ভারত- ২৮৫/৭ (ধাওয়ান ১২৭, কিঞ্চিৎ শাহ ৩/৩৯)
হংকং- ২৫৯/৮ (নিজাকত খান ৯২, খলিল ৩/৪৮)
ভারত ২৬ রানে জয়ী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্রী, বিরক্তিকর, হতাশাজনক। আরও অনেক খারাপ বিশেষণে ব্যাখ্যা করা যায় ভারত ও হংকং ম্যাচকে। তবে তা শুধুই ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। চলতি এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এমন বিরক্তিকর ক্রিকেট উপহার দেবে টিম ইন্ডিয়া তা মাঠের দর্শকরা তো ননই, টিভির পর্দায় চোখ রাখা ভারতীয়রাও বিশ্বাস করতে পারেননি। ম্যাচ হয়তো জেতা হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় বোলারদের এমন হতাশাজনক পারফরম্যান্স বুধবারের পাকিস্তান ম্যাচের আগে চিন্তায় রাখবে কোচ-কর্তাদের। দূর্বল হংকংয়ের বিরুদ্ধে ভারত জিতল ২৬ রানে। পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে হংকং। যা ভারতের বিরুদ্ধে প্রায় নজির। এই ম্যাচকে এশিয়া কাপে ডেভিড বনাম গোলিয়াথের ম্যাচ বলা হচ্ছিল। প্রথমবার এত বড় মাপের টুর্নামেন্টে খেলতে আসা হংকং রীতিমতো অস্বস্তি দিল মেন ইন ব্লু-কে। ইতিহাসের ডেভিড কিন্তু গোলিয়াথকে পরাস্ত করেছিল। এদিন হংকং আর যাই হোক, দৈত্য ভারতকে নাড়িয়ে দিয়ে গেল বলা যায়।
এবারের টুর্নামেন্টে ক্রিকেটপ্রেমী বলুন বা জুয়ারিরা, সবার নজর কিন্তু বুধবারের ভারত-পাক মহারণের দিকেই রয়েছে। তাই মঙ্গলবারের এই ম্যাচ কার্যত ছিল ভারতের কাছে নেট প্র্যাকটিসের সমান। টসে জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান হংকংয়ের ক্যাপ্টেন অংশুমান রথ। তাতেই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মনে হয়েছিল, বিরাট রান তুলবেন রোহিত শর্মারা। শুরুটাও ভালই হয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে যত সময় গড়াল, ধারণা ভুল প্রমাণিত হতে লাগল। অধিনায়ক রোহিত ২৩ রান করে বিদায় নেওয়ার পর ইনিংস টানছিলেন আরেক অপেনার ধাওয়ান ও রায়ুডু। ঝকঝকে ৬০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন রায়ুডু। তখনও ক্রিজে ধাওয়ান। পরে কার্তিকের সঙ্গে মারকাটারি ব্যাট করে কেরিয়ারের ১৪তম শতরান করেন ভারতীয় দলের ‘গব্বর’। ব্যক্তিগত ১২৭ রানে ধাওয়ান আউট হতেই ম্যাচ ঘুরতে শুরু করে হংকংয়ের দিকে। দ্রুত উইকেট পড়তে শুরু ভারতের। বহু যুদ্ধের নায়ক ধোনি মাত্র তিন বল খেলে ০ করে আউট হন। যা দেখে দর্শকদের অনেকেরই চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যায়। লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ৭ উইকেটে মাত্র ২৮৫ রানই স্কোরবোর্ডে তুলতে সক্ষম হয় ভারত।
[পাক ম্যাচের আবহেই হংকংয়ের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপ অভিযান শুরু ভারতের]
তাও আশায় ছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা। ক্রিকেট বিশ্বে শিশু দেশ হংকং হয়তো টিকতেই পারবে না ভারতীয় বোলারদের সামনে। এদিন ভারতের হয়ে অভিষেক হয় ফাস্ট বোলার খলিল আহমেদের। সঙ্গে ভুবনেশ্বর কুমার, শার্দূল ঠাকুররা রয়েছেন। ১০-১২ ওভারের মধ্যে প্রাচ্যের ব্রিটেনের ইনিংস শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। তারপর যা হল! ভারতীয় বোলারদের ব্যর্থতার জেরে হংকংয়ের প্রথম উইকেট পড়ল ৩৫ ওভারের মাথায়। প্রথম উইকেটের পার্টনারশিপে উঠল ১৭৪ রান। ভারতের বিরুদ্ধে যা অপ্রত্যাশিত। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন হংকংয়ের নিজাকত খান। ৯২ রানে আউট হয়ে তিনি যখন প্যাভিলিয়নে ফিরছেন, গোটা মাঠ তখন দাঁড়িয়ে তাঁকে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছে। সত্যি, অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেছেন তিনি। এ কুর্নিশ তাঁর প্রাপ্য। অন্যদিকে, হংকংয়ের অধিনায়ক অংশুমান আউট হলেন ৭৩ রান করে। এঁরা দুজনেই ভারতীয় বোলারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিলেন। নির্বিষ বোলিং দেখতে দেখতে দর্শকরাও বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। এত কুৎসিত পারফরম্যান্স এযাবৎকালে ভারতীয় বোলারদের থেকে দেখা যায়নি। সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড সফরেই ভারতীয় বোলারদের রোগ ধরা পড়েছিল। এদিনের ম্যাচে কঙ্কালসার চেহারাটা বেরিয়ে এল।
[কোচ রবি শাস্ত্রীকে এবার সরানো হোক, জোরাল দাবি প্রাক্তন তারকার]
২৪ ঘণ্টা পরেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে হাইভোল্টেজ ম্যাচ। তারা আবার আগের ম্যাচেই হংকংকে দুরমুশ করেছে। সেই হংকংয়ের কাছেই আর একটু হলে বিরাট লজ্জা অপেক্ষা করছিল ভারতের। ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন হওয়ায় শেষদিকে উইকেট পান বোলাররা। অভিষেক ম্যাচে খেলতে নেমে খলিল ৩ উইকেট নেন। ম্যাচের আবিষ্কার তিনিই। আর বাকিরা কী করলেন? ভুবিদের ব্যর্থতায় একটা সময় কেদার যাদবের মতো পার্ট টাইম বোলারের শরণাপন্ন হন রোহিত। কিন্তু ৭ ওভার হাত ঘুরিয়ে তিনি রোহিতের মুখে হাসি ফোটাতে ব্যর্থ। স্লগ ওভারে চাহালের স্পিনে ধরাশায়ী হয় হংকংয়ের মিডল অর্ডার। ম্যাচ জিতলেও এদিনের পারফরম্যান্স চরম হতাশাজনক। শ্রীলঙ্কা দু’ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে। সেটা নিশ্চয় মাথায় রয়েছে ভারতের। আজকের পর বোলিং নিয়ে ভারতকে বেশি করে ভাবতেই হবে। অন্তত টুর্নামেন্ট জিততে গেলে তো বটেই। পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে এমন হতশ্রী বোলিং হলে কপালে দুঃখ নাচছে রোহিতদের।
[এশিয়া কাপের শুরুতেই রেকর্ড মুশফিকুরের, টপকে গেলেন ধোনিকে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.