় লুম্বা সরাসরি বোল্ড হয়ে যান। তারপর এক এক করে উইকেট নেন বাকি তিন বোলার অর্ণব নন্দী, শাহবাজ আহমেদ ও রমেশ প্রসাদ। একটাই ভাল দিক যে শুধু স্পিনাররা নন, ফাস্ট বোলাররাও উইকেট পাচ্ছেন। তাই ধরে নেওয়া যায়, মধ্যাহ্নবিরতির পর খেলা শুরু হলে বিপদে পড়ে যেতে পারে পাঞ্জাব। রমনদীপ ও আনমোল বুক চিতিয়ে লড়াই করেন। এই দুই ক্রিকেটার জুটি বেঁধে ৬৩ রান তোলেন।
এরপর শাহবাজ এলবিডব্লু আউট করেন আনমোলকে। অভিষেক গুপ্তাকে নিজের বলেই ক্যাচ ধরে ফিরিয়ে দেন শাহবাজ। পাঞ্জাবের রান ৮ উইকেটে ১৪০। নক আউটে যেতে বাংলার তখনও চাই ২ উইকেট। আর পাঞ্জাবের জয়ের জন্য দরকার ৫০ রান। ব্যাট করছিলেন রমনদীপ সিং (৬৮)। তাঁর সঙ্গী এস কাউল। পাঞ্জাবের আট নম্বর উইকেট পড়ে ১২৭ রানে। কিন্তু দলের ১৪১ রানের মাথায় পরপর দুটি রান আউট পাঞ্জাবকে শেষ করে দেয়। প্রথমে আউট হন কাউল। তারপর ব্যাট করতে এসেই ফিরে যান বলতেজ সিং। পাতিয়ালায় ফোন করতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিম ম্যানেজমেন্টের এক সিনিয়র কর্তা বলছিলেন, “এখনও পর্যন্ত আমরা ভাল জায়গায় রয়েছি। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রমনদীপ ও আনমোল ভাল খেলছে। তবে তারা সুযোগ দিয়েছিল। আমরা নিতে পারিনি। ৩৭ রানে পাঁচ উইকেট চলে যাওয়ার পর আমরা ভেবেছিলাম পাঞ্জাব বোধহয় আর দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু ওরা তারপর ভালই লড়াই করে।” পাঞ্জাব শেষ পাঁচ উইকেটে যোগ করে ১০৪ রান। কিন্তু ম্যাচ শেষ পর্যন্ত চলে যায় বাংলার পকেটেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.